ইউক্রেইনের সংঘাতপূর্ণ এলাকায় বিধ্বস্ত মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের এমএইচ-১৭ বিমানের ২৯৮ জন আরোহীর সবাই নিহত হয়েছেন।
Published : 18 Jul 2014, 01:14 PM
বৃহস্পতিবার রুশ সীমান্তের কাছে পূর্ব ইউক্রেইনের বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকায় বোয়িং নির্মিত ৭৭৭ বিমানটি বিধ্বস্ত হয়।
বিমানটিতে ২৮৩ জন যাত্রী ও ১৫ জন ক্রু ছিলেন বলে শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্স।
বিমানটি নেদারল্যান্ডসের রাজধানী আমস্টারডাম থেকে মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুর যাচ্ছিল।
বিমানটির নিহত যাত্রীদের মধ্যে ১৫৪ জন নেদারল্যান্ডসের নাগরিক বলে জানিয়েছে দেশটির সরকার। নাগরিক নিহতের ঘটনায় এক দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করেছে নেদারল্যান্ডস।
এক বিবৃতিতে মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্স জানিয়েছে, নিহত বাকী যাত্রীদের মধ্যে ৪৩ জন (১৫ জন ক্রুসহ) মালয়েশীয়, ২৭ জন অস্ট্রেলীয়, ১২ জন ইন্দোনেশীয়, ৯ জন ব্রিটিশ, ৪ জন জার্মান, ৪ জন বেলজিয়ান, ৩ জন ফিলিপিনো এবং ১ জন কানাডীয়।
নিহত অপর ৪১ জন যাত্রীর জাতীয় পরিচয় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত শনাক্ত করা যায়নি।
শুক্রবার ভোররাতে কুয়ালামপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে মালয়েশীয় প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক বিমান বিধ্বস্তের এই ঘটনাকে “অত্যন্ত শোচনীয়” বলে বর্ণনা করেছেন।
এই বিপর্যয়ের দিনটিকে তিনি “শোচনীয় বছরের” আর একটি “শোচনীয় দিন” বলে অভিহিত করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেইন দাবি করেছে, রুশ নির্মিত ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে বিমানটিকে ভূপাতিত করা হয়েছে।
ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে বিমানটিকে ভূপাতিত করার জন্য গৃহবিবাদে জড়িত ইউক্রেইনের সরকারি ও বিদ্রোহী পক্ষ পরস্পরকে দায়ী করেছে।
যে ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে বিমানটি ভূপাতিত হয়েছে তা রাশিয়া সমর্থিত ইউক্রেইনীয় বিদ্রোহীরা ছুঁড়েছে বলে জোরালো সন্দেহ প্রকাশ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দেশটির এক কর্মকর্তা বলেছেন, ক্ষেপণাস্ত্রটি ইউক্রেইনীয় সরকারি বাহিনী ছুঁড়েছে এমন কোনো প্রমাণ নেই। দেশটির অপর এক কর্মকর্তা বলেছেন, ক্ষেপণাস্ত্রটির উৎস এখনও পরিষ্কার নয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, “যাত্রীবাহী বিমানটিকে সম্ভবত আকাশেই উড়িয়ে দেয়া হয়েছে।”
ইউক্রেইন দাবি করেছে, রুশ সামরিক গোয়েন্দাদের সহায়তায় রুশপন্থী বিদ্রোহীরা সোভিয়েত আমলে নির্মিত ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য দীর্ঘপাল্লার এসএ-১১ ক্ষেপণাস্ত্রটি ছুঁড়েছে।
অপরদিকে বিদ্রোহী দোনেস্ক পিপলস রিপাবলিক এর নেতারা এ ঘটনার সঙ্গে তাদের জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে দাবি করেছেন, ইউক্রেইনীয় বিমানবাহিনীর একটি জঙ্গি বিমান মালয়েশীয় বিমানটিকে ভূপাতিত করেছে।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বিমান বিধ্বস্তের ঘটনাটিকে “শোচনীয়” বলে মন্তব্য করেছেন। তবে বিমানটিকে কারা ভূপাতিত করেছে, সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।
মাত্র চার মাস আগে, ৮ মার্চ মালয়েশিয়া এয়ারলাইনসের আরেকটি বোয়িং ৭৭৭ উড়োজাহাজ ২৩৯ জন যাত্রী নিয়ে মাঝ আকাশে উধাও হয়ে যায়। ব্যাপক আন্তর্জাতিক চেষ্টার পরও বিমানটির কোনো হদিস এখনো পাওয়া যায়নি।