আনোয়ার চৌধুরীর ওপর হামলা: মুফতি হান্নানসহ ৫ আসামির দণ্ড বহাল

প্রায় এক যুগ আগে সিলেটে সাবেক ব্রিটিশ হাই কমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলার ঘটনায় হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি আবদুল হান্নানসহ তিন আসামির মৃত্যুদণ্ড এবং দুইজনের যাবজ্জীবন দণ্ড বহাল রেখেছে হাই কোর্ট।

সুপ্রিম কোর্ট প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Feb 2016, 06:22 AM
Updated : 11 Feb 2016, 10:38 AM

আলোচিত এ মামলায় নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শেষে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি আমির হোসেনের হাই কোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এই রায় দেয়।

আসামিদের মধ্যে মুফতি হান্নান, শরীফ শাহেদুল আলম ওরফে বিপুল ও দেলোয়ার হোসেন ওরফে রিপনকে মৃত্যুদণ্ড এবং হান্নানের ভাই মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান ওরফে মফিজ ওরফে অভি এবং মুফতি মঈন উদ্দিন ওরফে আবু জান্দালকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিল সিলেটের একটি আদালত।

আট বছর পর আসামিদের আপিল খারিজ করে হাই কোর্ট সেই রায়ই বহাল রেখেছে। পাঁচ আসামির সবাই বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।

হাই কোর্টের রায়ের পর মুফতি হান্ননসহ চার আসামির আইনজীবী মোহাম্মদ আলী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা রায়ের অনুলিপি পেলে সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করব।”

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, সিলেটে হযরত শাহজালালের মাজার প্রাঙ্গণে ২০০৪ সালের ২১ মে ব্রিটিশ হাই কমিশনার আনোয়ার চৌধুরী গ্রেনেড হামলার মুখে পড়েন।

ঘটনাস্থলে পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক কামাল উদ্দিন নিহত হন। পুলিশ কনস্টেবেল রুবেল আহমেদ ও হাবিল মিয়া নামের আরেক ব্যক্তি মারা যান হাসপাতালে।

সাবেক ব্রিটিশ হাই কমিশনার আনোয়ার চৌধুরী

আনোয়ার চৌধুরী ও সিটেলের জেলা প্রশাসকসহ অন্তত ৪০ জন  ওই ঘটনায় আহত হন।

পুলিশ ওই দিনই সিলেট কোতোয়ালি থানায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করে। তদন্ত শেষে ২০০৭ সালের ৭ জুন মুফতি আব্দুল হান্নান ওরফে আবুল কালাম,  হান্নানের ভাই মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান ওরফে মফিজ ওরফে অভি, শরীফ শাহেদুল আলম ওরফে বিপুল ও দেলোয়ার হোসেন ওরফে রিপনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।

যথাযথ ঠিকানা না থাকায় মুফতি মঈন উদ্দিন ওরফে আবু জান্দাল ওরফে মাসুম বিল্লাহ ওরফে খাজার নাম প্রথমে বাদ দেওয়া হলেও পরে তাকে যুক্ত করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। ওই বছর নভেম্বরে হয় অভিযোগ গঠন।

৫৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ২০০৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক সামীম মো. আফজাল তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড ও দুই আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।

নিম্ন আদালতের রায়ের পর ২০০৮ সালে আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মুত্যুদণ্ড অনুমোদনের আবেদন) হাই কোর্টে শুনানির জন্য আসে। ২০০৯ সালে আসামিরা আপিল করেন।

এর ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি হাই কোর্টে শুনানি শুরু হয়। নয় দিন শুনানির পর গত ৩ ফেব্রুয়ারি আদালত রায়ের দিন ঠিক করে দেয়।   

রাষ্ট্রপক্ষে হাই কোর্টে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ এ কে এম মনিরুজ্জামান কবির ও সহকারী অ্যার্টর্নি জেনারেল মো. শহীদুল ইসলাম খান।

আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী এ কে এম ফয়েজ, মোহাম্মদ আলী ও রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী হাসনা বেগম।