“সংখ্যালঘুদের বিষয়ে গত ৫ অগাস্টের পর যে কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে, সেটি মূলত রাজনৈতিক কারণে, ধর্মীয় কারণে নয়,” বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
Published : 22 Jan 2025, 12:03 AM
বাংলাদেশে কোনো সংখ্যালঘু ‘নির্যাতিত হচ্ছে না’ দাবি করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, এটা ‘ভারতীয় মিডিয়ার অপপ্রচার’।
ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের শার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাক্ষাৎ করতে গেলে তাকে এ কথা বলেন উপদেষ্টা। সঙ্গে এও বলেন, “সংখ্যালঘু শব্দটা আমরা ব্যবহার করতে চাই না।”
জ্যাকবসনের এক জিজ্ঞাসায় জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, “সবাই বাংলাদেশের নাগরিক ও সবার সমান অধিকার রয়েছে। সংখ্যালঘুদের বিষয়ে গত ৫ অগাস্টের পর যে কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে, সেটি মূলত রাজনৈতিক কারণে, ধর্মীয় কারণে নয়।”
মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে নিরাপত্তা, সন্ত্রাস দমন, রোহিঙ্গা সমস্যা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধিতে পারস্পরিক সহযোগিতা, পুলিশ সংস্কার কমিশন, সীমান্ত পরিস্থিতি, সংখ্যালঘু ও কৃষি খাতসহ স্বার্থ সংশ্লিষ্ট নানা বিষয় উঠে আসে বৈঠকে।
সাক্ষাতের শুরুতে ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসনকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের উন্নয়নে অন্যতম বড় অংশীদার। প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে অনেক শিক্ষার্থী উচ্চ শিক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যান। সন্ত্রাস দমন ও নিরাপত্তা খাতেও যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা অব্যাহত রয়েছে।”
বাংলাদেশের পুলিশ, বিজিবি ও কোস্টগার্ডকে প্রশিক্ষণ দেওয়ারও অনুরোধ জানান তিনি।
বাংলাদেশের উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমবর্ধমান সহযোগিতা অব্যাহত রাখার কথা তুলে ধরে জ্যাকবসন বলেন, “আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের আরও বেশি প্রশিক্ষণ দেব। তবে কর্মকর্তারা যেন প্রশিক্ষণ শেষে দেশে ফিরে এসে স্ব স্ব জায়গায় কর্মরত থাকেন, সেটি নিশ্চিত করতে হবে, যাতে এটি আরও ফলপ্রসূ হয়। দুই দেশের মধ্যে নিরাপত্তা ও সন্ত্রাস দমনের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সহযোগিতা বিদ্যমান রয়েছে।”
যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চ শিক্ষায় বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের আগের চেয়ে ‘৩০ শতাংশ’ বেশি অনুমতি দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
জ্যাকবসন বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত পরিস্থিতি সম্পর্কেও জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, “সীমান্ত পরিস্থিতি মোটামুটি স্বাভাবিক রয়েছে। আগামী মাসে এ বিষয়ে দিল্লিতে বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।”
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মানবিক সহায়তা ও পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার কথা তুলে ধরে দেশটিতে আরও বেশি রোহিঙ্গা পুনর্বাসনের আহ্বান জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, “ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র বেশ কিছু সংখ্যক রোহিঙ্গা শরণার্থীকে পুনর্বাসন করেছে। আমি যুক্তরাষ্ট্রকে আরও বেশি রোহিঙ্গা পুনর্বাসনের আহ্বান জানাই।”
জবাবে ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে প্রায় ১৭ হাজার রোহিঙ্গাকে যুক্তরাষ্ট্রে পুনর্বাসন করেছে। যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গা শরণার্থীদের উন্নয়ন ও পুনর্বাসনে ‘বৃহত্তম দাতা’। উন্নয়ন সংস্থা ইউএস-এইড বাংলাদেশের স্থানীয় এনজিওদের সঙ্গে রোহিঙ্গাদের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। পুনর্বাসন প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।”
সাক্ষাতে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের রেসিডেন্ট লিগ্যাল অ্যাডভাইজার রাহুল কালে, পলিটিক্যাল মিলিটারি অ্যাফেয়ার্স অফিসার জোশ পোপ, অ্যাসিস্ট্যান্ট রিজিয়নাল সিকিউরিটি অফিসার স্টিফেন কোভাকস উপস্থিত ছিলেন।