‘সেনা নির্যাতনে’ মৃত্যুর প্রতিবাদে কর্মসূচি পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের

সেনা সদস্যদের নির্যাতনে রাঙামাটিতে সংগঠনের এক নেতার মৃত্যুর অভিযোগ তুলে অবরোধ, অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি)।

বৃহস্পতিবার পাহাড়ি ছাত্র সংগঠনটি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রাঙামাটির নানিয়ারচর থানা শাখার সাধারণ সম্পাদক রমেল চাকমার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এই কর্মসূচি দেয়।

এদিকে বিভিন্ন মামলার আসামি হিসেবে রমেলকে আটকের কথা স্বীকার করলেও নির্যাতনের অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে সেনা কর্তৃপক্ষ।

রমেল চাকমা ‘হত্যার’ প্রতিবাদে আগামী ২৩ এপ্রিল রাঙামাটি জেলায় সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধ, ২৪ এপ্রিল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান ধর্মঘট ও ২৫ এপ্রিল নান্যাচর বাজার বয়কটের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে পিসিপি।  

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ৫ এপ্রিল রমেলকে সেনাসদস্যরা তুলে নিয়ে নির্যাতন চালায়।

“আটক করে নান্যাচর জোনে নিয়ে দিনভর নির্যাতন চালান। এতে রমেল গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে সেনাসদস্যরা তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে সেনা নজরদারি ও পুলিশ প্রহরায় দুই সপ্তাহ চিকিৎসাধীন থাকার পর বুধবার দুপুরে তার মৃত্যু হয়।”

রমেল নানিয়ারচর সরকারি কলেজ থেকে এ বছর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছিলেন।

রমেলের মৃত্যুর বিষয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের জিজ্ঞাসায় আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ রাশিদুল হাসান বলেন, একটি ট্রাক পোড়ানো ও দুটি বাস লুটের মামলার ওই আসামিকে গত ৫ এপ্রিল আটক করা হয়েছিল। সেদিনই তাকে নানিয়ারচর থানা পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়।

“পুলিশের হেফাজতেই সে চিকিৎসাধীন ছিল। সেনাবাহিনীর নির্যাতনে মৃত্যুর বিষয়টি ঠিক নয়, এটি ভিত্তিহীন অভিযোগ,” বলেন এই সেনা কর্মকর্তা। 

পিসিপি রমেল চাকমার মৃত্যুর জন্য দায়ী করে সেনাবাহিনীর নান্যাচর জোন কমান্ডার মো. বাহলুল আলম, মেজর তানভীরসহ অন্যদের শাস্তি দাবি করেছে।

ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত, রমেলের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে ধরপাকড়, নির্যাতন ও তল্লাশির নামে হয়রানি বন্ধ করার দাবিও জানিয়েছে সংগঠনটি।

পিসিপির কর্মসূচি ও দাবির প্রতি গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের পাঁচ নারীসংগঠন- হিল উইমেন্স ফেডারেশন, পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘ, ঘিলাছড়ি নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি, সাজেক নারী সমাজ ও নারী আত্মরক্ষা কমিটি সমর্থন জানিয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

এদিকে রমেলের মৃত্যুর খবর এলাকায় পৌঁছলে পিসিপির উদ্যোগে বিভিন্ন উপজেলায় ছাত্র-ছাত্রীরা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন এবং ‘রমেল হত্যা প্রতিবাদ কমিটি’ গঠন করা হয় বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।