কবি জসীমউদ্দীন সাহিত্য পুরস্কার দেবে বাংলা একাডেমি

পল্লীকবি জসীমউদ্দীনের নামে সাহিত্য পুরস্কার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলা একাডেমি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Jan 2018, 11:38 AM
Updated : 8 Jan 2018, 04:00 PM

সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান জানান, নতুন প্রবর্তিত এই পুরস্কারের মূল্যমান পাঁচ লাখ টাকা।

তিনি বলেন, সাহিত্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলা একাডেমি যেসব পুরস্কার দেয় তার মধ্যে এটিই হবে সবচেয়ে বেশি মূল্যমানের পুরস্কার।

মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান বলেন, “পুরস্কারটির জন্য নীতিমালা প্রণয়ন করা হচ্ছে। এ বছর মার্চ মাসে ‘বড় মাপের’ একজন সাহিত্যিককে পুরস্কারটি দেওয়া হবে।”

এক বছর বিরতি দিয়ে পুরস্কারটি দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ও ২০১৭ সালে প্রবর্তিত মাযহারুল ইসলাম কবিতা পুরস্কারের আর্থিক মূল্যমান এক লাখ টাকা।

তবে বাংলা একাডেমি প্রবর্তিত সাহিত্য ‍পুরস্কারের মূল্যমান বাড়িয়ে দুই লাখ টাকা করা হয়েছে বলে জানান মহাপরিচালক।

কবি জসীমউদ্দীন সাহিত্য পুরস্কার সম্পর্কে শামসুজ্জামান খান বলেন, “এই পুরস্কারটি মরণোত্তর দেওয়া হবে না। এটি দেওয়ার ক্ষেত্রে ৬০ বছর বা তার বেশি বয়সী সাহিত্যিকদের বিবেচনা করা হবে। কবিতা, গল্প, উপন্যাসসহ কথাসাহিত্যের যেকোনো শাখায় সামগ্রিক অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে এই পুরস্কারটি দেওয়া হবে।”

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এ বছর অমর একুশে গ্রন্থমেলা উদ্বোধনের পাশাপাশি বাংলা একাডেমি আয়োজিত আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলনেরও উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  প্রথম দিনে এই আসরে যোগ দেবেন সাতটি দেশের প্রতিনিধি।

তবে আনুষ্ঠানিকভাবে এই সাহিত্য সম্মেলনটি শুরু হবে ২২ ফেব্রুয়ারি।  তখন বিভিন্ন সেমিনারে যোগ দেবেন বিশ্বের ১০টি দেশ থেকে আসা কবি, সাহিত্যিক, লেখকরা।

শামসুজ্জামান খান বলেন, “ইনডেপথ আলোচনার স্বার্থেই আমরা এই সাহিত্য সম্মেলনটি ২২ তারিখে করব। ”

গ্রন্থমেলার মধ্যেই দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে ভারতবর্ষ  ভাগের ৭০তম বর্ষও উদযাপনের কথা জানান তিনি।

শুরু হয়েছে গ্রন্থমেলার প্রস্তুতি

রোববার থেকেই অমর একুশে গ্রন্থমেলার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে বাংলা একাডেমি। এবারের মেলায় ৩৪০টি প্রকাশনা সংস্থা অংশ নিচ্ছে, যার মধ্যে প্রথমবারের মতো অংশ নেবে ২১টি।

এবার গতবারের তুলনায় প্যাভিলিয়ন বাড়ছে ১০টি।

সার্বিক প্রস্তুতি সম্পর্কে মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ও বাংলা একাডেমির পরিচালক ড. জালাল আহমেদ জানান,

এবার মেলায় সব মিলিয়ে বাংলা একাডেমির দুটি এবং ২৩টি প্রকাশনা সংস্থাকে প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে, সেই সঙ্গে বৃদ্ধি পাচ্ছে মেলার পরিসর।

এবার মেলায় ৬৭৬টি ইউনিট বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে, যা গতবারের চেয়ে ১৪টি বেশি।

এবারের মেলায় নতুন ১২টি প্রকাশনা সংস্থাকে প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এগুলো হলো- অনিন্দ্য প্রকাশ, ঐতিহ্য, নালন্দা, পার্ল পাবলিকেশন্স, তাম্রলিপি, ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশ, উৎস প্রকাশন, প্রথমা প্রকাশন, কথাপ্রকাশ, বাংলাপ্রকাশ, জার্নিম্যান বুকস ও শোভাপ্রকাশ।

এর বাইরে গতবার বরাদ্দ পাওয়া সংস্থার মধ্যে এবার ১১টি সংস্থাকে প্যাভিলিয়ন দেওয়া হয়েছে। সেগুলো হলো- আগামী প্রকাশনী, অন্যপ্রকাশ, মাওলা ব্রাদার্স, অবসর প্রকাশনা সংস্থা, কাকলী প্রকাশনী, অন্বেষা প্রকাশন, পাঞ্জেরি পাবলিকেশন্স, সময় প্রকাশন, অ্যাডর্ন, অনন্যা ও পাঠক সমাবেশ।

গতবার বরাদ্দ পাওয়া ইউপিএল ও সাহিত্য প্রকাশ এবার প্যাভিলিয়নের জন্য আবেদন করেনি।

এবারের মেলায় চার ইউনিটের স্টল পেয়েছে ১৮টি প্রকাশনা সংস্থা, তিন ইউনিটের স্টল পেয়েছে ৩২টি, দুই ইউনিটের স্টল পেয়েছে ১১২টি এবং এক ইউনিটের স্টল পেয়েছে ১৫৫টি প্রকাশনা সংস্থা।

পাশাপাশি শিশু কর্নারে থাকছে ৭১টি প্রকাশনা সংস্থার স্টল।

সোমবার থেকে বুধবার পর্যন্ত মেলায় অংশ নেওয়ার জন্য চূড়ান্ত আবেদন ফরম দেওয়া হবে। ২১ জানুয়ারি গতবারের মতো এবারও ডিজিটাল লটারি অনুষ্ঠিত হবে।

সেই সঙ্গে এবার মেলায় প্রবেশের জন্য টিএসসি ও তিন নেতার মাজার সংলগ্ন দুটি প্রবেশ পথ রাখা হবে।