তিনি শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, “অতিরিক্ত মুক্তচিন্তা করতে গিয়ে ব্লগাররা আবার বিপদ ডেকে আনছে।
“ব্লগাররা ধর্মকে-ইসলামকে তারা তাদের মুক্তচিন্তার বিষয় হিসেবে নিয়ে যেভাবে ধর্মের বিরুদ্ধে এবং নবীজীর বিরুদ্ধে কটূক্তি, কদাচার... যেগুলো ভাষায় প্রকাশ করা যায় না, পড়া যায় না, এগুলো তারা করছে।”
বাংলাদেশে গত কয়েক বছরে জঙ্গিদের হামলায় নিহত লেখক, প্রকাশক, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টরা লেখালেখির জন্য আগে থেকে হুমকি পেয়ে আসছিল।
অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট অনেকের অভিযোগ, সরকারের কর্তাব্যক্তিরা বিভিন্ন সময়ে লেখালেখির সমালোচনা করে প্রকারান্তরে ধর্মান্ধ জঙ্গিগোষ্ঠীর হামলাকে বৈধতা দিয়েছে।
ব্লগার হত্যাকাণ্ডগুলোকে সরকার গুরুত্ব দেয়নি বলে গুলশান হামলার মতো ঘটনার ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে বলে সম্প্রতি বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ মন্তব্য করেন।
একটি সংবাদপত্রের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে প্রেস ক্লাবে আয়োজিত অনুষ্ঠানের প্রধান আলোচক আইজিপি শহীদুল বলেন, “ব্লগাররা লেখনীর মাধ্যমে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানছে, আর জঙ্গিরা মানুষ হত্যা করে সমাজের, রাষ্ট্রের, মানবতার ক্ষতি করছে।”
বাংলাদেশের তরুণরা তথ্যপ্রযুক্তি খাতে নিজেদের মেধার স্বাক্ষর রাখার পাশাপাশি কেউ কেউ আবার জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ছে, বলেন তিনি।
ইসলাম ধর্মের অপব্যাখ্যা প্রতিরোধে ইমাম এবং আলেম সমাজকে এগিয়ে আসার আহ্বানও জানান পুলিশ মহাপরিদর্শক।
তরুণদের মগজ ধোলাইয়ের কাজটি জঙ্গিবাদীরা ভালোভাবে করছে জানিয়ে তাদের খপ্পরে সন্তানরা যেন না পড়ে, সেজন্য অভিভাবকদের সচেতন থাকার তাগিদ দেন পুলিশ মহাপরির্দশক।
“জঙ্গিদের এই মোটিভেশনের বিরুদ্ধে কাজ করতে হলে আমাদের সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। এর শুরু হবে পরিবার থেকে। পিতা-মাতাকে সন্তানদের প্রতি তীক্ষ্ণ নজর রাখতে হবে।”
‘আমার কাগজ’ আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে বিএফইউজের একাংশের সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল তরুণদের বিপথে যাওয়ার জন্য বর্তমান সামাজিক অবস্থাকেই অনেকাংশে দায়ী করেন।
“তারুণ্য বিকশিত হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে না, নিজেকে প্রকাশ করার সুযোগ পাচ্ছে না। ফলে তাদের মধ্যে হাহাকার তৈরি হচ্ছে।”
সুস্থ রাজনীতি, সুস্থ সংস্কৃতির চর্চার অভাবে তরুণদের মধ্যে জঙ্গিবাদ ঢুকে পড়েছে বলে মন্তব্য করেন বুলবুল।
“সন্ত্রাসীরা, জঙ্গিরা তাদের (তরুণদের)এই শূন্যতার জায়গাগুলো পূরণ করছে। সুস্থ ধারার কেউ যদি প্রবেশ না করতে পারে, সুস্থ ধারার রাজনীতি যদি প্রবেশ করতে না পারে, সুস্থ ধারার সংস্কৃতি যদি প্রবেশ করতে না পারে, তাহলে সেখানে অসুস্থরা ঢুকে পড়ে।”
শুধু পুলিশি অভিযান দিয়ে জঙ্গিবাদ দমন করা যাবে না মত জানিয়ে সাংবাদিক ইউনিয়নের এই নেতা বলেন, এজন্য সমাজকে জাগতে হবে। আর সমাজকে জেগে ওঠায় গণমাধ্যমও ভূমিকা রাখতে পারে।
প্রধান তথ্য কর্মকর্তা এ কে এম শামীম চৌধুরী, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শ্যামসুন্দর সিকদার, আমার কাগজের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ফজুলল হক ভূঁইয়া রানা, এরশাদনগর জামে মসজিদের খতিব মুফতি মাওলানা কামাল উদ্দিনও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।