চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় এবার স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা হয়েছে।
Published : 22 Jun 2017, 07:56 PM
বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আ স ম শহীদুল্লাহ কায়সারের আদালতে মামলাটি করেন এক অটোরিকশা চালক।
আগের দিন একই আদালতে গাড়িবহরে হামলার অভিযোগে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা হয়।
বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনের ৪ ও ৫ ধারায় অটোরিকশা চালক মহসিনের করা মামলাটি আমলে নিয়ে আদালত তা তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) ১৯ জুলাই পর্যন্ত সময় দিয়েছেন।
বাদীর আইনজীবী নিখিল কুমার নাথ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, রাঙ্গুনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে বিএনপির গাড়ি বহর দুই অটোরিকশা চালককে ধাক্কা দেয়।
“স্থানীয়রা ছুটে গেলে তখন বিএনপির গাড়ি বহর থেকে নেমে নেতাকর্মীরা তাদের মারধর করে এবং দুটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাঙচুর করে।”
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হওয়ার পর বৃহস্পতিবার বাদি মামলাটি করেন বলে জানান আইনজীবী নিখিল কুমার নাথ।
যাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে তারা হলেন- শওকত আলী নূর, নিজামুল হক স্বপন, ইউসুফ মিঞা চৌধুরী, মাহাবুব ছাফা, রফিকুল ইসলাম, মাসুদুল হক, আনসুর আলী, নিজাম উদ্দিন, করিম, জিয়াউর রহমান, মুরাদ, ইলিয়াছ, বাবুল, ফারুক, আলমগীর, আজিজুল হক, হাবিবুর রহমান, ওমর ফারুক, সাইফুল, সৈয়দ নূর, নুরুল আলম, গোলাম নবী, এম এ আজিজ, মোস্তাফিজুর রহমান, সাইফুর রহমান ও হানিফ সওদাগর।
এদের মধ্যে শওকত আলী নূর রাঙ্গুনিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক, নিজামুল হক স্বপন যুগ্ম আহ্বায়ক ও ইউসুফ মিঞা চৌধুরী সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক।
মামলার বাদী মহসিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে বিল জমা দিতে যাওয়ার সময় পিছ থেকে একটা গাড়ি আমাকে ও আবদুল আজিজ ইমনকে ধাক্কা দেয়।
“গাড়িতে কে ছিল আমি দেখিনি। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছিলাম। সেখানে খুব দুর্গন্ধ তাই সেই রাতেই চলে আসি।”
টেলিফোনে কথোপকথনের এক পর্যায়ে মহসিন তার ভাষ্য পরিবর্তন করে বলেন, “উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে দাঁড়িয়েছিলাম। তখন একটি গাড়ি ধাক্কা দেয়।”
গাড়িটিতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি নেতারা ছিলেন জানিয়ে তাদের কেন আসামি করা হয়নি জানতে চাইলে মহসিন বলেন, “গাড়িতে কে ছিল জানি না।”
মামলার আসামিরা বিএনপি নেতাকর্মী এটা জানেন কি না জানতে চাইলে মহসিন বলেন, “আমার আওয়ামী লীগ-বিএনপির দরকার নেই। আমি আঘাত পেয়েছি। তাই বিচার চেয়ে মামলা করেছি।
“তদন্তে জানা যাবে ওই গাড়িতে কে ছিল।”
বুধবার একই আদালতে বিএনপিপন্থী আইনজীবী ও চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক বাদি হয়ে বিএনপি নেতাদের গাড়ি বহরে হামলার ঘটনায় একটি মামলা করেন।
ওই মামলায় ২৬ জন স্থানীয় যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়।
সেই মামলাটিও পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
১৮ জুন রাঙামাটিতে পাহাড় ধসে ক্ষতিগ্রস্থদের সহমর্মিতা জানাতে যাওয়ার পথে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ নেতাদের বহনকারী গাড়ি বহরে ইছাখালী বাজার এলাকায় হামলার ঘটনা ঘটে।
সেদিনই বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী হামলার জন্য আওয়ামী লীগ নেতা ও রাঙ্গুনিয়ার সাংসদ হাছান মাহমুদকে দায়ী করেন।
হাছান মাহমুদ তখন বলেছিলেন, বিএনপি নেতাদের গাড়িবহরের ধাক্কায় দু’জন আহত হওয়ার পর স্থানীয়রা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। পরে আবার বিএনপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্ধের কারণে এ হামলা বলেও মন্তব্য করেন হাছান।