প্রবৃদ্ধি: বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গে একমত নন মুস্তফা কামালও

অর্থমন্ত্রীর পর পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিয়ে বিশ্ব ব্যাংকের পূর্বাভাসের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছেন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 April 2015, 03:44 PM
Updated : 16 April 2015, 09:54 AM

চলতি ২০১৪-১৫ অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে (জুলাই-মার্চ) মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) সাড়ে ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেছেন, গত কয়েক মাসে রাজনৈতিক অস্থিরতায় যে ক্ষতি হয়েছে তার পরিমাণ জিডিপির শূন্য দশমিক ১ শতাংশ।

বুধবার এক মিট দ্যা প্রেস অনুষ্ঠানে পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, চলতি অর্থবছরে শেষ পর্যন্ত জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৬.৫ থেকে ৭ শতাংশের মাঝামাঝি হবে বলে তিনি আশা করছেন।

রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এই মিট দ্যা প্রেস অনুষ্ঠানে পরিকল্পনা বিভাগের সচিব শফিকুল আজম, পরিসংখ্যান বিভাগের সচিব কানিজ ফাতেমা এবং পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য শামসুল আলমও উপস্থিত ছিলেন।  

বছরের শুরুর তিন মাসের রাজনৈতিক সহিংসতায় ১৭ হাজার ১৫০ কোটি টাকার ক্ষতির তথ্য দিয়ে গত ১২ এপ্রিল এক প্রতিবেদনে বিশ্ব ব্যাংক পূর্বাভাস দেয়, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশ ৫ দশমিক ৬ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি  পেতে পারে।

তিন মাসের সহিংসতায় আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) এক শতাংশ বলেও ওই প্রতিবেদনে হিসাব দেওয়া হয়।

ওইদিনই এক অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, প্রবৃদ্ধি নিয়ে বিশ্ব ব্যাংকসহ ঋণদাতা আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর পূর্বাভাসকে তিনি আমলে নিচ্ছেন না।

তার ভাষায়, “বিশ্ব ব্যাংক, আইএমএফ ও এডিবি সবসময়ই ভুল প্রক্ষেপণ করে।”

পরিকল্পনা মন্ত্রীও মনে করছেন, জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ৬ শতাংশে নেমে আসার যে পূর্বাভাস বিশ্ব ব্যাংক দিয়েছে তার কোনো ‘ভিত্তি’ নেই।

“রাজনৈতিক অস্থিরতায় পরিবহন খাতের ক্ষতি হয়েছে। আর ব্যবসায়ীদের ব্যয় কিছুটা বেড়েছে। কিন্তু কোনো শিল্পকারখানার ক্ষতি হয়নি। এমনকি কোনো শ্রমিকেরও চাকরি যায়নি।”

এদেশে ‘বারো মাস হরতাল হলেও’ জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশে নিচে মানবে না বলে মুস্তফা কামালের বিশ্বাস।

বিভিন্ন খাতে নয় মাসের অগ্রগতির তথ্যও সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন মন্ত্রী।

তিনি বলেন, “কৃষি খাতে আউশ ধানের ফলন হয়েছে ২৩ দশমিক ২৮ লাখ টন। গত বছর হয়েছিল ২৩ দশমিক ২৬ লাখ টন। গত বছর আমনের উৎপাদন ছিল ১৩০ দশমিক ২৩ টন। এবার হয়েছে ১৩১ দশমিক ৯০ লাখ টন। বোরো, গম ও আলুর তথ্য এখনও হাতে আসেনি। আমি আশাবাদী, এ কয়টি উপখাতে উৎপাদন গত বছরের চেয়ে বেশি হবে। বোরোতেও বাম্পার ফলন হবে।”

মন্ত্রী জানান, নয় মাসের হিসাবে শিল্প খাতে প্রবৃদ্ধি ৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ। ক্ষুদ্র শিল্পে  প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১০ দশকি ৬৬ শতাংশ।

পাইকারী ও খুচরা ব্যবসা উপখাতে এ বছর ৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকলেও পরিবহন খাতে এই হার ‘নগন্য’ হবে বলে তিনি পূর্বাভাস দেন।

রাজস্ব আহরণের প্রবৃদ্ধির তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, “গত অর্থ বছরের এই সময় পর্যন্ত রাজস্ব আহরণের পরিমাণ ছিল ৬৮ হাজার ৬৯৮ কোটি টাকা। এ বছর তা ৭৯ হাজার ৯৭৮ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে । এক্ষেত্রে ১৬ দশমিক ৪২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।”