স্বতন্ত্র প্রার্থীরা এই পর্বে ১৭০ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন, যাদের অনেকেই আবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে নিজেরা প্রার্থী হয়েছেন।
শনিবার সারাদেশে ৪৫টি জেলার ৭১৭টি ইউনিয়নে এ নির্বাচন ঘিরে সংঘাত-সহিংসতায় নিহত হয়েছেন দুই প্রার্থীসহ অন্তত ১১।
সহিংসতা বাড়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ সবাইকে ‘গণতন্ত্রের জন্য’ প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত রিটার্নিং কর্মকর্তাদের পাঠানো প্রাথমিক ফলাফল এবং ভোটের আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ৩৯ জন মেয়র প্রার্থীর তথ্য মিলিয়ে মোট ৬৭৮ ইউনিয়নের ফলাফল রয়েছে ইসির হাতে। কেন্দ্র স্থগিত হওয়ার কারণে বাকি ৩৮টি ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে পুনরায় ভোটের প্রয়োজন হবে।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, পঞ্চম ধাপে ১ কোটি ১৩ লাখ ৮৭ হাজারের বেশি ভোটারের মধ্যে ৮৭ লাখ ৪৬ হাজার ৬৭ জন ভোট দিয়েছেন। চেয়ারম্যান পদে ভোট পড়েছে ৭৬ দশমিক ৮ শতাংশ।
প্রাথমিক ফলাফল পর্যালোচনায় দেখা যায়, আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা ৩৯২ ইউপির চেয়ারম্যান পদে জয় পেয়েছেন। আর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত আরও ৩৯ জনকে যোগ করলে এ ধাপে নৌকা প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান হচ্ছেন ৪৩১ জন।
নির্বাচন কমিশনের জনসংযোগ পরিচালক এস এম আসাদুজ্জামান বলেন, “এটা প্রাথমিক বেসরকারি ফলাফল। রিটার্নিং কর্মকর্তাদের ফলাফল পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। ইসির অনুমোদন সাপেক্ষে পরে তা প্রকাশ করা হবে।”
পাঁচ ধাপের ফল:
স্থানীয় সরকারের সবচেয়ে তৃণমূলের এই নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে এবারই প্রথম দলীয় প্রতীকে ভোট হচ্ছে। ফেব্রুয়ারিতে তফসিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচন ঘিরে সংঘাত সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা পৌঁছে গেছে শয়ের কাছাকাছি।
দেশের চার হাজারেরও বেশি ইউপির মধ্যে নির্বাচনযোগ্য তিন হাজারের বেশিতে ভোট শেষ হয়েছে পাঁচটি ধাপে।
নির্বাচন কমিশনের হিসাবে, প্রথম ধাপে ৭৪ শতাংশ, দ্বিতীয় ধাপে ৭৮ শতাংশ, তৃতীয় ধাপে ৭৬ শতাংশ ও চতুর্থ ধাপে ৭৭ শতাংশ ভোট পড়েছে। ৭৬ দশমিক ৮ শতাংশ ভোট বাক্সে পড়ার হিসাব নিয়ে পঞ্চম ধাপও একই কাতারে রয়েছে।
>> প্রথম ধাপের চূড়ান্ত ফলে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান হয়েছেন ৪৯৪ জন ও বিএনপির ৫০ জন। স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয় পান ১০৯ ইউপিতে। আর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের ৫৪ জন।
>> দ্বিতীয় ধাপে নৌকা প্রতীকের ৪১৯ জন ও ধানের শীষের ৬৩ জন বিজয়ী হন। ১১৭ ইউপিতে জয় পান স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। এ ধাপে আওয়ামী লীগের ৩৪ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।
>> তৃতীয় ধাপের ভোটে আওয়ামী লীগ থেকে চেয়ারম্যান হয়েছেন ৩৬৬ জন; বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন ২৯ জন। এ ধাপে বিএনপি প্রার্থীরা ৬০টি ইউপিতে জয়ী হয়েছেন; স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয় পান ১৩৯ ইউপিতে।
>> চতুর্থ ধাপে নৌকা প্রতীকের ৪০৫ জন জয়ী হয়েছেন। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতার ৩৫ জন। বিএনপির ৭০ জন ও ১৬১ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী জয় পেয়েছেন এ ধাপে।
>> পঞ্চম ধাপে আওয়ামী লীগ থেকে ৩৮২ জন ভোটে এবং ৩৯ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া বিএনপির ৬৬ জন, স্বতন্ত্র ১৬৮ জন, জাতীয় পার্টির ৮ জন এবং অন্য দলের একজন প্রার্থী চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছে।
শেষ ধাপে ৪ জুন ৭২৭ ইউপিতে ভোটের মধ্য দিয়ে এবারের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে নির্বাচন কমিশনের।