মূসক দেয় না কয়েক লাখ প্রতিষ্ঠান, অর্থমন্ত্রীর অসন্তোষ

বাংলাদেশে মূল্য সংযোজন কর বা মূসক দেওয়ার উপযুক্ত সব প্রতিষ্ঠান থেকে কর না পাওয়ায় অসন্তোষ জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 July 2015, 01:29 PM
Updated : 12 July 2015, 01:44 PM

রাজস্ব আয়ের উপর ভর করে চলতি অর্থবছরের জন্য তিন লাখ কোটি টাকার বাজেট দেওয়া মুহিত রোববার জাতীয় মূসক দিবস ও সপ্তাহের অনুষ্ঠানে বক্তব্যে নিজের অসন্তুষ্টির কথা জানান।

শেরে বাংলা নগরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে জাতীয় পর্যায়ে সর্বোচ্চ মূসকদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সম্মাননা দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশে মাত্র ৬০ হাজার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মুসক দেয়।

বাংলাদেশে কি মাত্র ৬০ হাজার প্রতিষ্ঠান মূসক প্রদানের উপযুক্ত- এই প্রশ্ন করে নিজেই উত্তর দেন তিনি।

“আমার তো মনে হয় ৩ থেকে ৬ লাখ প্রতিষ্ঠান মূসক প্রদানের উপযুক্ত, কিন্তু তারা কর প্রদান করেন না।”

মুহিত বলেন, আগামী অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের যে ১ লাখ ৭৬ হাজার কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে, তার মধ্যে আয়কর ও মূসক মিলিয়ে ১ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করতে হবে।

মূসকের সঙ্গে আয়কর দাতাদের সংখ্যা নিয়েও নিজের অসন্তোষ জানান তিনি।  

“আমাদের ১৫ কোটি মানুষের দেশে প্রায় ৪ কোটি লোক আয়কর প্রদানের উপযুক্ত হলেও মাত্র ১১ লাখ লোকে কর প্রদান করেন। আমার মতে, মানুষের উন্নয়নের জন্য, সুযোগ-সুবিধার জন্য ও একটু ভালোভাবে সবার বাঁচার জন্য কর প্রদানে যারা উপযুক্ত তাদের সবার এগিয়ে আসা উচিত।”

মূসক বা ভ্যাট দিতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে মুহিত বলেন, “মূসক একটি ভালো কর, ন্যায় কর। আপনারা মূসক কর প্রদান করে রাজস্ব আদায়ে আপনারা আমাদের সহযোগিতা করুন।”

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন আগামী বছর থেকে পুরোপুরি কার্যকর হবে বলেও জানান তিনি।

“নতুন আইন নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে এবং এর জন্যে পর্যালোচনা কমিটিও কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের লক্ষ্য ব্যবসাবান্ধব, সহজ ও স্বচ্ছ মূসক ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।”

অনুষ্ঠানে অন্য বক্তারাও সামর্থ্যবান নাগরিকদের কর ও মূসক দিয়ে জনগণের সেবার কাজটি ত্বরান্বিত করার আহ্বান জানান।

বিশেষ অতিথি অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সাবেক খাদ্যমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকও সামর্থ্যবানদের কর না দেওয়া নিয়ে অসন্তোষ জানান।

তিনি বলেন, “উন্নয়নে এখন দেশীয় উৎস থেকেই বেশি সম্পদ আহরণ করা হচ্ছে। এক সময় জিডিপির প্রায় ৭/৮ ভাগ বৈদেশিক সহায়তার প্রয়োজন হলেও এখন তা ১/২ ভাগে নেমে এসেছে।”

অনুষ্ঠানে সেরা মূসকদাতা হিসেবে জাতীয় ও জেলা পর্যায়ের ১১৯ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করা হয়। ২০১৩-১৪ অর্থবছরের সেরা ভ্যাটদাতা হিসেবে জাতীয় পর্যায়ে নয়টি প্রতিষ্ঠান এবং জেলা পর্যায়ের ১১০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন অর্থমন্ত্রী।

এনইবিআরের সদস্য (শুল্ক নীতি) ফরিদ উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা মশিউর রহমান, এফবিসিসিআই সভাপতি আব্দুল মাতলুব আহমাদ।