শুক্রবার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে শহীদ কর্নেল তাহের মিলনায়তনে হয় এই সভা, যাকে শরীফ নুরুল আম্বিয়া ও নাজমুল হক প্রধান নেতৃত্বাধীন জাসদের অপর অংশ ইতোমধ্যে ‘ঐক্য প্রচেষ্টা বিরোধী’ বলে আখ্যায়িত করেছে।
দলীয় সভাপতি ইনুর সভাপতিত্বে সভার শুরুতে দলের মৃত নেতাকর্মীদের স্মরণে শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন।
এরপর দলের কাউন্সিলে নেওয়া রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের আলোকে খসড়া রাজনৈতিক প্রস্তাব উত্থাপন করেন দলের সাধারণ সম্পাদক সাংসদ শিরীন আখতার।
গত ১২ মার্চ সর্বশেষ জাতীয় কাউন্সিলে শিরীন আখতারকে সাধারণ সম্পাদক করা নিয়ে দুই ভাগ হয় জাসদ। ইনু ও শিরীনের কমিটির পাশাপাশি কার্যকরী সভাপতি মঈনুদ্দীন খান বাদলসহ আম্বিয়া-প্রধানরা আলাদা কমিটি ঘোষণা করলে বিভক্তি চূড়ান্ত হয়।
এরপর জাসদের দুই অংশই নির্বাচন কমিশনের শুনানিতে নিজেদের মূল স্রোতধারা হিসেবে দাবি করে তাদের অনুকূলে মশাল প্রতীক বরাদ্দ চায়।
ইসি থেকে মূলধারা হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার দেড়মাস পর হলো ইনু-শিরীন কমিটির এই প্রথম সভা।
এই অংশটির এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সকাল ১০টা থেকে সম্মেলন শুরু হয়ে দিনব্যাপী রাজনৈতিক প্রস্তাবনার উপর আলোচনা হয়। মধ্যাহ্ন বিরতির পর বিকাল ৩টায় পুনরায় সভা শুরু হয়।
জাসদ জাতীয় কমিটির এ সভায় সংগঠনের ৭০টি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অংশ নেন। এর বাইরে বিশেষ আমন্ত্রণে উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্যরা অংশ নিয়েছেন।
সভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে চলমান ‘গুপ্তহত্যা’র জন্য বিএনপি-জামায়াতকে দায়ী করেন জাসদ একাংশের সভাপতি হাসানুল হক ইনু।
তিনি বলেন, “বিএনপি-জামায়াত অন্তর্ঘাত-নাশকতা-আগুন সন্ত্রাসে পরাজিত হলেও রাষ্ট্র-সংবিধানের বিরুদ্ধে এখনও যুদ্ধ বন্ধ করেনি। এখন গুপ্তহত্যার মাধ্যমে জনমনে আতংক সৃষ্টি করে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি করতে চাচ্ছে।
“জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদকে পরাজিত করার যুদ্ধের পাশাপাশি জাসদ দুর্নীতি ও বৈষম্যের অবসান করে সুশাসন, গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্রের সংগ্রাম এগিয়ে নিয়ে যাবে।”
এদিকে ইনু-শিরীন নেতৃত্বাধীন জাতীয় কমিটির এ সভাকে ইতোমধ্যে ‘অবৈধ’ এবং ‘চলমান ঐক্য প্রচেষ্টা বিরোধী’ বলে মন্তব্য করেছে শরীফ নুরুল আম্বিয়া ও নাজমুল হক প্রধান নেতৃত্বাধীন অংশ।
বুধবার আম্বিয়া-প্রধানের এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, “জাসদের বিগত কাউন্সিলের নির্বাচনী অধিবেশনে সাজানো ও ভুয়া ভোটের মাধ্যমে গঠিত ইনু-শিরীন কমিটি হচ্ছে গঠনতন্ত্র বিরোধী ও অবৈধ। সঙ্গত কারণেই তাদের সভা অবৈধ এবং চলমান ঐক্য প্রচেষ্টা বিরোধী।”