স্থানীয় সরকারমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে নিয়ে ফেইসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাস দিয়ে তথ্য প্রযুক্তি আইনের মামলায় গ্রেপ্তারকৃত সাংবাদিক প্রবীর সিকদারের মুক্তি দাবি করেছে সিপিবি ও বাসদ।
Published : 17 Aug 2015, 09:46 PM
সোমবার এক যৌথ বিবৃতিতে এই দাবি জানান সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবু জাফর আহমেদ ও বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান।
বিবৃতিতে বলা হয়, সাহসী লেখালেখির জন্য সাংবাদিক প্রবীর সিকদার দীর্ঘদিন ধরে প্রভাবশালী মহলের ষড়যন্ত্র ও হুমকির মধ্যে ছিলেন। নিরাপত্তার জন্য সাধারণ ডায়েরি করতে গেলে পুলিশ ফিরিয়ে দেওয়ার পর তিনি ফেসবুকে জনতার দরবারে ফরিয়াদ জানিয়েছিলেন।
“তার জন্যই যদি তাঁকে নির্যাতনের মুখে পড়তে হয়, তবে তা স্পষ্টভাবে গণবিরোধী শক্তির পক্ষে সরকারের অবস্থান গ্রহণকেই স্পষ্ট করে।
এই গ্রেপ্তার সরকারের নির্যাতনের পথকেই কেবল প্রশস্ত করবে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, “প্রতিবাদী কণ্ঠ রুদ্ধ করার সরকারের এই আগ্রাসী তৎপরতা জনগণ ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ করবে।”
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, “মুক্তিযুদ্ধে শহীদ পরিবারের সন্তান সাংবাদিক প্রবীর সিকদার ইতোমধ্যেই সৎ ও সাহসী সাংবাদিক হিসেবে নিজেকে দেশবাসীর সামনে তুলে ধরেছেন।
“এর আগে তিনি সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হয়ে এক পা হারিয়েছেন, কিন্তু তিনি তাঁর পথ থেকে সরে আসেননি। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রশ্নে এবং সংখ্যালঘুদের সম্পত্তি দখলের বিরুদ্ধে তিনি সবসময় সোচ্চার।”
নেতৃবৃন্দ সরকারকে সতর্ক করে বলেন, “গ্রেপ্তার-হামলা-নির্যাতন করে সত্য প্রকাশের পথ যেমন রুদ্ধ করা যাবে না, ঠিক তেমনি জনগণের আন্দোলনও দমন করা যাবে না।”
ফরিদপুরের সন্তান সাংবাদিক প্রবীর সিকদারের বিরুদ্ধে একই এলাকার সাংসদ মন্ত্রী মোশাররফকে মানহানির অভিযোগে তথ্য প্রযুক্তি আইনে ফরিদপুরের মামলাটি করেছেন এপিপি বাদী স্বপন পাল।
ফেইসবুকে লেখালেখিকে কেন্দ্র করে হুমকি পাওয়ার পর নিজের নিরাপত্তাহীনতার কথা তুলে ধরে ঢাকার এক থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে গিয়েছিলেন একাত্তরে শহীদের সন্তান প্রবীর সিকদার।
কিন্তু পুলিশ ওই জিডি নেয়নি জানিয়ে গত ১০ অগাস্ট নিজের ফেইসবুক পাতায় একটি স্ট্যাটাসে নিজের জীবন নিয়ে ঝুঁকির কথা জানিয়ে তার জন্য আরও দুজনের সঙ্গে মন্ত্রী মোশাররফকে দায়ী করেন প্রবীর।
এরপর রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর ইন্দিরা রোডের বাসা থেকে তাকে তুলে নিয়ে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে মধ্য রাতে এই সাংবাদিককে ফরিদপুরে নিয়ে যাওয়া হয়।
এর মধ্যেই তার বিরুদ্ধে মামলা হয় ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায়। সোমবার তাকে কারাগারে পাঠান সেখানকার আদালত।