জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে বুধবার সারাদেশে বামপন্থী দলগুলোর আধাবেলা হরতালে সমর্থনের কথা জানিয়েছে বিএনপি।
Published : 15 Jan 2013, 03:30 PM
কর্মসূচির আগের দিন মঙ্গলবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম এই সমর্থনের কথা জানান।
তবে তাদের এই সমর্থন দেয়া রাজনৈতিক দুরভিসন্ধিমূলক বলে সন্দেহ করছের বামপন্থী নেতারা।
জোটে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী জামায়াতে ইসলামীসহ ডানপন্থী দলগুলোকে রাখা নিয়ে বিএনপির সমালোচনা করে বামপন্থী দলগুলো। জামায়াতকে নিষিদ্ধের দাবিতে বামপন্থী দলগুলো গত ডিসেম্বরে হরতাল ডেকেছিল।
জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে গত ৬ জানুয়ারি সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডাকে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট। এরপর একই দাবিতে আধাবেলা হরতাল ডাকে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) ও গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা।
তরিকুল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন,“জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধিতে দেশের মানুষের দুর্ভোগ বেড়ে গেছে। আমরা গত ৬ জানুয়ারি সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালন করে সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছি।”
“একই দাবিতে বাম মোর্চা বুধবার সারাদেশে অর্ধদিবস হরতালের ডাক দিয়েছে। আমরা এই হরতালকে সমর্থন জানাচ্ছি,” বলেন এক সময়ের বামপন্থী এই নেতা।
বিএনপির এই সমর্থনের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তাদের পক্ষ থেকে বিএনপির কাছে কোনো ধরনের সমর্থন চাওয়া হয়নি।
বিএনপি আমলে কয়েকদফা জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, “তারা যদি নাকে খত দিয়ে বলে যে ক্ষমতায় গেলে আর কোনো দিন জ্বালানি তেলের দাম বাড়াবে না; তাহলে বুঝব, তাদের কোনো রাজনৈতিক দুরভিসন্ধি নেই। বুঝব, তাদের এই সমর্থন আন্তরিক।”
তরিকুল সরকারের সমালোচনা করে বলেন, “সরকার গত চার বছরে দফায় দফায় জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি করেছে। এতে দ্রব্যমূল্য বেড়ে মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। আমরা মনে করি, লুটপাটতন্ত্র চালিয়ে যেতে সরকার জ্বালানি তেলের মূল্য আবার বাড়িয়েছে।
“সরকারের অগণতান্ত্রিক ও একপক্ষীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যারাই প্রতিবাদ জানাবে, আমরা তাতে সমর্থন জানাব।”
গত ৩ জানুয়ারি ডিজেল পেট্রোল, অকটেন ও কেরোসিনের দাম লিটারে সর্বোচ্চ সাত টাকা পর্যন্ত বাড়ালে তার প্রতিবাদ জানায় বামপন্থী দলগুলো। দাম কমাতে সরকারকে সময় বেঁধে দেয় তারা।
তার মধ্যে দাম কমানো না হওয়ায় ৯ জানুয়ারি সিপিবি সভাপতি সেলিম রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) সামনে সিপিবি-বাসদের ধরনা কর্মসূচি থেকে ১৬ জানুয়ারি হরতালের ঘোষণা দেন।
একই দাবিতে একইদিন আলাদাভাবে হরতালের ঘোষণা দেন গণতান্ত্রিক বামমোর্চার সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি।
নতুন করে দাম বৃদ্ধির ঘোষণার ক্ষেত্রে যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করা হয়নি বলে অভিযোগ বামপন্থী দলগুলোর।
সিপিবি সভাপতি বলেন, “নতুন করে তেলের দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের মতামতের তোয়াক্কা করা হয়নি। দাম বাড়ানোর জন্য গণশুনানি, উন্মুক্ত শুনানিসহ অন্য যে প্রক্রিয়া সেগুলোও অনুসরণ করা হয়নি।”
অন্যদিকে সরকারের বক্তব্য, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় এই খাতে ভর্তুকির চাপ সামেলাতে দাম বাড়ানোর বিকল্প ছিল না।