মনে হয় ওবায়দুল কাদেরের গরু হারাইছে: গয়েশ্বর

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে দিশাহারা মনে করছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 May 2017, 06:00 PM
Updated : 8 May 2017, 06:03 PM

জরুরি অবস্থার সময় গ্রেপ্তার হয়ে মুক্তি পাওয়ার পর থেকে তার সাম্প্রতিক নানা বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি নেতা সোমবার এক আলোচনা সভায় বলেন, “আমার মনে হয়, ওবাদুল কাদেরের গরু হারাইছে অথবা গরু হারানোর আশঙ্কা আছে।

“এরকম অবস্থায় ওবায়দুল কাদের একা না, আরও অনেকে আছেন। গরু হারিয়ে গেছে বলে তারা একেক সময়ে একেক কথা বলেন।”

ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দশম সংসদ নির্বাচন বর্জনকারী বিএনপির আগামী নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কথা আগাম বলার পাশাপাশি প্রতিদ্বন্দ্বী দলটিতে অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কথাও বলে আসছেন।

সেই সঙ্গে দলের মধ্যে অনুপ্রবেশকারীদের ‘কাউয়া’, ‘মুরগি’ বলার প্রসঙ্গটিও উল্লেখ করেন গয়েশ্বর রায়।

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির কর্মীসভায় তিনি বলেন, “ওবায়দুল কাদেরের কথা আমি কী বলব! আমার মাঝে-মধ্যে মনে হয় প্রতিবন্ধী।

“তার কথা-বার্তায় কোনো ধারাবাহিকতা নাই। একবার কয় কাউয়া ঢুকছে, আবার কয় যে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকলে টাকা-পয়সা নিইয়া বিদেশে যাইতে হইব। আমি নিজেও বুঝতে পারি না, আসলে কি সে ভার সামলাতে পারতেছে না? না কি অন্য কোনো দুশ্চিন্তা আছে?”

ওবায়দুল কাদের

জরুরি অবস্থার সময় ওবায়দুল কাদেরের বন্দিদশার ঘটনা তুলে গয়েশ্বর বলেন, “একবার কিন্তু তিনি জেলে গেছিল। অনেক কিছু নিয়ে গেছিল এটা পত্র-পত্রিকায় পত্রিকায় দেখেছি।

“যখন তাকে রিমান্ড শেষে জেলখানায় নেয়, আছাড় খাইয়া পরে বললেন, ‘আঁই আর রাজনীতি করতাম না। আঁরে মাইরে ফালাইছে’। সে আবার রাজনীতি করার জন্য নাটকের মতো নানা কথা বলছেন। এটা অদ্ভুত ব্যাপার, সহজ-সরলভাবে কথা বলতে পারে না।”

ঢাকা উত্তর মহানগর বিএনপির এই সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য মির্জা আব্বাস আওয়ামী লীগ নেতা  ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে এক কারাগারে থাকার কথা জানান।

তিনি বলেন, “জেলে ওবায়দুল কাদের আর আমি একই কক্ষে একেবারেই কাছাকাছি ছিলাম। উনি রিমান্ড থেকে আসার পর কানে ধরে উঠবস করলেন, তিন উঠবস করে বললেন- ‘আঁই আর রাজনীতি করমু না’।

“আমি বললাম কেন ভাই? নোয়াখালী ভাষায় বললেন, ‘দূর ভাই আমি লেখালেখি করি, লেখাপড়ার মানুষ, আমার একটু ভালো জায়গায় দিয়ে দিত। রাজনীতি করমু না’।”

“আমার এখন বলতে ইচ্ছা করছে ওবায়দুল কাদের সাহেব, ঘরে বসে লেখালেখি করেন, ভালো হবে। আওয়ামী লীগের গোপন সংবাদ ফাঁস হবে না,” বলেন মির্জা আব্সাস।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায়

এরশাদের নতুন জোট গঠনের প্রতিক্রিয়ায় গয়েশ্বর বলেন, “২০১৪ সালের নির্বাচনের মতোও এরশাদ শেখ হাসিনাকে সহযোগিতা করতে চায়। অর্থাৎ তার (এরশাদ) খায়েস পূরণ করতে চায়। সেজন্য জোট, মহাজোট, বিশ্বজোট, নতুনজোট করেছে। এমনিতে সে (এরশাদ) বিশ্ববেহায়া।

“ওদের ( হাসিনা-এরশাদ) ডাইরেক্টর এক জায়গায়। হাসিনাকে যারা চালায়, তারাই এরশাদকে চালায়। মাঝে-মধ্যে মান-অভিমান করে, মাঝে মাঝে যায়-আসে প্রতিবেশী দেশে।”

পুলিশ বাহিনীকে বিরোধী দল নিপীড়নে ব্যবহারের সমালোচনা করে বিএনপি নেতা বলেন, “আমি বলব, এই পুলিশ লীগ একদিন আওয়ামী লীগের উপর চড়াও হবে। এই পুলিশ দিয়ে বেশিদিন সরকারের থাকা যাবে না।”

কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিশন মিলনায়তনে এই কর্মীসভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা উত্তর মহানগর বিএনপির সহসভাপতি মুন্সি বজলুল বাছিদ আনজু।

গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনের দিকে লক্ষ্য রেখে ঢাকা মহানগর কমিটির নেতাদের ‘সংগ্রাম কমিটি’ গঠনের পরামর্শ দেন কেন্দ্রীয় নেতা গয়েশ্বর।

“মহানগর কমিটিকে বলব, সব নেতা-কর্মীকে সমন্বয় করে পথ চলার ব্যবস্থা নিন। আমরা যাতে সবাই এক সঙ্গে আন্দোলনে নামতে পারি, তার ব্যবস্থা নিতে হবে।”