মায়ার 'অত্যাচার'-এ আপ্লুত সৌমিত্র

'ফেলুদা', 'অপু' কিংবা 'অমল' - নানা নামে, নানা রূপে যিনি বাংলা চলচ্চিত্রের দর্শকদের হৃদয়ে স্থায়ী আসন গড়ে নিয়েছেন, সেই সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় এলেন ঢাকায়। শুক্রবার ঢাকার শিল্পকলা একাডেমীতে গঙ্গা-যমুনা নাট্যোৎসব উদ্বোধন করতে এসে বাংলাদেশিদের আতিথেয়তায় আপ্লুত হয়ে পড়লেন।

ইমতিয়াজ হাসানবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Sept 2015, 05:30 AM
Updated : 5 Sept 2015, 06:05 AM

“অত্যাচার মানেই কষ্ট নয়, কিছু অত্যাচার আদরের, মায়ার। আর খুব ভালোবাসার। আর এ অত্যাচার আমার ভীষণ প্রিয়।”

আরও বললেন, ‘‘এত মানুষ দেখে আমার রক্তে চাঞ্চল্য এসে গেছে। পাশাপাশি একটু নার্ভাসও বটে। কারণ এত মানুষ আমাকে ভালোবাসে, তারা এসেছে আমার অভিনয় দেখতে। কিন্তু আমার তো বয়স হয়ে গেছে, ভুলত্রুটি শুধরে আমি কি পারবো তাদের কাঙ্ক্ষিত অভিনয়টা দিতে?”

জানালেন, যতবারই এদেশে এসেছেন ততবারই মানুষের ভালবাসা তাকে আবেগী করে তুলেছে। 

“অনেকবার এসেছি এ দেশে। যতবার এসেছি, ততবারই আপ্লুত হয়েছি মানুষের অপরিমেয় ভালবাসায় প্রথমবার যখন এসেছিলাম, সেবার কেঁদেছিলাম। আমারই মতো সব মানুষ, ভাষা এক, সংস্কৃতিও এক; কিন্তু আমরা দুই দেশের বাসিন্দা। আমাকে তা খুব পীড়া দেয়।”

বক্তব্যের শেষাংশে খ্যাতিমান এই অভিনেতা আবৃত্তি করে শোনান কবি জীবনানন্দ দাশের কবিতা ‘বাংলার মুখ আমিদেখিয়াছি’।

শিল্পকলা একাডেমীর জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় উদ্বোধন হল নয় দিন ব্যাপী ‘গঙ্গা-যমুনা নাট্য ও সাস্কৃতিক উৎসব-২০১৫’। নাটোৎসব পর্ষদের আহ্বায়ক গোলাম কুদ্দুছের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রদীপ জ্বালিয়ে উৎসবের উদ্বোধন করেন পশ্চিমবঙ্গের অভিনয়শিল্পী সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ও বাংলাদেশি অভিনেত্রী ফেরদৌসী মজুমদার।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। তিনি বলেন, ‘‘ভারতের সাথে আমাদের বন্ধন রক্ত-আত্মা-সংস্কৃতির বন্ধন। পাশাপাশি এ কথাও সত্য যে, সংস্কৃতি দিয়েই মানুষের মন ছোঁয়া যায়, জয় করা যায়। তাই আমাদের সকলকে সুস্থ ধারার সংস্কৃতি চর্চায় মনোনিবেশ করতে হবে।”

গঙ্গা-যমুনা নাট্য ও সাংস্কৃতিক উৎসবের এবারের আয়োজনে শুক্রবার আরো উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আল মুহিত, ভারতীয় হাইকমিশনার পঙ্কজ সরণ, বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানের চেয়ারম্যান ও শিল্পকলা একাডেমীর মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে মূল হলে মঞ্চস্থ হয় ভারতের নাট্যদল সংস্তবের ‘ছাড়িগঙ্গা’ এবং প্রাচ্যনাটের ‘ট্র্যাজেডি পলাশবাড়ি’। 

উন্মুক্ত মঞ্চের সাংস্কৃতিক পর্বে প্রতিদিন বিকাল ৫টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত চলবে ভারত ও বাংলাদেশের বিভিন্ন নাট্যদলের পথনাটক, মঞ্চনাটক, আবৃত্তি, গণসঙ্গীত ও নৃত্য।

ছবি-- আব্দুল মান্নান দীপ্ত, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম