লন্ডনে বহুতল যে ভবনে অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে, সেখানে বসবাসরত একটি বাঙালি পরিবারের খোঁজ মেলেনি ২৪ ঘণ্টা পরও।
Published : 14 Jun 2017, 08:33 PM
অগ্নিকাণ্ডস্থল গ্রেনফেল টাওয়ারের একটি ফ্ল্যাটে কমরু মিয়া, তার স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়ে থাকতেন।
পশ্চিম লন্ডনে ১৯৭৪ সালে নির্মিত ২৪ তলা এই ভবনে দেড়শর মতো আবাসিক ফ্ল্যাট ছিল। ১৪২ নম্বর ফ্ল্যাটে কমরু পরিবার থাকতেন বলে তার স্বজনরা জানান।
মঙ্গলবার রাতে ওই ভবনটিতে আগুন লাগে; তা নেভাতে বুধবার দুপুর গড়িয়ে যায়। কর্তৃপক্ষ ছয়জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে বলেছে, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। আহত অবস্থায় ৭৪ জনকে উদ্ধারের কথাও জানানো হয়েছে।
কমরু মিয়ার ভাতিজা যুক্তরাজ্যেরই চেলসির বাসিন্দা আবদুর রহিম বুধবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আগুন লাগার পর রাতে তার চাচাত বোনের সঙ্গে তার টেলিফোনে কথা হয়েছিল। তখন তিনি বাঁচার আকুতি জানাচ্ছিলেন।
“রাত আড়াইটার দিকে তানিমার (হাসনা বেগম তানিমা) সঙ্গে শেষ কথা হয়। তার আকুতি এখনও আমার কানে ভাসে। সে বলছিল, ‘আমরা সবাই এখন বাথরুমে, আমাদের বের হওয়ার কোনো উপায় নেই, দোয়া করেন আমাদের যেন কষ্টে মৃত্যু না হয়’।”
তানিমার হবু বর ব্রিটিশ যুবক লেস্টারও অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে রাতে গ্রেনফেল টাওয়ারে ছুটে আসেন বলে জানান রহিম।
মৌলভীবাজারের কৈয়াছড়া গ্রামের ৯০ বছর বয়সী কমরু মিয়া বছর খানেক আগে সপরিবারে গ্রেনফেল টাওয়ারে উঠেছিলেন, অগ্নিকাণ্ডে পর ভবনটি এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
কমরুর বড় ছেলে আব্দুল হাকিম তার স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে এনফিল্ডে আলাদা বাসায় থাকেন। অন্য দুই ছেলে আব্দুল হামিদ, আব্দুল হানিফ ও মেয়ে তানিমা বাবা-মার সঙ্গে থাকেন।
তাদের কারও মোবাইল ফোনেই রাত আড়াইটার পর থেকে আর যোগাযোগ করা যাচ্ছে না বলে রহিম জানান।
এরপর রাত আড়াইটা পর্যন্ত তানিমার সঙ্গে কথা বললেও তারপর থেকে তারসহ অন্যদের ফোন বন্ধ পাচ্ছেন তিনি।
হাকিমকে নিয়ে সকাল ৮টা পর্যন্ত ভবনের সামনেই ছিলেন বলে জানান রহিম। পরে দুজনে বিভিন্ন হাসপাতালে গিয়ে খোঁজ নিয়েও স্বজনদের পাননি।
পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছেন জানিয়ে রহিম বলেন, তারাও কোনো খবর দিতে পারেনি। বিভিন্ন কমিউনিটি সেন্টারে খোঁজ করেও কোনো তথ্য মেলেনি।
রহিম বলেন, ওই ভবনটিতে আরও দু-একটি বাঙালি পরিবার থাকেন বলে চাচার কাছে শুনেছিলেন তিনি। তবে কারও সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু তিনি জানেন না।
আবাসিক ওই ভবনের বাসিন্দাদের বেশিরভাগই আরব ও আফ্রিকান।