এই চার প্রকল্প হল- 'বঙ্গবাজার নগর পাইকারি বিপণি বিতান', 'বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক মণি সরণি' 'নজরুল সরোবর' এবং 'হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী শিশু উদ্যান'।
Published : 25 May 2024, 12:41 PM
বঙ্গবাজার নগর পাইকারি বিপণিবিতান, শিশু পার্কসহ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে চারটি বড় প্রকল্পের নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার সকালে বঙ্গবাজারে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পর সেখানে একটি নিমগাছের চারা রোপণ করেন এবং পরে দোয়ায় অংশ নেন।
এই চার প্রকল্প হল- বঙ্গবাজার নগর পাইকারি বিপণিবিতান, পোস্তগোলা ব্রিজ থেকে রায়েরবাজার স্লুইসগেটপর্যন্ত আট লেনের 'বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক মণি সরণি' (ইনার সার্কুলার রিং রোড)', ধানমন্ডিতে নজরুল সরোবর এবং শাহবাগে 'হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী শিশু উদ্যান' আধুনিকীকরণ প্রকল্প।
বঙ্গবাজার নগর পাইকারি বিপণিবিতান
আগুনে পুড়ে যাওয়া ঢাকার বঙ্গবাজার কমপ্লেক্সের স্থানে ১০ তলা বিপণিবিতান নির্মাণ করবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। গত বছরের ৪ এপ্রিল ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যায় বঙ্গবাজার। অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ২ হাজার ৯৬১ জন ব্যবসায়ীর সবাইকে বঙ্গবাজার নগর পাইকারি বিপণিবিতানে পুনর্বাসন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও, পুড়ে যাওয়া মার্কেটে ব্যবসায়ীদের ১৭ থেকে ২২ বর্গফুট আয়তনের দোকান ছিল। নতুন বিপণিবিতানে প্রতিটি দোকানের আয়তন বেড়ে দাঁড়াবে ৮০ থেকে ১২০ বর্গফুট।
বঙ্গবাজার নগর পাইকারি বিপণিবিতান ভবনে পাঁচটি সাধারণ সিঁড়ি ও ছয়টি ফায়ার এক্সিট সিঁড়িসহ পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা থাকছে। বিপণিবিতানের প্রতিটি ব্লকে ঢোকার এবং বের হওয়ার গেইট থাকবে। ভবনে বৈদ্যুতিক যান্ত্রিক কক্ষ এবং প্রতিটি ব্লকের প্রতি তলায় চারটি করে শৌচাগার থাকবে।
এ ছাড়া ভবনের ভূমিতলে ১৬৯টি গাড়ি ও ১০৯টি মোটরসাইকেল পার্কিংয়ের সুবিধা থাকবে।
৩৮৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০২৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক মণি সরণি
রাজধানীতে যানজট নিরসনের উদ্যোগ হিসেবে পোস্তগোলা ব্রিজ থেকে রায়েরবাজার স্লুইসগেটপর্যন্ত, ৫ কিলোমিটার আট লেনের 'বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক মণি সরণি' নামে ইনার সার্কুলার রিং রোড তৈরি করা হবে।
৯৭৪ কোটি ৫৮ লাখ টাকা ব্যয়ের এই প্রকল্পের আওতায় ১০ কিলোমিটার নর্দমা, ১০ কিলোমিটার হাঁটার পথ, ৩টি উড়াল সেতু, ৩টি পথচারী পারাপার সেতু, দুই কিলোমিটার সংরক্ষণকারী দেয়াল, তিনটি মসজিদ, ছয়টি যানবাহন বিরতির স্থান ও ছয়টি যাত্রীছাউনি নির্মাণ করা হবে।
এতে ঢাকা শহরের ভেতরে বাস, ট্রাক ও পণ্যবাহী যানবাহনের চাপ কমার পাশাপাশি যানজট নিরসন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়সীমা ধরা হয়েছে ২০২৬ সালের জুন মাস।
নজরুল সরোবর
নিজস্ব অর্থায়নে প্রায় ২৩ কোটি ৫৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ধানমন্ডি ১৩/এ এবং ৮/এ আবাসিক এলাকা সংলগ্ন ৫০.৯৬৭ কাঠা এলাকা জুড়ে 'নজরুল সরোবর' নির্মাণ করবে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম স্মরণে ‘নজরুল সরোবর’ নামের উন্মুক্ত বিনোদন মঞ্চে একটি ঘাট, উন্মুক্ত মিলনায়তন, পথচারীদের হাঁটার পথ, গণপরিসর, রেস্তোরাঁ, বসার স্থান, দৃষ্টিনন্দন বাতি, পর্যাপ্ত সবুজায়ন ও শব্দযন্ত্র স্থাপনের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও নজরুল ইসলামের নানা ধরনের মুহূর্ত ও সাহিত্যকর্ম সংবলিত ফলক স্থাপন করা হবে।
২০২৫ সালের জুনের মধ্যে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী শিশু উদ্যান
শাহবাগের জিয়া শিশু পার্কের নতুন নাম হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী শিশু উদ্যান করা হয়েছে। প্রায় ৬০৪ কোটি টাকা ব্যয়ে এই পার্কের আধুনিকায়নের কাজ করা হবে।
১৯৭৯ সালে স্থাপিত এই পার্কে ১১টি রাইড ছিল। সেখানে এখন ১৫টি অত্যাধুনিক রাইড বসানো হবে। সেগুলোর মধ্যে থাকবে-মেগা ডিস্ক', সুপার এয়ার রেস, ফ্লাইং ক্যারোস্যাল, গ্যালিয়ন, ১২ডি থিয়েটার, মাইন কোস্টার,ক্লাইম্বিং কার সুপার হ্যাপী সুইং, ওয়াটার ম্যানিয়াসহ আরও কয়েকটি রাইড।
এছাড়াও দর্শনার্থীদের জন্য শৌচাগার, চত্বর, রেস্তোঁরা, বিশ্রামস্থল, প্রশস্ত হাঁটার পথ, বসার আসনসহ বৃক্ষরোপণ ও সৌন্দর্য বর্ধনের নানা পরিকল্পনা নিয়েছে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।
২০২৬ সালের জুনের মধ্যে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।