এই রায় প্রত্যাশিত: ইমরান

যুদ্ধাপরাধী জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদণ্ড আপিলের রায়ে বহাল থাকায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 March 2016, 06:30 AM
Updated : 8 March 2016, 11:24 AM

প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চ মঙ্গলবার একাত্তরে চট্টগ্রামের বদর কমান্ডারের মীর কাসেমের আপিলের রায় ঘোষণা করে।

এর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এক আনন্দ মিছিলের পর ইমরান বলেন, “সর্বোচ্চ আদালত মীর কাসেমের ফাঁসির রায় বহাল রেখেছে। এর মাধ্যমে সকল ষড়যন্ত্র উপেক্ষা করে দীর্ঘ প্রতীক্ষিত রায় আজ আমরা পেয়েছি।

“এর মাধ্যমে জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন হয়েছে, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সকল ষড়যন্ত্র পরাজিত হয়েছে। জনগণের আন্দোলন বিজয়ী হয়েছে।"

তিনি বলেন, মীর কাসেম আলী এই বিচার ঠেকানোর জন্য হাজার হাজার কোটি টাকা লগ্নি করেছিল, সারাবিশ্বে লবিস্ট নিয়োগ করেছিল। এই যুদ্ধাপরাধী সম্পদের বড়াই করে ট্রাইব্যুনালে সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়ার পরও ‘ভি-চিহ্ন’ দেখানোর সাহস করেছিল।

“প্রমাণিত হয়েছে যত ষড়যন্ত্র করা হোক মীর কাসেমের রক্ষা নাই, তাকে ফাঁসির কাষ্ঠে যেতে হবে।”

ইসলামী ব্যাংক ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, দিগন্ত মিডিয়া কর্পোরেশনের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইবনে সিনা ট্রাস্টি বোর্ডের সাবেক সদস্য মীর কাসেম তার দলের প্রধান অর্থ যোগানদাতাদের মধ্যে একজন। স্বাধীন বাংলাদেশে মূলত তার যোগানো অর্থেই জামায়াত পেয়েছে শক্ত ভিত্তি।

সব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে যারা রাজপথে ছিলেন, তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র বলেন, “এই রায়ের মধ্য দিয়ে আবারো প্রমাণিত হল, অপরাধীরা যতই ক্ষমতাশালী হোক না কেন, তাকে দণ্ড দেওয়ার ক্ষেত্রে আদালত আপসহীন।”

এর আগে রায়কে কেন্দ্র করে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকারের নেতৃত্বে শাহবাগে অবস্থান মীর কাসেমের ফাঁসির দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীরা।

রায়ের খবর পৌঁছালে শুরু হয় স্লোগান, ‘এইমাত্র খবর এলো, মীর কাসিমের ফাঁসি হলো’; ‘হৈ হৈ রৈ রৈ জামায়াত শিবির গেলি কই?’

জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামী ও সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের পর মীর কাসেম ছিলেন আলবদর বাহিনীর তৃতীয় প্রধান ব্যক্তি। জামায়াতের তৎকালীন ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র সংঘের পূর্ব পাকিস্তান শাখার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি।

একাত্তরে ঈদুল ফিতরের আগে চট্টগ্রামে কিশোর মুক্তিযোদ্ধা জসিম উদ্দিন আহমেদসহ কয়েকজনকে ধরে নিয়ে ডালিম হোটেলে নির্যাতন ও হত্যার অভিযোগে তার মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে সর্বোচ্চ আদালত।

এই আলবদর নেতার বিরুদ্ধে আনা ১৪টি অভিযোগের মধ্যে জসিমসহ ৮ জনকে হত্যার দায়ে ২০১৪ সালের ২ নভেম্বর তার মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল।