দুই দশক আগে শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে সম্মিলিত আন্দোলনে ক্ষমতা হারানো এইচ এম এরশাদ এখন ওই দুই নেত্রীর বিরোধকে নিজের জন্য সুযোগ মনে করছেন।
Published : 02 Feb 2015, 04:22 PM
নির্দলীয় সরকারের অধীনে মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবিতে বিএনপি জোটের লাগাতার অবরোধ এবং সেই দাবি না মানতে আওয়ামী লীগ সরকারের অনড় অবস্থানের মধ্যে সোমবার দলের এক সভায় ‘সুযোগ’ কাজে লাগানোর কথা বলেন তিনি।
পারিবারিক কাজে ভারত যাওয়ার একদিন আগে বনানীতে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে এরশাদ বলেন, “এবার একটা সুযোগ এসেছে। জনগণ দুই নেত্রীকে চায় না। আল্লাহও চান পরিবর্তন আসুক।
“একজনের ব্যর্থতা আর একজনের ক্ষমতার লিপ্সা... আমাদের সামনে সুযোগ এসেছে, এই সুযোগ কাজে লাগাতে হবে।”
বিএনপির বর্জনের মধ্যে ভোটে অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূতের দায়িত্ব পাওয়া জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বক্তব্যে দুই দলের কর্মকাণ্ডেরই সমালোচনা করেন।
সরকারের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন,“ উনি (খালেদা) ৫ তারিখ সমাবেশ করতে চাইলেন, কেন করতে দিলেন না? দেননি ভালো কথা, কিন্তু তার বাড়ির সামনে বালুর ট্রাক রেখে, তাকে তালাবদ্ধ করে আবার লাইমলাইটে নিয়ে এলেন।”
“আপনারাই বিএনপিকে বিরোধী দল হিসেবে সারা জগতে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন। সারা দেশের পত্রিকায় এখন হেডলাইন খালেদা জিয়া। কেন তাকে এত সুযোগ করে দিচ্ছেন,” প্রশ্ন করেন বিএনপিবিহীন সংসদে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির প্রধান।
বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার সমালোচনাও করেন এরশাদ।
“আসলে সরকার সবদিক থেকে ব্যর্থ। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দিতে সরকার ব্যর্থ।আজ আমরা রাস্তায় চলতে পারি না, আমার সন্তান স্কুলে যেতে পারে না।”
৩৩ বছর আগে সেনাপ্রধান থাকা অবস্থায় অবৈধভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকারী এরশাদ ‘অদৃশ্য শক্তির’ উত্থানের শঙ্কাও প্রকাশ করেন।
“আপনারা বলেছিলেন সাত দিনের মধ্যে দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, কিন্তু হয়নি। কারণ দেশে এখন অদৃশ্য শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। অদৃশ্য শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা যায় না।”
বিভিন্ন দলের দুই শতাধিক নেতাকর্মীর জাতীয় পার্টিতে যোগদান উপলক্ষে বনানীর কার্যালয়ে এই অনুষ্ঠান হয়। দলের মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এস এম ফয়সল চিশতী, সুনীল শুভরায়, এম এ হান্নান অনুষ্ঠানে ছিলেন।
জাতীয় পার্টির কোষাধ্যক্ষ খালেদ আক্তার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন, এক বন্ধুর ছেলের বিয়েতে যোগ দিতে মঙ্গলবার ভারত যাচ্ছেন এরশাদ। আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি তিনি ফিরবেন।