বছরের শুরুতে গাজীপুরের জয়দেবপুরে গাড়িতে আগুন দেওয়ার এক মামলায় বিএনপির জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ৩২ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ।
Published : 25 Aug 2015, 01:46 PM
আসামিদের মধ্যে তারেকের ব্যক্তিগত সহকারী লুৎফর রহমান বাদল ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বরখাস্ত মেয়র এমএ মান্নানের ছেলে মঞ্জুরুল আহসান রনিও রয়েছেন।
অভিযোগপত্রে তাদের তিনজনকে ‘নাশকতার পরিকল্পনাকারী ও নির্দেশদাতা’ বলা হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জয়দেবপুর থানার উপ পরিদর্শক এনামুল হক মঙ্গলবার গাজীপুরের আদালতে এ অভিযোগপত্র দেন।
পরে গাজীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ নিজের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান।
তিনি বলেন, গত ২১ জানুয়ারি ২০ দলীয় জোটের হরতালের মধ্যে গাজীপুরের মনিপুর খাসপাড়া এলাকার তারেক জিয়া মোড়ে বিএনপিকর্মীরা একটি বাসে কেরোসিন ও পেট্রোল ঢেলে আগুন দেয়। এতে বাসটি পুড়ে ৮ লাখ টাকার ক্ষতি হয়।
ওই ঘটনায় জয়দেবপুর থানার উপ পরিদর্শক দিলীপ চন্দ্র সরকার অর্ধশতাধিক ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা করেন।
পুলিশ সুপার হারুন বলেন, মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা উপ পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করেছিলেন। পরে মামলাটি তদন্ত করেন উপ পরিদর্শক এনামুল হক।
তার দেওয়া অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, গত বছর জানুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে-পরে খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক লন্ডনে তার ফ্ল্যাটে বসে বাদল ও রনির সঙ্গে ‘দেশের বিভিন্ন স্থানে নাশকতার পরিকল্পনা’ করেন।
তারা বাংলাদেশের প্রধান শিল্পাঞ্চল ও গাজীপুরে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান মহাসড়কে নাশকতা চালিয়ে, গাড়ি ভাংচুর ও গাড়িতে পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ করে এবং মানুষ হত্যার মাধ্যমে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতে দেশে নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন বলে অভিযোগপত্রে লেখা হয়েছে।
এ মামলায় বর্তমানে ১১ জন গ্রেপ্তার রয়েছেন জানিয়ে পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ বলেন, “প্রাথমিকভাবে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫ (৩)/২৫-ঘ ধারায় ৩২ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত কর্মকর্তা অভিযোগপত্র দিয়েছেন।”
নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে চলতি বছরের শুরুতে টানা তিন মাস হরতাল-অবরোধ করে ২০ দলীয় জোট।
তাদের এই আন্দোলনের মধ্যে যানবাহনে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় দেড় শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে কয়েকটি ঘটনায় তারেকের মা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামি করেও মামলা হয়েছে।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান বেশ কয়েকটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা মাথায় নিয়ে গত সাত বছর ধরে লন্ডনে অবস্থান করছেন। সেখানে তার রাজনৈতিক কর্মসূচি ও বক্তব্য-বিবৃতি বাংলাদেশে প্রচার বা প্রকাশের ওপর আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।