বকেয়া বেতন দাবিতে জনকণ্ঠে ফের অচলাবস্থা

বকেয়া বেতন পরিশোধে কর্তৃপক্ষ ওয়াদা রক্ষা না করায় কাজ বন্ধ করে দিয়ে ফের আন্দোলনে নেমেছেন দৈনিক জনকণ্ঠের সাংবাদিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Dec 2018, 05:23 PM
Updated : 22 Dec 2018, 05:23 PM

শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে কাজ বন্ধ রেখে বিক্ষোভ দেখানোর পর রাত ৯টা থেকে ঢাকার নিউ ইস্কাটনে জনকণ্ঠ ভবনের প্রধান ফটক বন্ধ করে দিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছেন তারা।

ফলে এই বাংলা দৈনিকটির রোববারের সংখ্যা প্রকাশ নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে বলে পত্রিকাটির বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক জানিয়েছেন।

গত অক্টোবর মাসের শুরুতে বকেয়া বেতনের দাবিতে কাজ বন্ধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন জনকণ্ঠের কর্মীরা। পরে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে সব বকেয়া পরিশোধে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে আশ্বাস পেয়ে সেই কর্মসূচি থেকে সরে আসেন তারা।

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের দৈনিক জনকণ্ঠ ইউনিটের প্রধান ও পত্রিকাটির জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রাজন ভট্টাচার্য শনিবার রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সর্বোচ্চ ২৬ মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। এর আগে আন্দোলনের সময় মালিকপক্ষ সব বকেয়া ডিসেম্বর মাসের মধ্যে পরিশোধের আশ্বাস দেয়।

“উপদেষ্টা সম্পাদক তোয়াব খান, নির্বাহী সম্পাদক স্বদেশ রায়সহ পত্রিকাটির দায়িত্বশীল অন্যরা ওই সময় মালিকের সঙ্গে আলোচনা করে ডিসেম্বরের মধ্যে বকেয়া পরিশোধের দায়িত্ব নিয়েছিলেন।”

ছবি: আন্দোলনরত জনকণ্ঠের সাংবাদিকরা পাঠিয়েছেন

রাজন বলেন, “শনিবার বিকালে বকেয়া পরিশোধের অগ্রগতি জানতে চাইলে তারা স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারছিলেন না। পরে তাদেরকে সঙ্গে নিয়ে দৈনিক জনকণ্ঠের মালিক ও সম্পাদক আতিকউল্লাহ খান মাসুদের সঙ্গে দেখা করলে তিনি জানান, ডিসেম্বরের মধ্যে বকেয়া পরিশোধ করা সম্ভব হবে না।”

জনকণ্ঠের কয়েকজন সাংবাদিক জানান, ডিসেম্বরের মধ্যে বকেয়া পরিশোধ হচ্ছে না- এমন খবরে কাজ বন্ধ করে দেন প্রতিষ্ঠানটির সাংবাদিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

পরে জনকণ্ঠ ভবনের প্রধান ফটক বন্ধ করে দিয়ে ভেতরে অবস্থান নেন তারা। জনকণ্ঠের সম্পাদক, উপদেষ্ঠা সম্পাদক, নির্বাহী সম্পাদকসহ অন্যরা ভবনে আটকা পড়েছেন বলে আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন।

আওয়ামীপন্থি ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ অন্য কর্মকর্তারা জনকণ্ঠ ভবনে গিয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন।

ছবি: আন্দোলনরত জনকণ্ঠের সাংবাদিকরা পাঠিয়েছেন

এর আগে মালিকপক্ষ তিন দফা সময় নিয়েও বেতন পরিশোধ না করায় গত ১ অক্টোবর কাজ বন্ধ করে দিয়ে বিক্ষোভ-সমাবেশ করেন জনকণ্ঠের কর্মীরা। কয়েক দিন কর্মসূচি চলার পর বকেয়া পরিশোধে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় নিয়েছিল মালিকপক্ষ।

সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে আতিকউল্লাহ খান মাসুদ কারাগারে যাওয়ার পর জনকণ্ঠের সাংবাদিকদের টানা ২৮ মাস বেতন-ভাতা বকেয়া পড়ে। ওই বকেয়াও অধিকাংশ কর্মী পাননি। তারপর নতুন করে আবার বকেয়া পড়েছে।

জনকণ্ঠের উপদেষ্ঠা সম্পাদক তোয়াব খানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে শনিবার রাত ১০টায় তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এ বিষয়ে এখন কোনো বক্তব্য দিতে পারছি না, পরে কথা বলব।”

জনক‌ণ্ঠের মা‌লিক ও সম্পাদক আ‌তিকউল্লাহ খান মাসুদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।