শুক্রবার বিকালে বরগুনার পুলিশ সুপার বিজয় বসাক নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরসীতা এলাকায় শ্বশুরবাড়ি থেকে সুমন বিশ্বাসকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশ সদরদপ্তরের এলআইসি শাখা ও লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশের সহযোগিতায় বৃহস্পতিবার রাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে এসপি বসাক জানান।
এর আগে এ মামলার আরও দুই আসামিকে এবং তাদের পালানোর দুই সহায়তাকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রামগতি থানার ওসি ইকবাল হোসেন জানান, চরসীতা এলাকায় শ্বশুরবাড়িতে সুমন বিশ্বাস অবস্থান করছিল খবর পেয়ে পুলিশ অভিযান চালায়।
পরে তাকে বরগুনা বরগুনা থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সুমন বিশ্বাস বরগুনার বেতাগী উপজেলার হোছনাবাদ এলাকার বাসিন্দা।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, গত ১৭ অগাস্ট বৃহস্পতিবার ছুটির পর বেতাগীর উত্তর করুনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওই শিক্ষকা ও তার স্বামী স্কুলে বসে কথা বলছিলেন। ওই সময় আসামিরা স্কুলে প্রবেশ করতে চাইলে ওই শিক্ষিকা ভয়ে প্রধান দরজায় তালা লাগিয়ে দেন। এ সময় তারা তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে তার স্বামীকে এলোপাতাড়ি মারধর করে স্কুলের একটি কক্ষে আটকে রেখে শিক্ষিকাকে ধর্ষণ করে।
ঘটনার রাতেই ছয় জনকে আসামি করে বেতাগী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন ওই শিক্ষিকা।
আসামিরা হলেন হোসনাবাদ ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামের হিরন বিশ্বাসের ছেলে সুমন বিশ্বাস, আব্দুল বারেক মিয়ার ছেলে মো. রাসেল, আ. কুদ্দুস কাজীর ছেলে সুমন কাজী, মো. সুলতান হোসেনের ছেলে মেহেদী হাসান রবিউল, আ. রহমানের ছেলে মো. হাসান ও আবদুর রহমান হাওলাদারের ছেলে মো. জুয়েল।
এসপি বিজয় বসাক জানান, সুমন বিশ্বাসের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বেতাগী থেকে ওই শিক্ষিকা ও তার স্বামীর ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছে পুলিশ।
এর আগে এ মামলার ৬ নম্বর আসামি মেহেদী হাসান ওরফে রবিউল, ৩ নম্বর আসামি মো. জুয়েল গ্রেপ্তার করা হয়। এছাড়া আসামিদের পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করার অভিযোগে আব্দুল হাকিম হাওলাদার ও কুদ্দুছ কাজি নামের আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে পুলিশ সুপার জানান।
স্থানীয় গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সুমন বিশ্বাস এলাকায় ‘রামদা সুমন’ নামে পরিচিত। স্থানীয় এক প্রভাবশালী ইউপি সদস্যের ছত্রছায়ায় এলাকায় ১০-১২ জনের একটি সন্ত্রাসী বাহিনী রয়েছে সুমনের। এ বাহিনীর প্রধান হিসেবে সুমন বিশ্বাস ওরফে রামদা সুমন দীর্ঘদিন ধরে মাদক বাণিজ্য, চাঁদাবাজি ও বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালিয়ে আসছিল।