কাউন্সিলে দ্বিধাবিভক্ত জাসদের দুই অংশই নির্বাচন কমিশনে শুনানিতে নিজেদের মূল স্রোতধারা দাবি করে মশাল প্রতীক চেয়েছে।
Published : 06 Apr 2016, 05:50 PM
বুধবার বিকালে শুনানি শেষে একাংশের কার্যকরি সভাপতি মইন উদ্দীন খান বাদল সাংবাদিকদের বলেন, “আমাদের যাবতীয় তথ্য উপস্থাপন করেছি। কমিশন সব শুনেছে।
“আমরা জানিয়েছি-মশাল প্রতীক আমাদের। এখন প্রত্যাশা, ইসি যথাযথ সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম হবে।”
তার আগে সকালে শুনানি শেষে অন্য অংশের সভাপতি হাসানুল হক ইনু সাংবাদিকদের বলেন, “আমাদের সব কাগজপত্র-দলিলাদি জমা দিয়েছি। ইসি কিছু প্রশ্ন করেছে; আমরা জবাব দিয়েছি।
“ইসির প্রতি আমাদের সম্পূর্ণ আস্থা রয়েছে। আশা করি তারা সুবিবেচনা করবেন।”
গত ১২ মার্চ জাসদের কাউন্সিলে দুটি কমিটি গঠিত হয়। একটির সভাপতি মন্ত্রী ইনুর সঙ্গে সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার। অন্যটিতে সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া, সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান।
দলীয়ভাবে ইউপি নির্বাচনের চলার মধ্যে দলটিতে বিভেদ দেখা দিলে প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। দুই কমিটি মশাল প্রতীকের প্রার্থী মনোনয়ন দিলে জটিলতা নিরসনে ইসি শুনানির উদ্যোগ নেয়।
জাসদের এই দুই অংশ যদি এক না হয়, তবে একটি পক্ষকে বৈধতা দিয়ে মশাল প্রতীক দিতে হবে ইসিকে। অন্য অংশ নতুন করে নিবন্ধন নিতে হবে, নিতে হবে নতুন প্রতীক।
অধিকাংশই আমাদের সঙ্গে: বাদল
১২ মার্চের কাউন্সিলের ইনু-শিরীনের কমিটি ‘অগণতান্ত্রিকভাবে’ গঠিত হয়েছে দাবি করে মইন উদ্দীন খান বাদল দাবি করেছেন, দলের স্থায়ী কমিটি, জেলা কমিটি এবং সংসদীয় কমিটিতে তারাই সংখ্যাগরিষ্ঠ।
তিনি ইসিতে সাংবাদিকদের বলেন, “ওই রাতে দুটি পথ খোলা ছিল। হয় সংঘাত, না হয় পরিত্যাগ। অধিকাংশ কাউন্সিলর এ কমিটিতে পরিত্যাগ করেছে।
“জাসদের কাউন্সিলর ১২৩৬ জন, ওরা (ইনু-শিরীন) ভোট দেখিয়েছে ৬০৩ ভোট। বাকিরা গেল কোথায়? জাসদের ৬ জন সাংসদের চার জন (বাদল, লুৎফা তাহের, তানসেন ও প্রধান) আমাদের; স্থায়ী কমিটির ১২ জনের মধ্যে ৭ জন আমাদের, দেশের ৭৯টি কমিটির মধ্যে ৪০টি আমাদের।”
বাদল বলেন, “আমরাই জাসদের মূলধারা; মশাল প্রতীক আমাদের। সংসদে আমি, ইনু, শিরীন নৌকায় পার হয়েছি। মশাল প্রতীকে যে দুজন নির্বাচিত হয়েছেন, তারা আমাদের সঙ্গে। যারা মশাল নিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন, তাদের কাছ থেকে মশাল কেড়ে নিতে পারবেন না?”
আম্বিয়া-প্রধান নেতৃত্বাধীন জাসদের কাছ থেকে মশাল কেড়ে নিলে সংসদে মশাল প্রতীকে নির্বাচিতদের ‘স্ট্যাটাস’ কী হবে, তা নিয়ে নতুন করে জটিলতা দেখা দেবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
মশাল নিয়ে ইসির সিদ্ধান্ত পক্ষে না গেলে আদালতে যাওয়ার আভাসও দেন বাদল।
শুনানিতে বাদলের সঙ্গে শরীফ নুরুল আম্বিয়া, নাজমুল হক প্রধানও ছিলেন।
ইনুর সঙ্গে শুনানিতে ছিলেন শিরীন আখতার, নুরুল আক্তার, অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন, হাবিবুর রহমান শওকত, জিকরুল আহমেদ, মীর আক্তার হোসেন।
দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিয়ন্ত্রণকারী তথ্যমন্ত্রী ইনু শুরু থেকেই বলে আসছেন, কাউন্সিলে তিনি সর্বসম্মতভাবে এবং শিরীন ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। পরাজিত হয়ে আলাদা কমিটি করেছে আম্বিয়া-প্রধানরা।
সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে তিন নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিব শুনানি নেন জাসদের।
ইসি সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, “সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে।”