আমাদের আশ্চর্য ছায়াপথ

মল্লিকা ধর
Published : 23 July 2020, 08:58 AM
Updated : 23 July 2020, 08:58 AM

এক শরতের সন্ধ্যা, আকাশ খুব পরিষ্কার । ধরা যাক, আমরা আছি বৈদ্যুতিক আলোকোজ্জ্বল শহরের থেকে অনেক দূরে, এক গ্রামের মাঠের উপর । আকাশে নক্ষত্রেরা এক এক করে দেখা দিচ্ছে । কৃষ্ণপক্ষের রাত, চাঁদ উঠবে অনেক দেরিতে ।
সন্ধ্যার অন্ধকার যত ঘন হয়ে আসছে তত বেশি নক্ষত্র ফুটে উঠছে । এক সময় গোটা আকাশ ভরে ফুটে উঠল অসংখ্য নক্ষত্র । আর দেখা গেল আস্বচ্ছ শুভ্র মেঘের মতন একটা জিনিস, দক্ষিণে ধনুরাশি (Sagittarius) থেকে উত্তরে রাজহংস (Cygnus)পর্যন্ত ছড়ানো । একেই বলে ছায়াপথ । ইংরেজিতে Milky Way । এটা আমাদের গ্যালাক্সি, মেঘের মতন যেটা দেখা যাচ্ছে ওটা গ্যালাক্সির একটা অংশ । এই গ্যালাক্সির মধ্যেই আমরা ( মানে আমাদের সৌরজগৎ) আছি ।
প্রথমে মানুষ মনে করতো ওই মেঘের মতন অংশটা বুঝি ধূলো, গ্যাস ইত্যাদি দিয়ে তৈরী একটা নেবুলা । কিন্তু গ্যালিলিও যখন প্রথম টেলিস্কোপ দিয়ে আকাশ পর্যবেক্ষণ শুরু করলেন তখন দেখলেন ও তো ধূলো বা গ্যাস নয় ! ওগুলো নক্ষত্র । লক্ষ লক্ষ নক্ষত্র যেন মিহিন বালিচূর্ণের মতন ছড়ানো । গ্যালিলিওর কথা শুনে প্রথমে তো লোকে বিশ্বাসই করতে চায় নি । টেলিস্কোপে দেখে তবে বিশ্বাস করল । হ্যাঁ, ওগুলো নক্ষত্র । অসংখ্য নক্ষত্র ওদিকে ঘনসন্নিবিষ্ট হয়ে আছে ।

তারপরে যত দিন যেতে লাগল, বিজ্ঞানীরা তত উন্নততর টেলিস্কোপ বানিয়ে বানিয়ে সেই টেলিস্কোপের সহায়তায় পর্যবেক্ষণ করতে লাগলেন ছায়াপথকে । দিনের পর দিন নতুন নতুন সব আশ্চর্য তথ্য আসতে লাগল সেইসব পর্যবেক্ষণ থেকে ।


ছবি: পৃথিবী থেকে দৃশ্যমান ছায়াপথের অংশ । এমনিতে শুভ্র মেঘের মতন দেখতে যে জিনিস, টেলিস্কোপের সহায়তায় দেখলে সেখানে অসংখ্য নক্ষত্র দেখা যাবে । ( চিত্র সৌজন্য : Hubble Space Telescope )

এখন আমরা জানি আমাদের এই ছায়াপথ গ্যালাক্সিটা এক বিশাল চাকতি আকারের ঘূর্ণী গ্যালাক্সি । বহু নক্ষত্র (গ্রহ-উপগ্রহ-গ্রহাণু ইত্যাদি সমেত), নেবুলা, ধূলো, গ্যাস, গ্লোবুলার ক্লাস্টার, পালসার, ডার্ক ম্যাটার ইত্যাদি সবকিছু নিয়ে তৈরী এক বিশাল জগৎ, নিজের কেন্দ্র ঘিরে পাক খাচ্ছে ।
আমাদের সূর্য এক মাঝারি নক্ষত্র, আছে ছায়াপথের কেন্দ্র থেকে পঁচিশ হাজার আলোকবর্ষ দূরে । সূর্য ঘিরে এই যে বুধ, শুক্র, পৃথিবী, মঙ্গল, বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস, নেপচুন আর তারপরে কাইপার বেল্ট, তারও পরে উর্ট ক্লাউড- এইসব নিয়ে যে সৌরজগৎ, সবটাই ছোট্টো একটা ব্যাপার যদি ছায়াপথ গ্যালাক্সির আকার চিন্তা করি ।


ছবি: আমাদের ছায়াপথ ও আমাদের সূর্য (চিত্র সৌজন্য :NASA)

ছায়াপথের যে মূল চাকতি, সেটার একপ্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত এক লক্ষ আলোকবর্ষ আকারের, অর্থাৎ একপ্রান্ত থেকে আলো দৌড়ে যেতে শুরু করলে অন্যপ্রান্তে পৌঁছবে এক লক্ষ বছর পরে । আলোর চেয়ে বেশি তাড়াতাড়ি আর কিছু যেতে পারে না স্থানকালের ভিতর দিয়ে । এ তো মাত্র চেনাজানা ব্যারিয়নিক পদার্থের অংশটুকু, তার বাইরে আছে ডার্ক ম্যাটারের অংশ, সেটা আরো বড় ।
এই যে বিরাট অভাবনীয় আকারের গ্যালাক্সিটা আমাদের, সেটা কিন্তু ব্যতিক্রম নয়, নিতান্তই নিয়ম । আমাদের এই ছায়াপথের মতন (এবং এর থেকে আকারে আরো অনেক বড়োও) অসংখ্য গ্যালাক্সি আছে মহাবিশ্বে ।
এই যে বিশাল আমাদের ছায়াপথ, এর কেন্দ্রস্থলটি বড়ই রহস্যময় । অতি বিশাল পরিমাণ ভরের এই কেন্দ্র, কিন্তু আকারে বেশি বড় নয় । চল্লিশ লক্ষ সৌরভর ( চল্লিশ লক্ষ সূর্যের ভরের সমান ভর ) এঁটে আছে বুধের কক্ষপথের আকারের চেয়েও ছোটো একটা জায়্গায় । এরকম হতে গেলে স্থানকালে এতই বক্রতা দেখা দেয়, যে সেই বক্রতার আওতায় পড়ে হুড়হুড় করে সব বস্তু তলিয়ে যায় । একেবারে কেন্দ্রবিন্দুতে তৈরী হয় অদ্বৈতবিন্দু ( সিঙ্গুলারিটি )।
সিঙ্গুলরিটিতে স্থানকালের বক্রতা অসীম । সেখানে আমাদের জানা কোনো তত্ত্বই খাটে না, সাধারণ আপেক্ষিকতা ওখানে আর কাজ করে না । কিন্তু এই অদ্বৈতবিন্দু ঘিরে আছে যে স্থানকাল, সেখানে বক্রতা অসীম না, সসীম । এই স্থানকালের যে সীমানাসূচক তল, তাকে বলে ইভেন্ট হরাইজন বা ঘটনা-দিগন্ত । বাইরে থেকে ( যেখানে স্থানকালের বক্রতা সাধারণ ) মহাকর্ষের টানে পড়ে এই ঘটনা-দিগন্ত পার হয়ে ওপাশে পড়ে গেলে আলোও আর ছিটকে বেরোতে পারে না, হু হু করে ছুটে যায় কেন্দ্রে, তলিয়ে যায় অদ্বৈতবিন্দুতে (সিঙ্গুলারিটিতে)। তাই এই ঘটনাদিগন্ত দিয়ে ঘেরা বক্র স্থানকালটিকে বলে ব্ল্যাক হোল, কৃষ্ণগহ্বর । ঘটনা দিগন্ত হল আমাদের সাধারণ স্থানকাল আর ব্ল্যাকহোলের ওই ভীষণ বক্র স্থানকালের বিভাজনতল ।
আমাদের ছায়াপথের কেন্দ্রের ব্ল্যাকহোলটিকে সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাকহোল নামক শ্রেণীতে ফেলা হয় এত বেশি ভরের জন্য । এমনিতে ভারী নক্ষত্র তার জীবনের শেষে জ্বালানি ফুরিয়ে মহাকর্ষের চাপে গুটিয়ে গিয়ে যে ব্ল্যাক হোল তৈরী করে তাদের বলে স্টেলার ব্ল্যাক হোল, এদের আকার তিন কি চার সৌরভরের মতন । আগে এদের কথাই শুধু জানা ছিল । তারপরে দেখা গেল বড় বড় গ্যালাক্সির কেন্দ্রে কেন্দ্রে মারাত্মক বেশি বেশি ভরের ব্ল্যাকহোল আছে, কারুর কারুর ভর চল্লিশ কি পঞ্চাশ লক্ষ সৌরভরের সমান, কারুর কারুর ভর বিলিয়ন (একশো কোটি) সূর্যের ভরের সমান । কোনো কোনো এমন গ্যালাক্সিও আছে যাদের কেন্দ্রের ব্ল্যাকহোলের ভর চল্লিশ কি পঞ্চাশ বিলিয়ন সৌরভর । এদের বলা হয় সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাক হোল বা বিশালভরের কৃষ্ণগহ্বর ।
আমাদের ছায়াপথের কেন্দ্রের ব্ল্যাকহোলটির নাম স্যাজিটারিয়াস এ স্টার । কেমন করে কীরকম পর্যবেক্ষণের দ্বারা এই ব্ল্যাক হোলের কথা জানা গেল সে এক দারুণ কৌতূহলোদ্দীপক কাহিনি ।


ছবি: আমাদের ছায়াপথের কেন্দ্রস্থল, স্যাজিটারিয়াস এ স্টার, এক্স-রে আর অবলোহিত (Infrared ) আলোয় তোলা ছবি । (চিত্র সৌজন্য : NASA)

এই কৌতূহলোদ্দীপক কাহিনির শুরুতেই আছেন কার্ল জ্যানস্কি । এঁকে বলা হয় রেডিও জ্যোতির্বিদ্যার সূচনাকারী । ইনি নিজের হাতে রেডিও-টেলিস্কোপ বানিয়ে সেটার সাহায্যে মহাকাশ পর্যবেক্ষণ শুরু করেন । পর্যবেক্ষণ করতে করতে ১৯৩১ সালের আগস্ট মাসে দেখতে পান, আমাদের ছায়াপথের কেন্দ্রের দিক থেকে জোরালো রেডিও তরঙ্গ আসছে । উৎসস্থল হল ছায়াপথের কেন্দ্রস্থ কোনো বস্তু । এই রেডিওতরঙ্গের উৎসের নাম দেওয়া হল স্যাজিটারিয়াস এ (Sagittarius A)
পরে আরো গভীর পর্যবেক্ষণে ধরা পড়ল একটা নয়, এই স্যাজিটারিয়াস এ হল বেশ কয়েকটি রেডিও-উৎসের সম্মেলন । এদের মধ্যে সবচেয়ে উজ্জ্বল, সবচেয়ে শক্তিশালী উৎসটি খুবই আঁটোসাটো, কম্প্যাক্ট । এ অন্যগুলোর থেকে ক্ষুদ্রতর আকারের অথচ বেশি শক্তি বিকিরণ করছে । ব্রুস ব্যালিক আর রবার্ট ব্রাউন নামে দুই জ্যোতির্বিদ খুব ভালো করে উন্নত কায়্দায় রেডিও টেলিস্কোপ দিয়ে পর্যবেক্ষণ করলেন একে, অনেক হিসেবপত্র করলেন পর্যবেক্ষণে পাওয়া মাপজোকগুলো নিয়ে ।

হিসেবপত্র করে যা ফলাফল পেলেন তাতে তো তাঁদের চক্ষু চড়কগাছ । অবিশ্বাস্য সব ব্যাপারের দিকে ইঙ্গিত করছিল এইসব ফলাফল । একটা ক্ষুদ্র আয়তনের মধ্যে অবিশ্বাস্য বিশাল পরিমাণ ভর ! এ কী করে হয়? ব্রাউন ভাবলেন হিসেবে গন্ডগোল হয়েছে হয়তো । তবুও পুরোপুরি ফেলেও দিতে পারলেন না । এত গুরুত্বপূর্ণ ও শক্তিশালী উজ্জ্বল উৎসটির নতুন নাম দেওয়া দরকার, তাই তিনি উৎসটির নাম দিলেন স্যাজিটারিয়াস এ স্টার ( Sagittarius A*) । তখন সবে ১৯৮২ সাল, তখনও স্টেলার ব্ল্যাকহোলের ধারণাই সবাই ঠিকঠাক গ্রহণ করেন নি ।

এই লেখায় এই তো একটু আগেই স্টেলার ব্ল্যাকহোলের কথা এসেছিল । এখন একটু বিস্তারিত জানা যাক এরা কীভাবে তৈরী হয় । সূর্যের তুলনায় বেশ কয়েকগুণ বেশি ভরের নক্ষত্র তার জীবনের শেষে কেন্দ্রের সব জ্বালানি ফুরিয়ে ফেলে । নক্ষত্রের কেন্দ্রাঞ্চলটি তখন লোহার পরমাণু ( গোটা পরমাণু নয়, নিউক্লিয়াস ) দিয়ে ভর্তি, এরা আর নিউক্লিয়ার-ফিউশন ঘটিয়ে শক্তি উৎপাদন করতে পারে না । যেই মুহূর্তে কেন্দ্রাঞ্চলে নিউক্লিয়ার-ফিউশন বন্ধ হয়, সেই মুহূর্তে নক্ষত্রটি ফেটে পড়ে প্রচন্ড বিস্ফোরণে । এই মারাত্মক নক্ষত্র বিস্ফোরণকে বলে সুপারনোভা বিস্ফোরণ ।
এই বিস্ফোরণে নক্ষত্রের উপরের অংশগুলো সব ছিটকে ছিটকে দূরে হটে যায়, কিন্তু ভারী কেন্দ্রাঞ্চলটি (যদি এর ভর একটা নির্দিষ্ট সীমার বেশি হয়, এই সীমা হল ৩ সৌরভরের কাছাকাছি) নিজের মহাকর্ষের চাপে নিজেই চুপসে যায়, কারণ মহাকর্ষের প্রচন্ড টান মোকাবিলা করার মতন বহির্মুখী চাপ আর থাকে না এর মধ্যে । নিউক্লিয়ার ফিউশন নেই, তাই শক্তি বিকিরণের বহির্মুখী চাপ নেই । কিন্তু বিশাল ভর রয়েছে, তাই মহাকর্ষের কেন্দ্রাভিমুখী টান রয়েছে । সেই টানে গুটিয়ে গুটিয়ে ছোট্টো আকারের হয়ে যায় এ ।

যখন সেই আকার একটা নির্দিষ্ট সীমা – Schwarzschild radius অতিক্রম করে, তখন এটা পরিণত হয় কৃষ্ণগহ্বরে । এর টান এত প্রচন্ড হয় যে আলো পর্যন্ত এর থেকে ছুটে বেরোতে পারে না । এই সোয়ার্জচাইল্ড ব্যাসার্ধই হল কৃষ্ণগহ্বরের সীমা, একে বলা হয় কৃষ্ণগহ্বরের ঘটনা দিগন্ত (Event Horizon), যেকোনো বস্তু এই ঘটনাদিগন্ত পার হয়ে কৃষ্ণগহ্বরের মধ্যে পড়ে গেলে আর ফিরে আসতে পারে না, হু হু করে সোজা কেন্দ্রবিন্দুর সিঙ্গুলারিটিতে চলে যায়, সেখানে হারিয়ে যায় । আগেই বলা হয়েছে সেখানে স্থানকালের বক্রতা অসীম, তাই আমাদের জানা কোনো তত্ত্ব দিয়েই সেখানে কী হচ্ছে বোঝার উপায় নেই ।

এই ধরণের স্টেলার ব্ল্যাকহোলের বাস্তবতাই গ্রহণ করতে অনেক সময় লেগেছে মানুষের । যদিও গণিত আর পদার্থবিদ্যা বারে বারেই দেখিয়েছে এরকম হতে পারে, কিন্তু তাত্ত্বিকভাবে দেখালে কী হবে? বাস্তবে এমন সৃষ্টিছাড়া জিনিস যে হতে পারে সে কি মেনে নেওয়া সোজা কথা? তারপর যখন সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাকহোলের ব্যাপারেও কথা উঠতে লাগল পর্যবেক্ষণে পাওয়া তথ্যগুলো থেকে, তখন অবস্থা আরো ঘোরালো হয়ে উঠল ।
কিন্তু নতুন নতুন যত টেকনিক আসতে লাগল মহাবিশ্ব পর্যবেক্ষণে, ততই আরো বেশি বেশি সাক্ষ্য পাওয়া যেতে লাগল যে ঐ স্যাজিটারিয়াস এ স্টার এক বিশালভরের কৃষ্ণগহ্বর । বিপুল পরিমাণ ভর ক্ষুদ্র স্থানে সন্নিবিষ্ট হয়ে স্থানকালকে বাঁকিয়েচুরিয়ে করে ফেলেছে ব্ল্যাকহোল । তীব্র মহাকর্ষীয় আকর্ষণে এর ঘটনা দিগন্ত পার হয়ে নিরন্তর নতুন নতুন বস্তু হারিয়ে যাচ্ছে এর মধ্যে, ঐসব ভর যোগ হয়ে হয়ে আরো ভর বাড়িয়ে তুলছে এর ।


ছবি: শিল্পীর কল্পনায় বিশালভরের এক কৃষ্ণগহ্বর, যেমন আছে আমাদের ছায়াপথের কেন্দ্রে (চিত্র সৌজন্য :NASA/JPL Caltech)

এই স্যাজিটারিয়াস এ স্টার ঘিরে নানা কক্ষপথে ( অবশ্যই ঘটনা দিগন্তের থেকে অনেক দূরের কক্ষপথে ) বিশাল বিশাল সব নক্ষত্রেরা ছুটছে । ১৯৯২ সাল থেকে আরম্ভ করে একদল বিজ্ঞানী দীর্ঘ ষোলো বছর ধরে পর্যবেক্ষণ করে চললেন এই পরিক্রমাকারী নক্ষত্রদের । পর্যবেক্ষণে পাওয়া তথ্য থেকে নক্ষত্রদের কক্ষপথের আকার আর নক্ষত্রগুলো কত জোরে ছুটছে কক্ষপথ ধরে, তা জানা গেল । সেই থেকে হিসেব করে পাওয়া গেল নিশ্চিতভাবেই স্যাজিটারিয়াস এ স্টার এর ভর চল্লিশ লক্ষ সৌরভরের কম না । এর আগে অন্যান্য পর্যবেক্ষণ থেকে আনুমানিক ভর পাওয়া গিয়েছিল, কিন্তু এই ষোলো বছরের প্রোজেক্টের সহায়তায় একেবারে জোরালোভাবে নিশ্চিত মান পাওয়া গেল । এই গবেষণার ফলাফল প্রকাশিত হয় ২০০৮ সালে । সম্প্রতি বিশ্ব জুড়ে নানা জায়গায় বসানো আটটি বড়ো বড়ো রেডিও দূরবীণের সহায়তায় এই স্যাজিটারিয়াস এ স্টারের একটি ইমেজ তৈরী করা হয়েছে ।

এই মাত্র কিছুদিন আগে খবর এল এই স্যাজিটারিয়াস এ স্টার স্বাভাবিকের তুলনায় ৭৫ গুণ বেশি উজ্জ্বল হয়ে হয়ে উঠেছে । উজ্জ্বলতা বেড়েছে খুব দ্রুত, মাত্র ঘন্টাদুয়েকের মধ্যে স্বাভাবিকের তুলনায় ৭৫ গুণ বেড়ে উঠেছে । ঠিক কী কারণে এরকম ঘটল, তা এখনও নিশ্চিতভাবে জানা যায় নি । তবে পুরোদমে গবেষণা চলছে সংগৃহীত তথ্যের উপরে ভিত্তি করে ।
শরতের পরিষ্কার আকাশে হাল্কা আস্বচ্ছ শুভ্র মেঘের মতন যে ছায়াপথ দেখা যায় দক্ষিণে ধনুরাশি থেকে উত্তরে সিগনাস পর্যন্ত ছড়ানো, ঐ অপরূপ সুন্দর ছায়াপথ দেখে কি কল্পনাও করা যায় কী আশ্চর্য আশ্চর্য সব ব্যাপার চলছে ওখানে?

References:
1. Melia, Fulvio (2003). The Black Hole at the Center of our Galaxy. Princeton: Princeton University Press. ISBN 978-0691095059.
2. Backer, D. C. & Sramek, R. A. (20 October 1999). "Proper Motion of the Compact, Nonthermal Radio Source in the Galactic Center, Sagittarius A*". The Astrophysical Journal. 524 (2): 805–815. arXiv:astro-ph/9906048
3. Doeleman, Sheperd; et al. (4 September 2008). "Event-horizon-scale structure in the supermassive black hole candidate at the Galactic Centre". Nature. 455 (7209): 78–80. arXiv:0809.2442. Bibcode:2008Natur.455…78D
4. Eckart, A.; Schödel, R.; Straubmeier, C. (2005). The Black Hole at the Center of the Milky Way. London: Imperial College Press
5. Eisenhauer, F.; et al. (23 October 2003). "A Geometric Determination of the Distance to the Galactic Center". The Astrophysical Journal. 597 (2): L121–L124. arXiv:astro-ph/0306220
6. Ghez, A. M.; et al. (12 March 2003). "The First Measurement of Spectral Lines in a Short-Period Star Bound to the Galaxy's Central Black Hole: A Paradox of Youth". The Astrophysical Journal. 586 (2): L127–L131. arXiv:astro-ph/0302299
7. Ghez, A. M.; et al. (December 2008). "Measuring Distance and Properties of the Milky Way's Central Supermassive Black Hole with Stellar Orbits". Astrophysical Journal. 689 (2): 1044–1062. arXiv:0808.2870
8. Gillessen, Stefan; et al. (23 February 2009). "Monitoring stellar orbits around the Massive Black Hole in the Galactic Center". The Astrophysical Journal. 692 (2): 1075–1109. arXiv:0810.4674
9. Melia, Fulvio (2007). The Galactic Supermassive Black Hole. Princeton: Princeton University Press. ISBN 978-0-691-13129-0
10. Osterbrock, Donald E. & Ferland, Gary J. (2006). Astrophysics of Gaseous Nebulae and Active Galactic Nuclei (2nd ed.). University Science Books. ISBN 978-1-891389-34-4