মাদারীপুরে দুই স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলার বিচার এক বছরেও শুরু হয়নি।
Published : 13 Aug 2016, 11:33 AM
গত বছর স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে মাদারীপুরের মস্তফাপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী সুমাইয়া ও হ্যাপীকে ধর্ষণ শেষে হত্যার অভিযোগে মামলা করে তাদের পরিবার।
এখনও এ মামলায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয়নি।
তদন্ত কর্মকর্তার ভাষ্য, ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদন না পাওয়ায় তদন্ত রিপোর্ট দিতে দেরি হচ্ছে।
এদিকে, মামলার আসামিরা জামিনে মুক্ত হয়ে নিহতদের দুই পরিবারের সদস্যদের হুমকি দিচ্ছে বলেও অভিযোগ স্বজনদের।
এ ঘটনায় সদর থানায় সাত জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা ও মাদারীপুর নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে ধর্ষণ শেষে বিষ খাইয়ে হত্যার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়।
এ ঘটনায় প্রথমে পুলিশ তদন্তের দায়িত্ব পায়। পরে অধিকতর তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডি। চার বার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু এখনও অভিযোগপত্র দেওয়া হয়নি।
প্রধান আসামি রানা নাগাসীসহ চার জন গ্রেপ্তার হলেও তারা জামিনে বেরিয়ে আসে।
নিহত সুমাইয়ার বাবা বিল্লাল শিকদার বলেন, “আমার মেয়েকে হত্যার এক বছর পার হলেও চার্জশিট দেয়নি পুলিশ। শুরু থেকেই পুলিশ এই হত্যাকাণ্ডকে দেয়নি।
“এখন সিআইডিতে গেছে, তবে সঠিক বিচার পাবও কিনা জানা নেই। আমি এমন বিচার দাবি করি, যেন কোনো বাবা তার মেয়েদের স্কুলে দিতে ভয় না পায়।”
“আমি পুলিশকে বিষয়টি বললেও কোনো কাজ হয়নি। এখন আমরাই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।”
বর্তমানে মামলার তদন্তের দায়িত্বে থাকা সিআইডি পুলিশ পরিদর্শক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে হ্যাপী ও সুমাইয়ার লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে পুনরায় ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট।
“চলতি বছর ২৭ জানুয়ারি লাশ উত্তোলন করা হয়। পরে ফরেনসিক রিপোর্টের জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এখনও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ফরেনসিক রিপোর্ট আমাদের হাতে আসেনি, যে কারণে তদন্তে বিলম্ব হচ্ছে।”
এ ব্যাপারে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. খবিরুল ইসলাম বলেন, দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত ও ভিসেরা রিপোর্টের জন্য নমুনা সংগ্রহের সময় তারা লাশ দুটি গলিত অবস্থায় পান। হাড় ও মাংস আলাদা হয়ে যাওয়ায় হত্যাকাণ্ডের কারণ সম্পর্কিত কোনো মন্তব্য করা সম্ভব হয়নি।
“সম্প্রতি ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের পক্ষ থেকে রিপোর্ট সংশ্লিষ্ট থানা ও আদালতে রাষ্ট্রীয় ডাকে পাঠানো হয়েছে।
প্রতিবেদন পাঠানোর বিলম্বের বিষয়ে বলেন, প্রথম দফায় রিপোর্টটি হাতে পাওয়ার পর দেখা যায় সেখানে তারিখ সংক্রান্ত একটি ভুল রয়েছে। সেটি সংশোধনের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানোর পর পুনরায় তাদের কাছে আসে।