ষোড়শ সংশোধনী বাতিলে ‘লজ্জায় মাথা হেঁট’: এরশাদ

ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে আপিল বিভাগের দেওয়া রায় পড়ে ‘লজ্জায় মাথা হেঁট’ হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 August 2017, 01:32 PM
Updated : 7 August 2017, 02:32 PM

সোমবার চট্টগ্রামে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এলে নগরীর পাঁচ তারকা রেডিসন ব্লু চিটাগাং বে বিউ হোটেলে সংবাদকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।

উচ্চ আদালতের বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে নিতে ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদ সংশোধনের প্রস্তাব সংসদে পাস হয়, যা ষোড়শ সংশোধনী হিসেবে পরিচিত।

সুপ্রিম কোর্টের নয়জন আইনজীবীর এক রিট আবেদনে হাই কোর্ট ২০১৬ সালে সংবিধানের ওই সংশোধনী ‘অবৈধ’ ঘোষণা করে। গত ৩ জুলাই আপিল বিভাগেও ওই রায় বহাল থাকে, যার পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি গত মঙ্গলবার প্রকাশ করা হয়।

রায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে এরশাদ বলেন, “রায়টা পড়ার পরে মনে হয়েছে আমরা খুব দুর্ভাগ্যবান। আমাদের লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে গেছে।

“কোনো ইন্সটিটিউশনই ইনটেক নাই, সমস্ত ডেস্ট্রয়েড। করাপশন র‌্যামপেন্ট, ক্ষমতার মোহ র‌্যামপেন্ট।”

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ‘সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ’ হবে বলে আশা প্রকাশ করে এরশাদ বলেন, “সমস্ত কিছু নির্ভর করবে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের ওপর। উনি যদি আর্মি চান, সরকার আর্মি দিতে বাধ্য হবে। ডিসির পোস্টিং চান- ডিসির পোস্টিং করতে সরকার বাধ্য হবে। অসীম ক্ষমতা উনার সেসময় থাকবে।

“সে ক্ষমতা উনি খাটাবেন কি না এবং সত্যিকারভাবে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করবেন কি না সেটা নির্ভর করে তার উপর।”

প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূতের দায়িত্বে থাকা এরশাদ বলেন, “আস্থা রাখছি, উনি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেবেন জাতিকে। যদি না পারেন নির্বাচনের পরে সেটা বলা হবে যে, উনি পারেন নাই। আশা করি পারবেন।”

সম্প্রতি দেশে ধর্ষণের ঘটনা বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, “প্রতিদিন খবরের কাগজের পাতা খোলো- খালি ধর্ষণ আর খুন। আর কিছু নাই। আমি সেদিন বলেছি এদেশে নারী হয়ে জন্মানো একটা মহাপাপ, অভিশাপ।

“নারীর ক্ষমতায়নের কথা শুনি। সেটা হলো ঢাকা শহরে। বাইরে গ্রামেগঞ্জে মেয়েরা নিরাপদ নয়। আমরা প্রতিদিন খবরের কাগজে পড়ি। সব খবর তো আসে না। যেটুকু পড়ি, দুঃখ হয়। আমরা এমন ছিলাম না। কি কারণে এটা হচ্ছে?”

যতদিন পর্যন্ত রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আসবে না ততদিন বাইরের লোক বিনিয়োগ করতে আসতে পারবে না বলেও মন্তব্য করেন এরশাদ।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমরা তো বিরোধী দল। আমরা কোনো অ্যালায়েন্সে নাই। যদিও নামমাত্রে বিরোধী দল, তাও বিরোধী দল।

“আমরা এখন ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। জাতীয় পার্টি স্বপ্ন দেখছে আগামী নির্বাচনে ভালো করে আমরা ক্ষমতায় যাব।”

সবকটি সংসদীয় আসনে তার দল নির্বাচন করবে জানিয়ে এরশাদ বলেন, “৩০০ আসনে প্রার্থী দিয়ে এককভাবে নির্বাচন করবে জাতীয় পার্টি, এটা আমাদের পার্টির সিদ্ধান্ত। এই সিদ্ধান্তে এখনো অটল আছি আমরা। আগামীতে কি হয় বলতে পারব না।”

এসময় তার সাথে ছিলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু এবং সোলায়মান আলম শেঠ।