যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব গ্রেপ্তার

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরীকে চাঁদাবাজির এক মামলায় গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

নিজস্ব প্রতিবেদকও আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Sept 2018, 03:45 AM
Updated : 6 Sept 2018, 01:37 PM

বুধবার রাতে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের সানারপাড়ের বাসা থেকে মোজাম্মেলকে গ্রেপ্তার করে মিরপুর থানায় নিয়ে আসা হয় বলে ওই থানার এসআই বজলুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান।

মিরপুরের ওসি দাদন ফকির বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, দুলাল নামে ‘পরিবহন খাত সংশ্লিষ্ট একজন’ তিন দিন আগে খন্দকার মোজাম্মেল হকের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

“দুলাল মামলায় দাবি করেছেন, মোজাম্মেল হক তার কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা চেয়েছেন, এর মধ্যে ১০ হাজার টাকা নিয়েছেন। ওই মামলাতেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”

মোজাম্মেলকে বিকালে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের হেফাজতে চেয়ে আবেদন করে পুলিশ।

অন্যদিকে মোজাম্মেলের পক্ষে জামিন আবেদন হয়। তা নাকচ করে এক দিনের পুলিশ হেফাজতের আদেশ দেন ঢাকার মহানগর হাকিম মো. মাজহারুল হক।

আসামি পক্ষের আইনজীবী জায়েদুর রহমান জাহিদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, প্রস্তাবিত সড়ক পরিবহন আইন যাত্রীদের স্বার্থের বিরুদ্ধে যাবে বলে মোজাম্মেল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে স্মারকলিপি দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।

“আজ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে স্মারকলিপি দেওয়ার জন্য যাওয়ার কথা ছিল। আগামী ১০ সেপ্টেম্বর ওই আইন  নিয়ে তার একটি গোলটেবিল বৈঠকে বসার কথা ছিল। এর প্রতিক্রিয়ায় ষড়যন্ত্র হিসেবে মিরপুর রোড সড়ক কমিটির সড়ক সম্পাদক মো. দুলালকে দিয়ে একটি মহল এই মিথ্যা চাঁদাবাজির অভিযোগ এনেছে।”

যাত্রী কল্যাণ সমিতির ফেইসবুক পাতায় এক পোস্টে বলা হয়, “হঠাৎ রাত ৩টায় মিরপুর মডেল থানা থেকে কিছু পুলিশ এসে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিবকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাচ্ছেন পুলিশ। কী জন্য এখনো কোন বিষয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।”

মোজাম্মেল হক চৌধুরী

এই সমিতি নিজেদের বর্ণনা করে ‘একটি অরাজনৈতিক, অলাভজনক স্বেচ্ছাসেবী, যাত্রীকল্যাণমূলক সামাজিক সংগঠন’ হিসেবে। ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে তাদের অফিস।

পরিবহনে যাত্রীদের অধিকার এবং নিরাপত্তার সচেতনতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে কাজ করে এই সংগঠন। দুই ঈদে এবং বার্ষিক ভিত্তিতে সড়ক দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান নিয়ে তাদের প্রতিবেদন প্রকাশ করতে দেখা যায়।

গত রোজার ঈদের পর সমিতির প্রকাশিত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সংগঠনটির বিরুদ্ধে ‘মনগড়া তথ্য’ প্রকাশের অভিযোগ আনেন এবং সমিতির মহাসচিবের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

গত ১০ জুলাই জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্বে মন্ত্রী বলেন, “একটা ভুয়া জনকল্যাণ সমিতি বাংলাদেশে আছে, যাদের কোনো রেজিস্ট্রেশন নেই। সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করে এরকম একটি লোক ওই সংগঠনের নেতৃত্ব দেয়। সময়ে সময়ে তাকে মতলবি মহল আশ্রয় প্রশ্রয় দেয়। আমি দেখি সমাজের অনেক বিশিষ্টজনও এই লোকটির সংবাদ সম্মেলনে এসে হাজির হয়।”