বুধবার এ মামলার অন্যতম আসামি মওদুদ আহমদের অব্যাহতির আবেদনের আংশিক শুনানির পর ঢাকার নবম বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মাহমুদুল কবির এ দিন ধার্য করে দেন।
নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে বসানো অস্থায়ী এজলাসে এ মামলার কার্যক্রম চলছে। এই কারাগারেই আরেকটি ভবনে বন্দি জীবন কাটাচ্ছেন দুর্নীতির দুই মামলায় ১৭ বছরের সাজাপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।
গত ৮ নভেম্বর খালেদাকে হাসপাতাল থেকে কারাগারে ফিরিয়ে এনে দীর্ঘদিন পর নাইকো দুর্নীতি মামলার শুনানি শুরু হয়। সেদিন মওদুদ আহমেদ তার অব্যাহতির আবেদনের ওপর নিজেই শুনানি শুরু করেন। বুধবারও তার বক্তব্য উপস্থাপন শেষ হয়নি।
এদিন প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা যুক্তি উপস্থাপনের পর বিএনপির স্থায়ী কমিটির নেতা মওদুদ নির্বাচনের কারণ দেখিয়ে সময়ের আবেদন করেন। অন্যদিকে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল ৩ ডিসেম্বর শুনানির তারিখ দিতে বলেন।
উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক অভিযোগ গঠনের বাকি শুনানির জন্য নির্বাচনের পর ৩ জানুয়ারি দিন রাখেন।
খালেদা জিয়া এদিনও আদালতে আসেন হুইল চেয়ারে করে। শুনানির এক পর্যায়ে বিচারকের উদ্দেশে বলেন, “এত দ্রুত কেন বিচার শেষ করতে চাচ্ছেন? অন্য মামলায় তো এরকম চেষ্টা দেখি না।”
অস্থায়ী এজলাসের পরিবেশ নিয়ে আপত্তি জানিয়ে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এই কারাগারের ভেতরে বিচার হয় কীভাবে? এখানে তো পরিবেশ নাই।”
ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনটি গ্যাসক্ষেত্র পরিত্যক্ত দেখিয়ে কানাডীয় কোম্পানি নাইকোর হাতে তুলে দিয়ে রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার ক্ষতি করার অভিযোগে ২০০৭ সালে ৯ ডিসেম্বর তেজগাঁও থানায় এ মামলা দায়ের করে দুদক।
খালেদা জিয়া ছাড়া মামলার অপর আসামিরা হলেন- সাবেক মন্ত্রী মওদুদ আহমদ, সাবেক প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, সাবেক মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, সাবেক সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ঢাকা ক্লাবের সাবেক সভাপতি সেলিম ভূঁইয়া এবং নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।
গতবছর এ মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানি শুরুর পর খালেদা জিয়া ও মওদুদ আহমদ ছাড়া বাকি সবার অব্যাহতির আবেদনের শুনানি আগেই শেষ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির করতে না পারায় এবং মওদুদের সময়ের আবেদনে এ শুনানি আটকে ছিল গত প্রায় এক বছর ধরে।