নাশকতার মামলায় বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার এবং পরোয়ানা নিয়ে অনেকের পালিয়ে বেড়ানোর জন্য দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াই দায়ী বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।
Published : 28 Jun 2015, 12:38 AM
শনিবার শাহবাগে জাতীয় গণগ্রন্থাগার মিলনায়তনে বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল- বাসদ (রেজাউর) আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন।
আওয়ামী লীগ নেতা নাসিম বলেন, “বিএনপির ৫০ হাজার নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়েছে বলে খালেদা জিয়া যে অভিযোগ করেছেন তা গায়েবি। যারা গ্রেপ্তার হয়েছেন তারা ফৌজদারি অপরাধে গ্রেপ্তার হয়েছেন।
“আমরা আশা করি তারা আইনিভাবে বের হয়ে যাবেন। কিন্তু যারা গুরুতর ফৌজদারি মামলায় আটক আছেন তাদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। নেতা-কর্মীদের এমন পরিণতির জন্য তিনিই ( খালেদা জিয়া) দায়ী।”
মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসা বিএনপি-জামায়াত জোট চলতি বছরের প্রথম তিন মাস সারা দেশে লাগাতার অবরোধ-হরতাল পালন করে। সে সময় গাড়িতে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপসহ নাশকতার ঘটনায় ১৩০ জনের বেশি মানুষ নিহত এবং হাজারের বেশি মানুষ আহত হন।
নাশকতার নানা ঘটনায় সারা দেশে বিএনপি-জামায়াত জোট নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা হয়, যাতে গ্রেপ্তার হয়ে অনেকে কারাগারে আছেন। আবার কারও কারও বিরুদ্ধে রয়েছে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা।
বিএনপি তার জোট জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরালো করছে বলে মনে করেন মোহাম্মদ নাসিম।
“সবাই যখন বলছে বিএনপিকে জামায়াত ছাড়তে কিন্তু তারা আরও ঘনিষ্ট হচ্ছে। তারা মনে করে জামায়াতকে ছাড়া তাদের ইপসিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবে না,” বলেন তিনি।
‘জামায়াতে ইসলামীকে না ছাড়লে বিএনপির অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে’ মন্তব্য করে নাসিম বলেন, “বিএনপি বারবার ভুল সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। তাদের ভুলের কারণে আমরা আরও এগিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু তারপরও আমরা বলব- আপনারা এ ভুল থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে গণতান্ত্রিক পথে ফিরে আসুন।”
ওই অনুষ্ঠানে ক্ষমতাসীন জোটের অন্যতম শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, “নির্বাচন কমিশনের কর্মকাণ্ডে আমাদের দল সন্তুষ্ট নয়। তাদের আরও কাজ করতে হবে। সরকার আইন করে তাদের ক্ষমতা দিয়েছে। কিন্তু তারা কাজ না করে সরকারের হাতে ছেড়ে দেয়। যদি তাই হয় তাহলে তাদের ক্ষমতা দেয়া হল কেন?”
নির্বাচন কমিশন সংস্কারে তার দলের পক্ষ থেকে কিছু দাবি তুলে ধরা হবে জানিয়ে বিমানমন্ত্রী মেনন বলেন, “নির্বাচন কমিশনের সংস্কারের অনেক বিষয় আছে সেটা আমরা পেশ করব। বিএনপিরও যদি এমন কোনো দাবি থেকে থাকে তাহলে তারাও পেশ করুক। আমি হলফ করে বলতে পারি শেখ হাসিনা সরকার তাদের নিরাশ করবে না।”
তিনি বলেন, “কয়েকদিন আগে বিএনপির মুখপাত্র সরকারকে সমঝোতার কথা বলছে। আমরা সমঝোতার কথা বলি। তবে তার আগে বিএনপিকে জামায়াত ত্যাগ করতে হবে।
“আজকে জামায়াত নিশ্চুপ রয়েছে, কিন্তু বিভিন্ন নিষিদ্ধ রাজনৈতিক সংগঠনকে দেশে জঙ্গি হামলার প্রেরণা দিচ্ছে। এই নিয়ে তারা তাদের রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করতে চায়।”
বর্তমানে দেশে সুশাসনের অভাব রয়েছে মন্তব্য করে এই মন্ত্রী বলেন, “দেশে সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে। পুলিশ প্রশাসন দাবি করছে- দেশে অপরাধ প্রবণতা কমছে, কিন্তু পত্রিকার পাতা খুললে দেখা যায় দেশে খুন, ধর্ষণসহ বিভিন্ন অপরাধ প্রবণতা ভয়াবহ বাড়ছে।
“আজকে আমাদের নারীরা নিরাপদ নয়। শুধু রাতে নয়, দিনের আলোতেও তারা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। সুশাসনের জন্য সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।”
বাসদের আহ্বায়ক রেজাউর রশীদ খানের সভাপতিত্বে বাজেট নিয়ে ওই আলোচনা সভায় সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের আহ্বায়ক ওয়াজেদুল ইসলাম, গণতান্ত্রিক পার্টির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।