রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক এ এফ এম রেজাউল করিম সিদ্দিকীকে হত্যার ঘটনায় মামলা করেছেন তার ছেলে।
Published : 23 Apr 2016, 06:26 PM
এদিকে মামলাটির তদন্ত তদারকির জন্য ছয় সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে রাজশাহী মহানগর পুলিশ (আরএমপি)।
নগরীর বোয়ালিয়া থানার ওসি শাহাদত হোসেন বলেন, শনিবার বিকাল ৪টর দিকে রিয়াসাত ইমতিয়াজ সৌরভ হোসেন বাদী হয়ে বোয়ালিয়া থানায় হত্যা মামলাটি দায়ের করেছেন।
মামলায় অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
মামলাটি বোয়ালিয়া মডেল থানায় দায়ের করা হলেও সেটি মহানগর গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানান আরএমপির বোয়ালিয়া জোনের সহকারী কমিশনার ইবনে গোলাম সাকলায়েন।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, মামলার তদন্ত তদারিকর জন্য আরএমপির পক্ষ থেকে মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার সরদার তমিজ উদ্দিন আহমদকে প্রধান করে ছয় সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এতে আরএমপির উপ-কমিশনার (পশ্চিম) একেএম নাহিদুল ইসলাম, বোয়ালিয়া জোনের সহকারী কমিশনার ইবনে গোলাম সাকলায়েন, মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার সুশান্ত চন্দ্র রায়, গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম ও বোয়ালিয়া মডেল থানার ওসি শাহাদত হোসেন খানকে সদস্য করা হয়েছে।
এই কমিটির সদস্যরা মামলার তদন্তের বিভিন্ন তদারিক করবেন বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা সাকলায়েন।
শনিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে রাজশাহী নগরীর বোয়ালিয়ার শালবাগান এলাকায় বাড়ি থেকে মাত্র ৫০ গজ দূরে অধ্যাপক রেজাউলকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।
মোটর সাইকেলে আসা দুই যুবক তাকে কুপিয়ে পালিয়ে যায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের উদ্ধৃত করে জানিয়েছেন বোয়ালিয়া থানার ওসি শাহদাত হোসেন।
শিক্ষকতার পাশাপাশি অধ্যাপক রেজাউল লেখালেখি করতেন, যুক্ত ছিলেন বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গেও। তিনি ‘কোমলগান্ধার’ নামে একটি সাহিত্য পত্রিকার সম্পাদক এবং ‘সুন্দরম’ নামে একটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের উপদেষ্টা ছিলেন।
অতীতে লেখক-প্রকাশক ও ব্লগারদের যেভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয় অধ্যাপক রেজাউলকেও একই কায়দায় হত্যা করা হয়েছে। এ থেকে কোনো জঙ্গিগোষ্ঠী হত্যাকাণ্ডে জড়িত বলে ধারণা করছে পুলিশ।
ইতোমধ্যে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস এ হত্যার দায় স্বীকার করেছে বলে এক টুইটার পোস্টে জানিয়েছে জঙ্গি হুমকি পর্যবেক্ষণকারী ‘সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ’।
গত বছর ঢাকায় ইতালির নাগরিক চেজারে তাভেল্লা এবং রংপুরে জাপানি নাগরিক হোশি কুনিও হত্যা, বগুড়ায় শিয়া মসজিদে এবং ঢাকায় শিয়া সমাবেশে হামলার পরও আইএসের দায় স্বীকারের খবর দিয়েছিল সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ।
এদিকে লাশের ময়নাতদন্তের পর এশার নামাজের পর রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার দরগামারিড়া গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে অধ্যাপক রেজাইলকে দাফন করা হয়েছে।
এর আগে ময়নাতদন্ত শেষে বিকালে নিহতের ভাগ্নে শরিফুল ইসলাম তার মরদেহ বুঝে নেন। মরদেহটি মর্গ থেকে অধ্যাপক শফিউলের নগরীর বোয়ালিয়ার শালবাগান এলাকার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।
সেখানে প্রথম দফায় জানাযার নামাজ শেষে আছরের পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে ইংরেজি বিভাগের এই শিক্ষকের দ্বিতীয় জানাযা হয়।
এরপর সেখানে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে তৃতীয় দফা জানাযার পর লাশ দাফন করা হয়।