বিএনপি এখন নানা কথা বললেও শেষ পর্যন্ত একাদশ সংসদ নির্বাচনে আসবে বলে আবার মন্তব্য করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
Published : 07 Mar 2017, 08:35 PM
তিনি মঙ্গলবার এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “ক্ষমতার সিংহাসনের জন্য বিএনপি বেসামাল হয়ে গেছে, একেবারে বেপরোয়া। তারা এখন জল ঘোলা করছে, বেসামাল হয়ে এই ঘোলা জল শেষ পর্যন্ত তারা খাবে।”
মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গত কয়েকদিন ধরে বরে আসছেন, দশম সংসদ নির্বাচন বর্জনকারী বিএনপি রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন টিকিয়ে রাখতে একাদশ সংসদ নির্বাচনে আসবে।
তার কথার পাল্টায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের জবাবে দলটির ঘোলা জল খাওয়ার কথা বলেন কাদের।
তিনি বলেন, “বিএনপির মহাসচিব চারদিক থেকে বিভিন্ন চাপে এমন কিছু কথা বলছেন, যা শুনে শিহরণ জাগে। তিনি (ফখরুল) বলেছেন, আমরা নাকি ভয় দেখিয়ে বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে চাই। ভয় দেখানোর দরকারটা কী? কী প্রয়োজন?
“আমরা বলেছি, বিএনপি নির্বাচনে আসবে তাদের প্রয়োজনে। আর একটা নির্বাচনে না আসলে তাদের রাজনীতি কতটা ঝুঁকিপূর্ণ হবে, তারা সেটা জানে।”
নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের একেক নেতার একেক ধরনের বক্তব্যের কথাও বলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
“আপনাদের কেউ ভয় দেখায় না, আপনাদের ঘরেই ভয়ের অনেক কারণ রয়েছে। আপনাদের ঘরে একজন আরেক জনের সাথে মারামারি লাগে, আবার এক অপরকে বলে সরকারের এজেন্ট।”
বিএনপিকে সাম্প্রদায়িক শক্তির সঙ্গ ছাড়ার পরামর্শ দিয়ে কাদের বলেন, “সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিষাক্ত আলিঙ্গন আপনাদের ডোবাবে। এই আলিঙ্গন থেকে ছুটতে না পারলে রাজনৈতিক দল হিসেবে আপনারা অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাবেন।”
বিএনপির সমালোচনার পাশাপাশি নিজ দলের নেতা-কর্মীদেরও সতর্ক করে দেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
“সামনে আমাদের চ্যালেঞ্জ হচ্ছে সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে প্রতিরোধ করা। তারা এখনও তলে তলে ভয়াবহ প্রস্তুতি নিচ্ছে, আমরা যদি মনে করি তারা নিষ্ক্রিয় হয়ে গেছে, তবে আমরা ভুল করছি।”
ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে আয়োজিত এই আলোচনা সভায় ইতিহাস নিয়ে বিএনপির ‘কানামাছি খেলার’ সমালোচনাও করেন কাদের।
কাদের আরও বলেন, “জয়বাংলা মুক্তিযুদ্ধের স্লোগান, বাঙালি জাতির স্লোগান, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সব মানুষ জয়বাংলা বলত। সেই জয়বাংলা স্লোগান আওয়ামী লীগের দিকে ঠেলে দিয়েছে।”
ঢাকায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটউশন মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত এই সভায় থানা, ওয়ার্ড কমিটি মার্চ মাসের মধ্যে গঠনের তাগিদ দেন কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক।
“আপনাদের বার বার বলার পরও কেন মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি দিচ্ছেন না? এই মাসের মধ্যে কমিটি পূর্ণাঙ্গ করবেন। তবে মানবিক কারণে কাউকে নেতা বানাবেন না। কেউ অসহায় থাকলে সহযোগিতা করবেন, অসুস্থ থাকলে সহযোগিতা করবেন। প্রয়োজনে তাকে রক্ত দিব তবে পদ দিয়ে নেতা বানাব না।”
মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসনাতের সভাপতিত্বে সভায় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মোজাফফর হোসেন পল্টু, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি রহমত উল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান, দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ বক্তব্য রাখেন।