হজ শেষে দেশে ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তাকে অভ্যর্থনা জানাতে বিএনপি নেতা-কর্মীদের জড়ো হওয়া আর পুলিশের কড়াকড়িতে যানজটের ধকল পোহাতে হয়েছে বিমানবন্দর সড়ক ব্যবহারকারীদের।
Published : 22 Sep 2016, 06:57 PM
বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টা ১০ মিনিটে বিএনপি চেয়ারপারসন শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে নামেন। এর আগে থেকে যানজট সৃষ্টি হয় এবং সন্ধ্যা পর্যন্ত বনানী পর্যন্ত সড়কে যানজট লেগে ছিল।
একদিন আগে হজ থেকে ফেরা যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুককে অভ্যর্থনা জানাতে ক্ষমতাসীন দলের সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের ভিড়েও এই সড়কে যানজট সৃষ্টি হয়েছিল।
আগামী সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ অধিবেশন থেকে দেশে ফেরার পর তাকে সংবর্ধনা দিতে বিমানবন্দর থেকে গণভবন পর্যন্ত সড়কে ব্যাপক জনসমাগমের প্রস্তুতি রয়েছে আওয়ামী লীগের।
হজ করতে গত ৮ সেপ্টেম্বর ঢাকা ছেড়েছিলেন খালেদা। যুক্তরাজ্যে থাকা ছেলে তারেক রহমানও মায়ের সঙ্গে হজ করেন।
হজের পর দুবাই পর্যন্ত একসঙ্গে এসে তারেক ফিরে যান লন্ডনে, খালেদা বাংলাদেশের পথে রওনা হন।
খালেদার ফেরার সময় বিমানবন্দরে বিএনপি নেতা-কর্মীদের জড়ো হওয়ার কর্মসূচি থাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপক কড়াকড়ি ছিল বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে।
খালেদা জিয়ার গাড়িবহর বিকাল ৫টা ১৭ মিনিটে ভিআইপি সড়ক দিয়ে গোল চত্বরে এলে হাজার নেতা-কর্মী তুমুল করতালি দিয়ে তাদের নেত্রীকে শুভেচ্ছা জানায়।
বিমানবন্দর থেকে খিলক্ষেত পর্যন্ত বিএনপির কর্মীরা অবস্থান নেওয়ায় যানজট লেগে যায় সড়কে। খালেদার গাড়ি বনানীর কাকলীতে সন্ধ্যা ৬টায় পৌঁছে, তখনও সড়কে যানবাহন চলছিল থেমে থেমে।
ডিএমপির সহকারী কমিশনার (ট্রাফিক উত্তরা) জিন্নাত আলী মোল্লা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সড়কে বিএনপির নেতা-কর্মীদের অবস্থানের কারণে ৪টার পর থেকে সোয়া ৬টা পর্যন্ত দুই পাশের রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ ছিল।
যানজটে আটকে থাকা শরীফ হোসেন সন্ধ্যায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ভয়াবহ যানজটে রয়েছি। দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে গাড়িতে।”
বিমানবন্দর এলাকা থেকে ৭ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে বনানী পৌঁছতে শরীফের লেগেছিল দুই ঘণ্টা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ জ্যেষ্ঠ কয়েকজন নেতাকে বিমানবন্দরের ভিআইপি সড়কের মোড়ে পুলিশ ঢুকতে দিয়েছিল।
এদের মধ্যে ছিলেন মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, আবদুল্লাহ আল নোমান, মোহাম্মদ শাহজাহান, আবদুল আউয়াল মিন্টু, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, নিতাই রায় চৌধুরী, শাহজাহান ওমর, আবদুল কাইয়ুম, মজিবুর রহমান সরোয়ার, খায়রুল কবির খোকন, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, আমীনুল ইসলাম, নুরে আরা সাফা, শামা ওবায়েদ, শিরিন সুলতানা, আবদুস সালাম আজাদ, তাইফুল ইসলাম টিপু, বেলাল আহমেদ, মুনির হোসেন, শহিদুল ইসলাম বাবুল, কাদের গনি চৌধুরী, চৌধুরী আবদুল্লাহ ফারুক, রাজীব আহসান।
বিমানবন্দরে ঢুকতে বাধার সমালোচনা করে মির্জা আব্বাস সাংবাদিকদের বলেন, “বিএনপি একটি বৃহৎ গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক। তার নেত্রীকে দেশবাসী চেনেন, সরকারও চেনে, তারপরও সরকার আজকে যেভাবে বাধা দিল, এটা কোনো রাজনৈতিক শিষ্টাচারের মধ্যে পড়ে না।
সৌদি আরবের বাদশা সালমান বিন আবদুল আজিজের আমন্ত্রণে রাজকীয় অতিথি হিসেবে খালেদা জিয়া ও তার পরিবারের সদস্যরা হজ করেন বলে বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়।
লন্ডন থেকে স্ত্রী জোবাইদা রহমান, মেয়ে জাইমা রহমান এবং ভ্রাতৃবধূ শামিলা রহমান সিঁথিকে নিয়ে খালেদার সঙ্গে হজ করতে যান তারেক।
জোবাইদার মা ইকবাল মান্দ বানু এবং বোন শাহিনা খান জামান বিন্দু ও তার স্বামী সৈয়দ শফিউজ্জামানও একসঙ্গে হজ করেন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে যান তার একান্ত সচিব আবদুস সাত্তার, আলোকচিত্রী নুরুউদ্দিন আহমেদ, গৃহকর্মী ফাতেমা বেগম।
এবার তৃতীয় বার হজ করলেন খালেদা জিয়া। এর আগে ১৯৯১ সালে প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে এবং ১৯৯৭ সালে বিরোধী দলীয় নেত্রী থাকার থাকার সময় তিনি হজ করেছিলেন। রোজার সময় উমরাহ প্রায় প্রতিবছরই পালন করেন তিনি।
তারেক, তার স্ত্রী জোবাইদা, মেয়ে জাইমা এবং প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শামিলার এটা প্রথম হজ। ২০১৪ সালে তারা খালেদা জিয়ার সঙ্গে উমরাহ করেছিলেন।