‘বাজারের চিৎকারে’ আবগারি শুল্কে পরিবর্তন আনছেন মুহিত

ঘরে বাইরে সমালোচনায় বিদ্ধ হওয়ার পর বাজেটে প্রস্তাবিত বাড়তি আবগারি শুল্ক হারে পরিবর্তন আনার কথা বলেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 June 2017, 10:35 AM
Updated : 18 June 2017, 12:08 PM

তিনি বলেছেন, বাজেটে ওই প্রস্তাব নিয়ে বাজারে ‘এত চিৎকার’ হচ্ছে যে, সবাইকে স্বস্তি দিতে তিনি সংসদে কথা বলার আগেই পরিবর্তনের বিষয়টি জানিয়ে রাখছেন।

রোববার সচিবালয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয় এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ২০১৮ সালের বার্ষিক কর্মসম্পাদনা চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে আবগারি শুল্ক নিয়ে কথা বলেন অর্থমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “আমি ইতোমধ্যে বলেছি, এত চিৎকার যখন বাজারে আছে, সুতরাং এগুলো একটু… সাম পরিবর্তন সেখানে হবে।

“কথাটা বললাম এজন্য যে কথাটি পার্লামেন্টে বলতে আমার অনেক দেরি হবে। পার্লামেন্টে বলতে ২৮ তারিখ পর্যন্ত চলে যাবে। তার আগেই যাতে একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস অনেকে ফেলতে পারে, সেজন্য কথাটা বললাম।”

গত ১ জুন সংসদে ঘোষিত বাজেট প্রস্তাবে ব্যাংক গ্রাহকদের ওপর বাড়তি হারে আবগারি শুল্ক আরোপের এই প্রস্তাব করেন মুহিত।

সেখানে বলা হয়, বছরের যে কোনো সময় ব্যাংক হিসাবে এক লাখ টাকার বেশি স্থিতি থাকলে আবগারি শুল্ক বিদ্যমান ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০০ টাকা করা হবে।

পাশাপাশি ১০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত ১ হাজার ৫০০ টাকার বদলে ২ হাজার ৫০০ টাকা, ১ কোটি থেকে ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত ৭ হাজার ৫০০ টাকার বদলে ১২ হাজার টাকা এবং ৫ কোটি টাকার বেশি লেনদেনে ১৫ হাজার টাকার বদলে ২৫ হাজার টাকা আবগারি শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী।

সাধারণ নাগরিকদের পাশাপাশি ব্যবসায়ী, ব্যাংকার ও অর্থনীতিবিদরাও আবগারি শুল্ক বাড়ানোর ওই প্রস্তাব প্রত্যাহারের দাবি জানান। তারা বলেন, শুল্ক বাড়লে লেনদেনের অবৈধ মাধ্যম উৎসাহিত হবে।

জাতীয় সংসদে ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দলীয় কয়েকজন সাংসদও অর্থমন্ত্রীর প্রস্তাব প্রত্যাহারের আহ্বান জানান।

এই আলোচনা প্রসঙ্গে মুহিত রোববার বলেন, “আমাদের আর্থিক খাত নিয়ে অনেক সমালোচনা বাজারে প্রচলিত। বিশেষ করে বাজেট দেওয়ার পর সেই সমালোচনা আরও একটা উচ্চ মার্গে পৌঁছে গেছে।

“অনেক সময় হয়কি... আমার মনে হয়, আমার ধারণা, যখন আর কোনো কিছু খুঁজে পাওয়া না যায়, তখন কোনো একটা কিছু বের করতে হয়। এবারে সেটা খুব বেশি ভাবে হয়েছে।”

হারের পাশাপাশি ‘আবগারী শুল্ক’ নামটিও পরিবর্তন করা হবে বলে জানান অর্থমন্ত্রী। 

“নামটা ঠিক নয় বোধ হয়, নামটা আমরা পরিবর্তন করব। আবগারী শুল্ক নামটা কোনো মতেই হওয়া উচিত নয়। এটা ইজ পার্ট অব দ্য ইনকাম ট্যাক্স। যাই হোক, কীভাবে বর্ণনা করা যায় সেটা চিন্তা করা যাবে।”

আর এই শুল্ক মোটেও নতুন নয় জানিয়ে মুহিত বলেন, “বহুবছর ধরে ব্যাংকগুলো দিয়ে যাচ্ছে, যাদের অ্যাকাউন্ট আছে তারা প্রত্যেকে দিয়ে যাচ্ছে। এটা নতুন কিছু নয়। রেইটস একটু বাড়ছে এ বছরে। কিন্তু সুযোগও বেড়েছে।

“২০ হাজার টাকা থাকলেই আগে দিতে হত, এখন সেটা আমরা এক লাখ টাকা পর্যন্ত উন্নীত করে দিয়েছি। এক লাখ পর্যন্ত জিরো।”

ওই শুল্ক নিয়ে ‘খুবই আলাপ-আলোচনা হয়েছে’ মন্তব্য করে অর্থমন্ত্রী বলেন, “আমি ইতোমধ্যে বলেছি, বাজেটে যেটা হয় সেটা তো প্রস্তাব। যখন পাস হয়ে তখন সেইসব প্রস্তাবের অনেকগুলো পরিবর্তিত হয়। বিশেষ করে এই ধরনের বিষয়। যেখানে রেইট ৮০০ টাকা হল না ৫০০ টাকা হল, এ ধরনের ব্যাপারে পরিবর্তন হয়।”