জড় কাঠে ‘মনের কথা’

রান্না কিংবা ইটের জ্বালানি হিসাবে ব্যবহৃত কাঠ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে মানুষ-প্রাণির নানা অবয়ব, যাতে শিল্পের ছোঁয়ায় যেন ভাষা পেয়েছে প্রাণহীন সেই কাঠ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Nov 2017, 05:20 PM
Updated : 25 Nov 2017, 03:49 AM

এসব ভাস্কর্যের সঙ্গে জলরঙের আরও চিত্রকর্ম নিয়ে রাজধানীর ধানমণ্ডির গ্যালারি চিত্রকে শুরু হয়েছে শিল্পী নাছির আহাম্মদের একক শিল্প প্রদর্শনী।

শুক্রবার সন্ধ্যায় ‘মন-মুকুরের মরমিয়া’ শিরোনামে ১৫ দিনব্যাপী এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন অধ্যাপক ও ভাস্কর হামিদুজ্জামান খান।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “ভাস্কর্যের বিষয়ে বলতে গেলে বলতে হয়, এতে কাঠ অন্যভাবে প্রাণ পেয়েছে। প্রদর্শনীতে সেগুলো দেখলে ভাস্কর্যের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধা বেড়ে যাবে।”

জলরঙের চিত্রকর্ম সম্পর্কে অধ্যাপক হামিদুজ্জামান বলেন, “বয়সের তুলনায় নাছিরের কাজ অনেক বেশি পরিণত। তার করা জলরংগুলো সুন্দর হয়েছে, যা দেখে আমি ধাক্কা খেয়েছি।”

অনুষ্ঠানে অধিকারকর্মী খুশি কবির বলেন, “ভাস্কর্যগুলো অত্যন্ত শক্তিশালী, আর জলরংগুলো শিল্পীর দক্ষতার প্রতীক। তার কাজে প্রকৃতির সাথে শিল্পীর সম্পর্ক কতটা গভীর তা অনুভব করা যায়।

“আমি মনে করি, আমাদের সংস্কৃতির উপর যে কালো ছায়া প্রভাব বিস্তারের চেষ্ঠা করছে, এ ধরনের কাজ তার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রেরণা যোগাবে।”

ভাস্কর্যগুলোর পেছনের গল্প শোনাতে গিয়ে শিল্পী নাছির আহাম্মদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কাঠ কীভাবে সজীব হয়ে উঠে সেটা দেখানোর চেষ্টা এখানে হয়েছে। এই কাঠ জড় হলেও নিবিড়ভাবে প্রত্যক্ষ করলে সেটা সজীব হয়ে উঠে আমার কাছে।”

তিনি বলেন, “কাজ করতে গিয়ে আমি খড়ি বা ইটভাটার জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ করি। কাজের মাধ্যমে সেগুলোতে জেগে উঠার সম্ভাবনা তৈরি হয়। সেগুলো আমার মনে দর্পণ হয়ে উঠে।”

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শিল্পী নাছিরকে নিয়ে সংগীত শিল্পী কফিল আহমেদ বলেন, “বাংলাদেশের মানুষের জীবনের এই সময়ের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, মানবিক লড়াই-সংগ্রামের সাথে জড়িত থাকা একজন শিল্পী তিনি।”

প্রদর্শনীতে শিল্পী নাছিরের মোট ৪৩টি শিল্পকর্ম স্থান পেয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ২৬টি ভাস্কর্য, আর ১৭টি চিত্রকর্ম।

উদ্বোধনী দিনের প্রদর্শনীতে অন্যদের মধ্যে শিল্পী ও অধ্যাপক আবুল বারক্‌ আলভী, স্থপতি রবিউল হুসাইন, শিল্পী মাহবুবুর রহমান, শিল্পী তৈয়বা বেগম লিপি, শিল্পী অমল আকাশ, শিল্পী আব্দুল মান্নান উপস্থিত ছিলেন।

আগামী ০৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত প্রদর্শনী শিল্পানুরাগী ও দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।