আসন্ন পৌর নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকার বিএনপির বিরুদ্ধে ‘নির্বাচনী ষড়যন্ত্র’ করছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির ভাইস চেয়ারপারসন আবদুল্লাহ আল নোমান।
Published : 26 Nov 2015, 03:16 PM
বৃহস্পতিবার এক আলোচনা সভায় এ অভিযোগ করে তিনি বলেন, “জাতীয় সংসদের জন্য রাজনৈতিক দলের যে প্রতীক, সেই প্রতীক পৌরসভা নির্বাচনে মেয়রের জন্য ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে।
“প্রথমবারের মতো দলীয়ভাবে মেয়র মনোনয়নের কথা বলে ওই প্রতীককে সামনে নিয়ে এই সরকার জাতীয়তাবাদী দলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।”
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আগামী ৩০ ডিসেম্বর মেয়াদোত্তীর্ণ ২৩৬টি পৌরসভায় ভোট হবে।
এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সারাদেশে গ্রেপ্তার ‘অতিমাত্রায় বেড়ে গেছে’ অভিযোগ করে নোমান বলেন, “তার কারণ, পৌর নির্বাচনে আমাদের যারা প্রতিনিধি হবেন, আমাদের জন্য যারা কাজ করবেন, তাদের নামে মিথ্যা মামলা, তাদের হয়রানি করে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এবং তারা কেউ বাড়িতে থাকতে পারছে না। এভাবে তারা একটা নির্বাচনী ষড়যন্ত্র করার চেষ্টা করছে।”
জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে বিএনপিপন্থি চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ড্যাব এর উদ্যোগে ‘নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে’ নিহত ডা. শামসুল আলম খান মিলনের ২৫তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়।
শুক্রবার মিলনের ২৫তম মৃত্যুবার্ষিকী। দিবসটি পালনে সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজে মিলন স্মৃতি স্কয়ারে পুস্পমাল্য অর্পণ করবে ড্যাব।
পৌর নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, “আমরা নির্বাচন করতে চাই। যেহেতু আমরা পৌর নির্বাচনে নির্বাচন করতে চাই। সেজন্য অতিমাত্রায় গ্রেপ্তার বেড়ে গেছে।”
স্থানীয় সরকারের সব নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এই দল হচ্ছে- একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। বুলেটের চেয়েও শক্তিশালী ব্যালট, সেই ব্যালট প্রয়োগের মাধ্যমে অর্থাৎ জনগণের শক্তিতে শক্তিমান হয়ে বিএনপি রাজনীতি করে দেশসেবায় এগিয়ে যেতে চায়। অন্য কোনো পন্থায় নয় ”
‘তড়িঘড়ি’ করে পৌর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে দাবি করে বিএনপির ভাইস চেয়ারপারসন নোমান বলেন,“হঠাৎ করে অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে দেশে পৌর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
“এই পৌর নির্বাচনের কমপক্ষে একটি নিয়ম আছে- ৪৫ দিনের একটা সময় দিয়ে নির্বাচন করতে হয়। সেই ৪৫ দিন সময় এবার দেওয়া হয় নাই। ৩৫ দিন সময় দিয়ে এই নির্বাচন করার কথা নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করছে ”
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সারাদেশে ‘লুটপাটের রাজত্ব’ কায়েম করেছে বলে এসময় অভিযোগ করেন তিনি।
আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, “ক্ষমতাসীন দলের উপরিকাঠামোর নেতৃত্ব দুর্নীতিতে ভারাক্রান্ত। আওয়ামী লীগ তাদের নেতা-কর্মীদের বিশ্বাস করে না। এই কর্মীরা নিজেদের আখের গোছানোর কাজে ব্যস্ত রয়েছে।”
সরকার দেশকে ‘পুলিশি’ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, “আওয়ামী লীগ দেখছে- জনগণ তার শক্তি না। তাদের ওপর বিশ্বাস নেই, এই জনগণ তাদের ভোট দেবে না। সেজন্য সরকার পুলিশি রাষ্ট্রের মাধ্যমে এখন অরাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় এগিয়ে যাচ্ছে।”
এসময় তিনি দেশের ‘ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে’ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে আন্দোলনের জন্য সবাই ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বানও জানান।
ড্যাব সহ-সভাপতি রফিকুল কবির লাবুর সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন,ড্যাবের সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সহ-সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব, চিকিৎসক অধ্যাপক বায়েস ভুঁইয়া, অধ্যাপক আবদুল মান্নান মিয়া, অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের জাকির হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।