স্বতন্ত্র প্রার্থিতা সহজ করতে চায় ইসি

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে পাওয়া সোয়া পাঁচশ প্রস্তাব থেকে বাছাই করে ৩১টি সুপারিশের একটি খসড়া করেছে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়; সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থিতার শর্ত শিথিল করার সুপারিশও সেখানে রয়েছে।

মঈনুল হক চৌধুরীবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Jan 2018, 04:45 AM
Updated : 4 Jan 2018, 05:03 AM

বর্তমানে সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে হলে সমর্থনের প্রমাণ হিসেবে নির্বাচনী এলাকার ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর জমা দিতে হয় মনোনায়নপত্রের সঙ্গে।

সংলাপে যেসব সুপারিশ এসেছে, তার ভিত্তিতে ওই শর্ত শিথিল করে ১ শতাংশের বদলে এক হাজার ভোটারের সমর্থন দেখানোর বিধান করার পক্ষে ইসি কর্মকর্তারা।

ইসি সচিবালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থি হতে সমর্থনের কোনো প্রমাণ দেখাতে হয় না। পৌরসভায় ১০০, উপজেলায় ২৫০, সিটি করপোরেশনে ৩০০ ভোটারের সমর্থন তালিকা দিতে হয়। সেই বিবেচনায় সংসদ নির্বাচনে ১০০০ ভোটারের সমর্থন দেখানোর শর্ত দেওয়ার সুপারিশ রাখা হয়েছে।  

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও) আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সংজ্ঞায় ‘সশস্ত্রবাহিনী’কে যোগ করার প্রস্তাব দিয়েছিল কয়েকটি দল। তবে ইসি সচিবালয়ের করা খসড়ায় সে বিষয়টি রাখা হয়নি বলে জানান ওই কর্মকর্তা।

অনলাইনে মনোনয়ন, ইভিএম-এর নতুন বিধান, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের আগেই ভোট নেওয়ার ব্যবস্থা, পোলিং এজেন্টদের ইসির পরিচয়পত্র দেওয়া, সমভোটপ্রাপ্তদের লটারির নিয়ম বাদ দিয়ে আবার ভোট নেওয়া, নির্বাচনী ব্যয় তদারকি ও অডিট করতে মনিটরিং কমিটি গঠন, ব্যয় বিবরণী জমা দিতে ব্যর্থ হলে জরিমানা এক লাখ টাকা করা, অনিয়মে জড়িত ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের তাৎক্ষণিক বদলি, অনিয়ম-পক্ষপাতিত্বের বিষয়ে চোখ রাখতে তৃতীয় কাউকে রাখা, ভোটের অভিযোগ দাখিল-নিষ্পত্তি দ্রুত করতে বিশেষ সেন্টার করার প্রস্তাবগুলো রাখা হয়েছে ৩১টি সুপারিশের খসড়া তালিকায়।

রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ, গণমাধ্যম, নারী নেত্রী, পর্যবেক্ষক ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের নিয়ে সংলাপে পাওয়া এসব প্রস্তাব গ্রহণ করা হলে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) অন্তত দুই ডজন অনুচ্ছেদে সংযোজন-বিয়োজন বা সংশোধন করতে হবে।

ইসি সচিবালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, ৬ জানুয়ারি নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানমের সভাপতিত্বে ‘আইন-বিধি সংস্কার সংক্রান্ত’ কমিটির সভায় ওই খসড়া পর্যালোচনা করা হবে।

জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনের ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, “আরপিও সংস্কার সংক্রান্ত প্রস্তাবগুলো একীভূত করে পর্যালোচনা করছে এ সংক্রান্ত মূল কমিটি ও উপ কমিটি। কমিশন সভায় উপস্থাপন করার পর আমরা সুনির্দিষ্ট ধারণা আপনাদের দিতে পারব।”

একাদশ সংসদ নির্বাচনের ঘোষিত রোডম্যাপ অনুযায়ী গত জুলাই-অক্টোবর সময়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সংলাপ করে ইসি। প্রাসঙ্গিক খসড়া প্রস্তুতের পর আসছে ফেব্রুয়ারিতে আইনি সংস্কার চূড়ান্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে ইসির।

আইন সংস্কার সংক্রান্ত কমিটির এক সদস্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা কয়েক দফা বৈঠক করেছি, আরপিওতে অন্তত দুই ডজন অনুচ্ছেদে সংযোজন-বিয়োজন-সংশোধনের প্রাথমিক খসড়া তৈরি করা হয়েছে। আরও পর্যালোচনা করে কমিশন সভায় উপস্থাপনযোগ্য একটি খসড়া করা হবে।”

সিইসি ও নির্বাচন কমিশনারদের নিয়ে কমিশন সভাতেই মন্ত্রণালয়ের কাছে পাঠানোর জন্য চূড়ান্ত সুপারিশগুলো তৈরি করা হবে বলে জানান তিনি।