ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলায় সহায়তা চায় ডব্লিউএফপি

বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শিবির এবং আশপাশের এলাকায় শরণার্থীদের জন্য ফর্টিফায়েড বিস্কুট এবং ২৫০ টন খাদ্য সহায়তার জন্য মজুদ রেখেছে ডব্লিউএফপি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 May 2023, 02:28 PM
Updated : 13 May 2023, 02:28 PM

অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলায় দাতা সম্প্রদায়কে সহায়তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)।

শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংস্থাটি জানিয়েছে, তারা মিয়ানমারের রাখাইনে চার লাখ মানুষকে একমাস খাদ্য সহায়তা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। পাশাপাশি বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শিবির এবং আশপাশের এলাকায় শরণার্থীদের জন্য ফর্টিফায়েড বিস্কুট এবং ২৫০ টন খাদ্য সহায়তার জন্য মজুদ রেখেছে।

প্রায় ১৮০ কিলোমিটার গতির বাতাসের শক্তি নিয়ে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ রোববার বাংলাদেশ-মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

ঝড়ের কারণে কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত, চট্টগ্রাম ও পায়রা বন্দরকে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

যে এলাকা দিয়ে ঝড়টি উপকূল অতিক্রম করে স্থলভাগে উঠে আসবে সেখানে মিয়ানমার থেকে আসা কয়েক লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর বসবাস। ঝড়ে বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই শরণার্থী শিবিরের কী দশা হবে, তা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে।

ডব্লিউএফপি ঢাকার পার্টনারশিপ, কমিউনিকেশন ও রিপোর্টিং বিভাগের প্রধান কুন লির পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অংশীদারদের নিয়ে তারা বড় পরিসরে জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলার প্রস্তুতি নিচ্ছে, জরুরি পরিকল্পনা প্রণয়ন করছে এবং খাদ্য ও ত্রাণ সরবরাহ, যানবাহন এবং জরুরি সরঞ্জাম প্রস্তুত করছে।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য এবং পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে ডব্লিউএফপি এক মাসের জন্য চার লাখের বেশি মানুষের চাহিদা পূরণের মত খাবারের ব্যবস্থা করছে। বাংলাদেশের কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরে এবং আশপাশের এলাকায় মানুষের প্রয়োজনে পাঠাতে ফরটিফাইড বিস্কুট এবং ২৩০ টন খাদ্য মজুদ রেখেছে ডব্লিউএফপি।

মিয়ানমারে ডব্লিউএফপিন ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর শীলা ম্যাথিউ বলেন, “আমরা ভালো কিছুর আশায় সবচেয়ে খারাপের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি।”

তিনি বলেন, সংঘাত, দারিদ্র্য এবং সামাজিক সক্ষমতায় দুর্বল যে এলাকার দিকে ঘূর্ণিঝড় মোখা যাচ্ছে, সেই এলাকার অনেক মানুষ ডব্লিউএফপির নিয়মিত মানবিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল। তারা কোনোভাবে আরেকটি বিপর্যয় সহ্য করার অবস্থায় নেই।”

ঝড়ের পর পরিবহন এবং টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হতে পারে– এমন সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখেই ডব্লিউএফপির টিমগুলি তাদের পরিকল্পনা এবং ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী সহায়তা কর্মকাণ্ডের প্রস্তুতি নিয়েছে বলে জানানো হয় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।

বাংলাদেশে ডব্লিউএফপির ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর সাইমন পার্চমেন্ট বলেন, “রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুরা জলবায়ুর অভিঘাতের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এলাকাটি খুবই দুর্যোগপ্রবণ এবং রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে তাদের বাসস্থানের অবস্থা খারাপ। দাতাদের তহবিল কমে আসার কারণে খাদ্য সহায়তা হ্রাসসহ আরও অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি তারা, এই অবস্থায় আমরা দাতা সম্প্রদায়কে তাদের সমর্থন অব্যাহত রাখতে অনুরোধ করছি।”

চলতি বছরেই রোহিঙ্গা শরনার্থীদের জন্য খাদ্য সহায়তা কমিয়ে দেওয়ার ঘোষণা দেয় ডব্লিউএফপি। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংস্থাটি জানায়, ১ মার্চ থেকে রোহিঙ্গাদের অনুদানের পরিমাণে ১২ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার কম থাকার কারণে ডব্লিউএফপিকে প্রত্যেক রোহিঙ্গার জন্য দেওয়া খাদ্য সহায়তা ভাউচারের পরিমাণ ১২ মার্কিন ডলার থেকে কমিয়ে ১০ মার্কিন ডলারে নিয়ে আসতে হয়েছে।