ত্বকের যত্নে দারুণ একটি উপাদান অ্যাপল সাইডার ভিনিগার বা এসিভি। তবে এসিভি'র তীব্র গন্ধের কারণে এই ভিনিগার অনেকেই অপছন্দ করে থাকেন।
Published : 30 Dec 2014, 05:01 PM
এসিভি তৈরি করতে ব্যবহার করা হয় আপেলের রস। আপেলের রস দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা হয় যাতে এই ফলের ভিতরে থাকা প্রাকৃতিক শর্করা ভিনিগারে রূপান্তরিত না হয়।
পরিশোধিত এসিভি ব্যবহার না করে অপরিশোধিত ও অরগনিক এসিভি ব্যবহার করা উচিত। ভালো মানের অ্যাপল সাইডার ভিনিগারের বোতলের নিচের স্তরে ভিনিগার ঘন হয়ে জমে থাকে। আর এতে থাকে উপকারী এনজাইম, ব্যাক্টেরিয়া, পেকটিন এবং খনিজ পদার্থ যা এসিভি-কে ভালো রাখতে সাহায্য করে।
রূপচর্চাবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে ত্বকের যত্নে অ্যাপল সাইডার ভিনিগারের উপকারিতা ও ব্যবহার পদ্ধতি তুলে ধরা হয়।
বয়সের ছাপ দূর করে
এসিভি-তে আছে শক্তিশালী আলফা হাইড্রক্সি অ্যাসিড যা মৃত কোষ দূর করে ত্বক সজীব ও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল করতে সাহায্য করে। কিছু কিছু ফেইসওয়াশে অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার থাকে।
আলফা হাইড্রক্সি অ্যাসিড যা ত্বকের তারুণ্য পুনরায় ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে। তবে বিভিন্ন প্রসাধনীতে এসিভি ব্যবহৃত হলে বিভিন্ন কেমিকেলের কারণে এসিভি’র কার্যকারিতা কমে আসে। তাই বিশুদ্ধ এসিভি ব্যবহার করা উচিত।
একটি তুলার বলে সামান্য পরিমাণ এসিভি নিয়ে সরাসরি ত্বকে লাগিয়ে ২০ থেকে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। এরপর পানি দিয়ে মুখ ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। দিনে দু’বার মুখ পরিষ্কারের জন্য অ্যাপল সাইডার ভিনিগার ব্যবহার করা যেতে পারে। উপকার পেতে কমপক্ষে ৬ সপ্তাহ এটি ব্যবহার করতে হবে।
ব্রণ ও ফুসকুড়ি দূর করে
ব্রণ ও ফুসকুড়ি দূর করার জন্য বাজারে অনেক দামী প্রসাধনী পাওয়া যায়। তবে অনেক সময়ই ওই সব প্রসাধনী ব্যবহারের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে। তবে অ্যাপল সাইডার ভিনিগার ব্যবহার করে কোনও ধরনের পার্শ্বপ্রক্রিয়া ছাড়াই ব্রণের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।
এসিভি তৈরি করার সময় ম্যালিস নামের এক ধরনের অ্যাসিড গঠিত হয় যা ত্বকের ব্রণ ও সংক্রামণ দূর করতে প্রয়োজনীয় অ্যান্টি-ব্যাক্টেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ফাঙ্গাল উপাদান তৈরি করে থাকে।
তাছাড়া এসিভি’তে থাকা প্রাকৃতিক উপাদান লোমকূপ খুলে ত্বক ঠিকভাবে শ্বাস নিতে সাহায্য করে যা ব্রণ ও ফুসকুড়ি দূর করার জন্য প্রয়োজনীয়। তাছাড়া এসিভি ত্বকের অতিরিক্ত তেল দূর করার পাশাপাশি ত্বকের পিএইচ লেভেল ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
ত্বক পরিষ্কার করতে অ্যাপল সাইডার ভিনিগার ব্যবহারের উপায়
* এসিভি বেশি ‘শক্তিশালী উপাদান’। তাই ত্বকে ব্যবহারের আগে এসিভির সঙ্গে কিছুটা পানি মিশিয়ে নিতে হবে। ত্বকে সরাসরি এসিভি ব্যবহার করা উচিত নয়। কারণ এতে থাকা অ্যাসিড ত্বকের ক্ষতি করতে পারে। এক্ষেত্রে চাইলে এসিভি’র সঙ্গে গ্রিন-টি বা অ্যালোভ্যারার জেল মিশিয়ে নিলে উপকার পাওয়া যাবে।
এভাবে কিছুদিন ব্যবহারের ফলে ত্বক অভ্যস্ত হয়ে গেলে এসিভি’র পরিমাণ বাড়িয়ে নেওয়া যাবে। এটি ত্বকের সহনশীলতার উপর নির্ভর করবে।
সবশেষে পানি ও এসিভি’র মিশ্রণ ঠিক রাখতে ব্যবহারের আগে অবশ্যই এসিভি ঝাকিয়ে নিতে ভুলবেন না।
* যারা ত্বকে প্রথমবার এসিভি ব্যবহার করবেন তারা মুখে লাগানোর ৫ মিনিট পর হালকা গরম পানি দিয়ে পরিষ্কার করে ফেলবেন। তবে প্রথমবার এসিভি ব্যবহারের ফলে ত্বকে যদি কোনও নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা না যায় তাহলে আরও কিছু সময় ত্বকে লাগিয়ে রাখা যাবে। এতে করে ত্বকের সহনশীলতা বাড়বে।
সবচেয়ে ভালো হয় রাতের বেলা এসিভি টোনার হিসেবে ব্যবহার করা। আর এসিভি লাগিয়ে রোদে বের হওয়া উচিত নয়, কারণ সূর্য়ের অতি-বেগুনি রশ্মি এসিভির জন্য ক্ষতিকর।
* ত্বকের পাশাপাশি শরীরের অন্যান্য অংশেও এসিভি ব্যবহার করা যাবে। যাদের পিঠে ব্রণের সমস্যা আছে তারা পিঠেও এসিভি ব্যবহার করতে পারেন।
সৌভাগ্যক্রমে, পিঠের ব্রণ দূর করতেও এটি চমৎকার কার্যকারী। বোতলে পানির সঙ্গে এসিভি মিশিয়ে পিঠে সরাসরি স্প্রে করা যেতে পারে।
তারপর এসিভি ব্যবহার করা ত্বক ময়েশ্চারাইজ করতে যে কোনও প্রাকৃতিক তেল বা যা আপনার ত্বকে ভালো যায় সেটা ব্যবহার করতে পারেন।