আঠারো দিনের মাথায় সুন্দরবনে আবারও আগুন ধরেছে।
Published : 13 Apr 2016, 12:39 PM
বনবিভাগের ধানসাগর স্টেশন কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ বলেন, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের নাংলি ফরেস্ট ক্যাম্পের কাছে আব্দুল্লাহর ছিলা এলাকায় আগুন ধরে।
“বাগেরহাট ও মোরেলগঞ্জের ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিট বেলা সোয়া ২টার দিকে আগুন নেভানোর কাজে যোগ দিয়েছে।”
এর আগে বনবিভাগের কর্মী ও স্থানীয়দের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা শুরু হয় এবং আগুন না ছাড়ানোর জন্য অগ্নিকাণ্ড এলাকার চারপাশে ফায়ার লাইন (লম্বা অগভীর গর্ত) কেটে দেওয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান।
কীভাবে আগুন ধরেছে তা তিনি তাৎক্ষণিকভাবে বলতে পারেননি।
ধানসাগর ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য জাকির হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বনকর্মকর্তা, বনজীবীসহ এখানে আসা অন্যান্য মানুষের অসতর্কতার কারণে বার বার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে।
এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিলে এটি এড়ানো যেত বলে মনে করেন তিনি।
এর আগে গত ২৭ মার্চ একই এলাকায় আগুন ধরেছিল। ওই ঘটনায় গঠিত তিন সদসে্যের কমিটি ৩ এপ্রিল তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়।
ওই সময় বনকর্মকর্তারা বলেছিলেন, সুন্দবনের যে এলাকায় আগুন লেগেছে সেখানে বনের তেমন কোনো মূল্যবান গাছপালা নেই। প্রাথমিকভাবে দেখা যাচ্ছে, এখানে লতাগুল্ম প্রজাতির কিছু গাছ রয়েছে, যেগুলো ‘বলা গাছ’ নামে পরিচিত।
ওইদিন বেশকিছু বলা গাছ পুড়ে গেছে বলেও তারা জানান।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল সুন্দরবনের শরণখোলা ও চাঁদপাই রেঞ্জের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাংশের নিচু এলাকায় বসন্তের শেষ ও গ্রীষ্ম শুরুর মৌসুমে এর আগেও বিভিন্ন সময়ে অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে।
এ সময় তীব্র বাতাসের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে; নিয়ন্ত্রণ করাও কঠিন হয়।
২০১৪ সালে চাঁদপাই রেঞ্জের গুলিশাখালী ক্যাম্পসংলগ্ন পয়ষট্টি ছিলা এলাকায় বনে আগুন লেগে অন্তত পাঁচ একর বনভূমি পুড়ে যায়। ২০১১ সালে ধানসাগর স্টেশনের নাংলি ক্যাম্প এলাকায় পোড়ে দুই একর বনভূমি।
এ মৌসুমে মৌয়ালরা মধু আহরণ করতে বনে আসে। চাক ভাঙার সময় তারা আগুন ব্যবহার করে। সেখান থেকেও বনে আগুন ছড়িয়ে থাকতে পারে।
অবশ্য বনের মধ্যে পচা পাতা থেকে তৈরি হওয়া মিথেনের স্তর জমে গেলে বনজীবীদের বিড়ি-সিগারেটের আগুন থেকেও আগুন লাগার সুযোগ থাকে।