সুপ্রিম কোর্টের ভাস্কর্য সরাতে চান প্রধানমন্ত্রীও

সুপ্রিম কোর্টে স্থাপিত ভাস্কর্যের বিরোধিতাকারী ওলামাদের দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এটি সরাতে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে কথা বলবেন তিনি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 April 2017, 03:33 PM
Updated : 7 May 2017, 03:28 PM

মঙ্গলবার রাতে গণভবনে কওমি মাদ্রাসার আলেমদের সঙ্গে এক সাক্ষাতে তাদের এই প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

এই বৈঠকে কওমি মাদ্রাসাগুলোর শীর্ষ প্রতিনিধি ও হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ আহমদ শফীও ছিলেন।

রোমান যুগের ন্যায়বিচারের প্রতীক ‘লেডি জাস্টিস’র আদলে একটি ভাস্কর্য কিছুদিন আগে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত প্রাঙ্গণে স্থাপন করা হয়।

এরপর থেকে হেফাজতসহ কয়েকটি ইসলামী সংগঠন তার বিরোধিতায় নামে। হেফাজত এই ভাস্কর্য সরানোর দাবি জানিয়ে সরকারকে ৫ মে মতিঝিলে ফের সমাবেশের হুমকি দিয়ে আসছে। ওলামা লীগও তা অপসারণের দাবি জানিয়ে আসছিল।

গণভবনের বৈঠকে শোলাকিয়ার ইমাম মওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ জাতীয় ঈদগাহের পাশেই স্থাপিত ‘মূর্তি’ সরানোর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

ভাস্কর্যটির বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “আমি নিজেও এটা পছন্দ করিনি। বলা হচ্ছে এটা নাকি গ্রিক মূর্তি… আমাদের এখানে গ্রিক মূর্তি আসবে কেন? আমি নিজে ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, এটা এখানে থাকা উচিৎ না। এটা কেন করা হল? কারা করল? কীভাবে, জানি না।”

“গ্রিকদের পোশাক ছিল এক রকম। এখানে আবার দেখি শাড়ি পরিয়ে দিয়েছে। এটাও হাস্যকর হয়েছে।”

বাংলাদেশ সুপ্রিমে কোর্ট প্রাঙ্গণে ভাস্কর্যটি বসানো হয় ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে।

গণভবনের অনুষ্ঠানে শাহ আহমদ শফীর সঙ্গে কুশল বিনিময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সাইফুল ইসলাম কল্লোল

 

ভাস্কর্য অপসারণের বিষয়ে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার সঙ্গে কথা হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রীর মুখে শোনার পর গণভবনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত কয়েকশ আলেম হর্ষধ্বনি দিয়ে ওঠেন।

হেফাজত আমির শফীকে পাশে রেখে শেখ হাসিনা বলেন, “প্রধান বিচারপতির সঙ্গে খুব শিগগিরই বসব। আপনারা ধৈর্য ধরেন, এটা নিয়ে হৈ চৈ করা নয়। আমার উপর আপনারা এটুকু ভরসা রাখবেন। এটায় যা যা করা দরকার আমরা তা তা করব।”

প্রধানমন্ত্রী ভাস্কর্য সরানোর দাবিতে একমত হলেও তার দলের কয়েকজন নেতা হেফাজতের দাবির সমালোচনা করে আসছিলেন।

সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেছেন, “হেফাজত আজকে যেভাবে বলছে, তাতে মনে হচ্ছে এটি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ নয়, মনে হচ্ছে এটি ইসলামী প্রজাতন্ত্র।”

গণভবনের অনুষ্ঠানে ফরীদ উদ্দীন মাসউদ বলেন, “আজকে ওলামায়ে কেরামরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হল। এটা দেশের কল্যাণ বয়ে আনবে।”

শেখ হাসিনা ও আহমদ শফীর উপস্থিতির কথা উল্লেখ করে অনুষ্ঠানের শুরুতেই সঞ্চালক বলেন, “রাষ্ট্রের প্রধান মুরুব্বি ও অভিভাবক এবং আধ্যাত্মিক মুরুব্বি ও অভিভাবকের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠান শুরু করতে যাচ্ছি।”

প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদিনের স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে শুরু হয়ে অনুষ্ঠান শেষ হয় আহমদ শফীর মোনাজাত পরিচালনার মাধ্যমে।