জাতীয় পার্টিতে নতুন কো চেয়ারম্যান নিয়োগ ও মহাসচিব পরিবর্তনের যে সিদ্ধান্ত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ দিয়েছেন, তা প্রত্যাখ্যানের কথা জানিয়েছে পার্টির সংসদীয় দল।
Published : 19 Jan 2016, 04:34 PM
জাতীয় সংসদের নবম অধিবেশন সামনে রেখে মঙ্গলবার জাতীয় সংসদ ভবনে জাতীয় পার্টির সংসদীয় দলের বৈঠকের পর বিরোধী দলীয় প্রধান হুইপ তাজুল ইসলাম চৌধুরী সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
তিনি বলেন, “জাতীয় পার্টির কো চেয়ারম্যান ঘোষণা, মহাসচিব পদে নতুন একজনকে দায়িত্ব দেওয়া- এ সিদ্ধান্ত আমরা মেনে নিতে পারিনি। এটা পরিবর্তন করতে হবে।”
এ বিষয়গুলো নিয়ে প্রেসিডিয়াম ও সংসদীয় দলের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে চেয়ারম্যানকে অনুরোধ করা হয়েছে বলে জানান তাজুল।
“দলকে রক্ষা করতে হলে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের জন্য বলেছি আমরা। কো-চেয়ারম্যান ও নতুন মহাসচিবের বিষয়গুলো আমরা মেনে নিইনি; প্রত্যাখ্যান করেছি। এ বিষয়ে সংসদীয় দলের বৈঠকে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে।”
মহাসচিবের পদ হারানো জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নুসহ অন্তত পাঁচজন সাংসদ এ সময় তাজুলের পাশে ছিলেন।
শীর্ষ পর্যায়ে ক্ষমতার দ্বন্দ্বে পাল্টাপাল্টি ঘোষণার মধ্যেই বিরোধী দলীয় নেতা রওশনের সভাপতিত্বে জাতীয় পার্টির সংসদীয় দলের এই বৈঠক হয়, যাতে এরশাদও উপস্থিত ছিলেন।
রুহুল আমিন হাওলাদারসহ জাতীয় পার্টির ৪০ জন সংসদ সদস্যের সবাই ছিলেন বৈঠকে।
তাজুল সাংবাদিকদের বলেন, জাতীয় পার্টির বর্তমান অবস্থা নিয়ে বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। দলের ‘অধিবাংশ সাংসদ’ জিয়াউদ্দিন বাবলুকে মহাসচিব হিসেবে রাখার দাবি জানিয়েছেন।
“আগের মহাসচিবকে রাখতে বলেছি আমরা। প্রতিটি সিদ্ধান্ত রওশন এরশাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। উনি (এরশাদ) দুই ফোরামে (প্রেসিডিয়াম ও সংসদীয় দল) আলোচনা করে ঠিক করার কথা বলেছেন আমাদের।”
তাজুল বৈঠকের বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বলায় আর কোনো সদস্য এ নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এই বৈঠক শুরুর দুই ঘণ্টা আগে এক ‘জরুরি’ সংবাদ সম্মেলনে এরশাদ বাবলুকে ‘অব্যাহতি’ দিয়ে হাওলাদারকে মহাসচিব করার ঘোষণা দেন।
তার আগে গত রোববার নিজের জেলা রংপুরে সংবাদ সম্মেলন করে ভাই জি এম কাদেরকে দলের কো-চেয়ারম্যান ও উত্তরসূরি ঘোষণা করেন এরশাদ।
এর পাল্টায় সোমবার রাতে ঢাকায় পার্টির সাংসদ ও সভাপতিমণ্ডলীর নেতাদের একাংশের 'যৌথ সভা' থেকে এরশাদের সিদ্ধান্তকে ‘গঠনতন্ত্রবহির্ভূত’ ঘোষণা হয়। সেইসঙ্গে এরশাদের স্ত্রী বিরোধী দলীয় নেতা রওশনকে দলের ‘ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন’ করা হয়েছে বলে জানান পার্টির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু।
এর মধ্য দিয়ে ১৯৮৬ সালে যাত্রা শুরু করা এই দলটিতে নতুন করে ভাঙনের গুঞ্জন শুরু হয়।
অবশ্য ভাঙনের আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে নিজের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এরশাদ বলেন, ‘অসম্ভব’, জাতীয় পার্টি ‘বিভাজিত হবে না’।
“দেয়ার ইজ নো সঙ্কট ইন জাতীয় পার্টি। আমি যতক্ষণ বেঁচে আছি ততক্ষণ কোনো সঙ্কট নোই। নো ওয়ান কুড ব্রেক ইট,” জোর গলায় বলেন এরশাদ।