বাঙালির রসনা তৃপ্তিতে গড়ে ওঠা রেস্তোরাঁগুলো এখন খাবারের পাশাপাশি অন্দরসজ্জা, আড্ডা দেওয়ার জায়গাতেও নজর রাখছে।
Published : 15 Jun 2015, 05:02 PM
ধানমণ্ডিতে গড়ে ওঠা এরকম নতুন রেস্তোরাঁ নিয়েই এই আয়োজন।
গ্লেইজড
সাত মসজিদ রোডের কাকলি স্কুলের উল্টা পাশে র্যাংগস কেবি স্কয়্যার ভবনে একমাত্র ডোনাটের রেস্তোরাঁ। দ্বিতীয় তলায় অবস্থিত এই রেস্তোরাঁয় পাওয়া যাবে ২১ ধরনের ডোনাট। এর মধ্যে ১৭টির দাম ১৩৫ টাকা। ডে লা চিজ, বানানা ক্রিম পাই, হানি মাস্টার্ড চিকেন ডোনাটের দাম পড়বে দেড়শ টাকা। আর কার্নিভাল ডোনাটটির দাম ১৮৫ টাকা।
ডোনাট ছাড়াও আরও পাওয়া যাবে ঠাণ্ডা ও গরম কফি, চা এবং স্মুদি। এক্সপ্রেসো পড়বে ১৩০ টাকা। লাত্তে ১৮০ টাকা আর ক্যারামেল, হেইজেলনাট এবং ভ্যানিলা ফ্লেভারযুক্ত লাত্তে ২২০ টাকা। কাপুচিনো ১৮০ টাকা।
কোল্ড কফি ১৯৫ টাকা আর ফ্লেইভারযুক্ত কোল্ড কফি ২২০ টাকা। স্মুদির দাম স্ট্রবেরি, ম্যাঙ্গো-প্যাশন ফ্রুট আর কুকিন এন ক্রিম ফ্লেভারের, দাম ২২০ টাকা। আরও আছে ছয় ধরনের আইস টি, সবগুলোর দামই ২০০ টাকা।
তিনি আরও জানান, জেরিন চোধুরী, সিমাব ইউসুফ ও আরমান হক— এই তিনজন মিলে শখের বসে ডোনাট ব্যবসা শুরু করেন। ডোনাট তৈরির সব উপকরণই দেশের বাইরে থেকে আনা হয়। আর আমেরিকা থেকে শেফ এনে তিন মাসের ডোনাট তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে কর্মচারিদের। রেস্তোরাঁয় বসে খাওয়ার চেয়ে অর্ডারের পরিমাণই বেশি। সবচেয়ে বেশি চলে ডে লা চিজ, তিরামিসু, ড্যাজেল আর ডাবল চকলেট।
তিনি আরও বলেন, “ছোট আকারের আট ধরনের মিনি ডোনাটের বক্স পাওয়া যাবে সাড়ে তিনশ টাকায়। আর শুধু রবিবারে থাকছে সানডে স্পেশাল পপ ডোনাট।”
ধানমণ্ডি শাখায় বসার ব্যবস্থা আছে ৩০ জনের। ওয়াইফাই সুবিধা আছে।
দ্য পান্ডা এক্সপ্রেস
র্যাংগস কেবি স্কয়্যার বিল্ডিংয়ের আট তলায় ‘হিবাচি গ্রিল’ নিয়ে এসেছে দ্য পান্ডা এক্সপ্রেস। আমেরিকার চাইনিজ রেস্তোরাঁ পান্ডা এক্সপ্রেসে ১৩ বছর কাজ করার পর দেশে ফিরে সেই আদলেই এই রেস্তোরা চালু করেছেন ইকবাল রহমান রনি।
‘পরিবার বান্ধব’ রেস্তোরাঁর অসম্পূর্ণ অন্দরসজ্জায় লাল রংয়ের প্রাধান্য বেশি। রেস্তোরাঁর নামের সঙ্গে মিল রাখতেই হয়ত দেয়ালে ঝোলানো হয়েছে পান্ডার ছবি। এছাড়া ক্রেতাদের বরণ করে নিতে আছে পান্ডা মাসকটও। বসার ব্যবস্থা আছে মোট ৮০ জনের। তবে নিয়মিত বসার ব্যবস্থা পরিবর্তন করা হবে বলেই জানালেন এর মালিক।
ইকবাল রহমান জানান, রান্নার দায়িত্বে আছেন ঢাকা ক্লাবের ১০ বছরের অভিজ্ঞ শেফ আকাশ দেব। মেন্যুর সব খাবার তার তত্ত্বাবধানেই তৈরি হয়। তবে উপকরণ বাছাইয়ের দায়িত্ব দেওয়া হবে ক্রেতাদের হাতে। নিজের খাবার ক্রেতারা নিজেই তৈরি করে নেওয়ার সুযোগ পাবেন। খোলা রান্না ঘরের সামনে বাক্সে রাখা বিভিন্ন উপকরণ থেকে ক্রেতারা পছন্দের উপকরণগুলো বাছাই করবেন।
বাছাই করা উপকরণগুলো দিয়ে ক্রেতার সামনেই তৈরি করা হবে তার খাবার। আর আমাদের নিজস্ব খাবারের সঙ্গে যোগ হবে বেলিসিমো-র আইসক্রিম পার্লার। আইসক্রিমের পাশাপাশি কফি ও অন্যান্য পানীয় থাকবে এই আইসক্রিম পার্লারে।
খাবার সম্পর্কে ইকবাল রহমান বলেন, “আমাদের বর্তমান খসড়া মেন্যুর উল্ল্যেখযোগ্য খাবারগুলোর মধ্যে আছে হিবাচি গ্রিল নুডুলস। মাশরুম, বেবি কর্ন, চিংড়ি, ফুলকপি, গাজর, বরবটি, ডিম ইত্যাদি একসঙ্গে গ্রিল করে তৈরি করা হয় এই খাবার। দাম সাড়ে ৩শ’ টাকা।”
আরেকটি জনপ্রিয় খাবার প্রন পানগ্রাম। আটটি ডিপ ফ্রাইড চিংড়ি মাছের এই খাবারের মূল্য সাড়ে ৩শ’ টাকা। আর ক্যাটল ফিস ও ভেটকি মাছ দিয়ে তৈরি সি ফুড সুপ মিলবে ২শ’ টাকায়। এছাড়াও আছে চিকেন স্টেক, দাম ৪শ’ টাকা। শ্রেডেড বিফ সাড়ে ৫শ’ টাকা।
রহমান আরও বলেন, “আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর আরও কিছু নতুন খাবার যোগ হবে মেন্যুতে, পরিবর্তন হবে দামগুলো।”
দ্য ব্যাক ইয়ার্ড শেফ
ধানমন্ডি ২৭ নম্বর রোডে মীনা বাজারের পেছনের গলিতে ছোট পরিসরে দ্য ব্যাক ইয়ার্ড শেফের ফ্র্যাঞ্চাইজ নিয়েছেন জাওয়াদ রহমান। চালু হয়েছে ৩০ জানুয়ারি থেকে।
জাওয়াদ রহমান বলেন, “মাল্টি কুইজিন ধাঁচের এই রেস্তোরাঁতে আছে জাপানি তেরিয়াকি ডিশ। তেরিয়াকি চিকেনের দাম সিঙ্গেল সাড়ে ৩শ’ টাকা আর ডাবল ৬শ’ টাকা।
তেরিয়াকি চিকেন বার্গারের দাম সাড়ে ৩শ’ টাকা। তেরিয়াকি পানিনির দাম সিঙ্গেল ২৪০ টাকা, ডাবল সাড়ে ৩শ’ টাকা।
স্টেকের মধ্যে আছে টি-বোন আর সারলোইন স্টেক। টিবোন স্টেকের দাম ১ হাজার টাকা, সারলোইন মিনি স্টেক সাড়ে ৫শ’ টাকা আর ফুল সারলোইন স্টেক ৯শ’ টাকা।
জাওয়াদ বলেন, “অন্যান্য রেস্তোরাঁর তুলনায় আমাদের স্টেক আকারে কিছুটা বড় হয়। স্টেকের মাংস আমরা নিজেরাই কাটি। রান্নার দায়িত্বে আছেন সৌদি শেফ।”
সি ফুডের মধ্যে আছে সাড়ে ৫শ’ টাকায় ফিস অ্যান্ড চিপস। সাড়ে ৬শ’ টাকায় গ্রিলড পমফ্রেট। ৬শ’ টাকায় গ্রিলড রেড স্ন্যাপার এবং টিবিসি স্পাইসি প্রন সিঙ্গেল ৪শ’ টাকা, ডাবল ৭শ’ টাকা।
জাওয়াদ রহমান আরও বলেন, “মেন্যুতে বিভিন্ন ধরনের খাবার থাকলেও ক্যারামেল প্যাসটেল ডে লেচেস নামক ডেসার্ট সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়, এক স্লাইসের দাম ১৪০ টাকা। আমদানি করা দুধ দিয়ে তৈরি হয় এই স্পঞ্জ কেক। কেজি হিসেবেও বিক্রি করা হয়। দাম ১ হাজার ৫৫২ টাকা। অর্ডার দিতে হবে একদিন আগে। এছাড়াও আছে চিজ কেক, ডার্ক সিডাকশন কেক ও চকলেট চিজ কেক।”
তিনি জানান, চাকরিজীবি ক্রেতারাই বেশি আসেন রেস্তোরাঁয়। তাই বৃহস্পতিবার রাতে ভিড় বেশি হয়। বসার ব্যবস্থা আছে ২৪ জনের। ওয়াইফাই আছে এবং ফেইসবুক চেক-ইনে পাচ্ছেন ১০ শতাংশ ডিসকাউন্ট।