হারিয়ে যেতে বসেছে সাদা কালো পান্ডা।
Published : 10 Nov 2015, 06:37 PM
কুংফু পান্ডা সিনেমাটির কথা তোমাদের মনে আছে কি? সেই যে নাদুসনুদুস পু নামের পান্ডাটি যে সমাজের সব অনিষ্টকারীদের কুংফু’র প্যাঁচে কুপোকাত করে ফেলে? পু নামের সেই মজার পান্ডাটির কাজগুলো কাল্পনিক হলেও সাদাকালো রঙের ভালুকের মতো দেখতে পান্ডা নামের একটি প্রাণী কিন্তু আসলেই পৃথিবীতে রয়েছে। তবে এই প্রাণীটিকে দেখা বা জানার সুযোগ বেশ কম। এরা পৃথিবীর অন্যতম বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীর তালিকায় ইতিমধ্যে চলে গিয়েছে। আগে সমগ্র চায়না জুড়ে ওদের দাপট ছিল। এখন শুধু দক্ষিণ-পশ্চিম চায়নার কুয়াশাচ্ছন্ন,বৃষ্টিবহুল পাহাড় এবং ঘন বাঁশের জঙ্গলে এদের বাস। আরও সঠিকভাবে বলতে গেলে, এখন শুধু সিচুয়ান প্রদেশেই এদের দেখতে পাওয়া যায়। তবে সেখানেও আর কতদিন দেখা যাবে এটা বলা কঠিন। ধারণা করা হয় ভালুকের এই সাদাকালো প্রজাতিটির আর মাত্র ১০০০টি অবশিষ্ট আছে।
এবার এই জায়ান্ট পান্ডাদের মজাদার খাদ্যাভ্যাসের কথা বলি। পান্ডারা বাঁশের কচি ডাল আর পাতা ছাড়া অন্য কিছু মোটেই মুখে তোলে না। কখনও-সখনও শখ করে বা বিপদে পড়ে অন্য উদ্ভিদ, মাছ বা ছোট প্রাণীও যদিও বা খেয়ে ফেলে, তবুও, ৯৯ শতাংশ সময় তাদের খাদ্যতালিকাতে থাকে বাঁশের বিভিন্ন অংশ। আর পান্ডাদের আঁকার দেখেই বুঝতে পারছো ওরা কেমন পেটুক হতে পারে! বিষয়টি আসলেও তাই। ওরা খুব দ্রুত খেতে পারে, আর খাদ্যের পরিমাণও হতে হয় অনেক বেশি। বলতে গেলে দিনের বেশিরভাগ সময় এরা খাওয়ার পেছনেই ব্যয় করে। দিনে প্রায় বারো ঘণ্টার মতো সময় ধরে এরা খায়!
তবে সত্যি বলতে কি, এত খায় বলে ওরা কিন্তু মোটেই পেটুক না। এর বেশি খাওয়া ওদের খেতে হয় অনেকটা বাধ্য হয়েই। কেননা পান্ডারা যা খায় তার মাত্র পাঁচ ভাগ হজম করতে পারে। এছাড়াও বাঁশ খুব একটা পুষ্টিকর খাবারও নয়। তাই সুস্থ থাকতে ওদের অনেক বেশি পরিমাণে খাবার খেতে হয়। পান্ডারা নিজেদের দেহের ওজনের ১৫ শতাংশ সমান খাবার খেতে বারো ঘণ্টা লাগে।
পান্ডারা খুবই লাজুক এবং নিরীহ প্রকৃতির হয়। মানুষ যেইসব অঞ্চলে বাস করে তার ধারে-কাছেও তারা আসে না। এর জন্যেই পান্ডাদের থাকবার স্থান দিন দিন কমে আসছে। বিভিন্ন কারণে এই প্রাণীরা এখন বিলুপ্তির মুখে। এদের বাঁচিয়ে রাখবার জন্য অনেক সংস্থা কাজ করে যাচ্ছে কিন্তু যে হারে মানুষের সংখ্যা বেড়ে চলেছে এদের বেঁচে থাকা এখন প্রশ্নের মুখে।