প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি নিয়ে বুধবার নিজের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এই প্রতিক্রিয়া জানান তিনি।
খালেদা জিয়া বলেন, “দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের অনুভূতিকে এক্সপ্লয়েট করার জন্য শেখ হাসিনা ভারত সফরের আগে আলেম সম্মেলন করেন। ফিরে এসে আবার কওমি মাদ্রাসার ওলামায়ে কেরামদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
“আলেমদের সঙ্গে তাদের আচরণ ও ধর্মীয় মূল্যবোধের ওপর ক্রমাগত আঘাতের কথা দেশবাসী নিশ্চয়ই ভুলে যায়নি।”
ভারত সফরের আগে জঙ্গিবাদবিরোধী আলেম সম্মেলনে অংশ নিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। ফেরার পরদিন আলেমদের সঙ্গে বৈঠকে কওমি মাদ্রাসার সর্বোচ্চ সনদকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রির সমান করার ঘোষণা দেন তিনি।
খালেদা বলেন, “এখন তিনি (শেখ হাসিনা) ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করছেন। অতীতেও ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করার লক্ষ্যে দেশে ইসলামী শরিয়তি আইন চালুর জন্য একই ধর্মভিত্তিক দলের সঙ্গে চুক্তি করেছিলেন। এখন কওমী মাদ্রাসা সনদকে স্বীকৃতি দেওয়ার কথা বলে ধোঁকা দিচ্ছেন।”
কওমি মাদ্রাসার সনদের স্বীকৃতি দিতে বিএনপি সরকারই পদক্ষেপ নিয়েছিল বলে দাবি করেন খালেদা, যার বিরুদ্ধে ধর্মকে পুঁজি করে রাজনীতি করার অভিযোগ জানিয়ে আসছেন আওয়ামী লীগের নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে খালেদা বলেন, “২০০৬ সালে কওমি মাদ্রাসা সনদের স্বীকৃতি আমাদের সরকার দিয়েছিল। সেটার গেজেট নোটিফিকেশনও হয়েছিল। পরে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তা কার্যকর করা হয়।
“গত ১১ বছরে মাদ্রাসাবিরোধী সরকারগুলোর নেতিবাচক মনোভাবের কারণে বিষয়টি আর এগোতে পারেনি।”
সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে ভাস্কর্য সরাতে ইসলামী দলগুলোর দাবির বিষয়টি আদালত অঙ্গনের বলে এড়িয়ে যান খালেদা জিয়া।
সাংবাদিকেদর প্রশ্নে তিনি বলেন, “এ বিষয়টি নিয়ে আমাদের কারও সঙ্গে কথা হয়নি। কেউ এসে আমাদেরকে এই মূর্তি নিয়ে কথা বলেনি। কাজেই কী কথা হয়েছে আমরা জানি না।”
“এটা আমার ব্যাপার নয়, এটা সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণের, তাদের পবিত্রতার ব্যাপার। সেখানে প্রধান বিচারপতিই সব কিছু। কাজেই প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব এটা, উনি কী করবেন, না করবেন, সেটা।”
মঙ্গলবার শাহ আহমদ শফীর নেতৃত্বে ওলামাদের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে ভাস্কর্য অপসারণে পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দেন।
শফী নেতৃত্বাধীন হেফাজতে ইসলামের ২০১৩ সালের মতিঝিল চত্বরের সমাবেশে বিএনপি সমর্থন জানিয়েছিল। ওই সমাবেশ থেকে ব্যাপক তাণ্ডব চালানোর পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদের সরিয়ে দেয়।