বাড়তি কর বাতিল চেয়ে কর্মবিরতির হুমকি ট্রাক-কভার্ড ভ্যান মালিকদের

বর্ধিত কর প্রত্যাহার ও স্কেলে চাঁদাবাজি বন্ধসহ নয় দফা দাবি না মানলে ৩০ জুন থেকে কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছে মালামাল পরিবহনে কাজ করা আন্তঃজেলা ট্রাক ও কভার্ডভ্যান মালিক সমিতি।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 May 2017, 03:27 PM
Updated : 25 May 2017, 03:27 PM

বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী জাফর আহাম্মদ বলেন, ট্রাক-কভার্ড ভ্যানের জন্য সিটি করপোরেশন আগের ৫০০ টাকার স্থলে ১০ হাজার টাকা কর ঘোষণা করেছে।

“অথচ প্রাইম মুভার থেকে সিটি করপোরেশন আগের মত ৫০০ টাকা কর আদায় করছে।”

প্রশ্নের জবাবে চৌধুরী জাফর আহাম্মদ বলেন, ট্যাংক লরি মালিকরা কিছুদিন আগে ধর্মঘট করল। মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাহেব বিআরটিএকে বলে তাদের কর মওকুফ করে দিলেন।

“ট্যাংক-লরি চলে দেড় হাজার, আমাদের গাড়ি পাঁচ হাজার। তাহলে এ বৈষম্য কেন? এক দেশে দুই নীতি কেন তার কাছে জানতে চাই। যদি আমরা গাড়ি বন্ধ করি তাহলে কি উনার (ওবায়দুল কাদের) সম্মান যাবে না?”

লিখিত বক্তব্যে চৌধুরী জাফর আহাম্মদ অভিযোগ করেন, “সারা দেশের কোথাও স্কেল না থাকলেও সড়ক-মহাসড়ক রক্ষার নামে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে স্কেল স্থাপন করে ওভার লোডিং নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।”

ওভার লোড নিয়ন্ত্রণ সময়ের দাবি মন্তব্য করে তিনি বলেন, “তবে জরিমানা প্রথার মাধ্যমে নয়, সরকার ঘোষিত নীতিমালার ভিত্তিতে লোড পয়েন্টে ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ওভার লোড নিয়ন্ত্রণের নামে স্কেলে চাঁদাবাজি, ড্রাইভার হেলপারকে মারধর, গাড়ি ভাংচুরসহ সব হয়রানি বন্ধ করতে হবে।”

প্রশ্নের জবাবে জাফর আহাম্মদ বলেন, বড়দারোগা হাট ও দাউদকান্দি এলাকায় স্কেল পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারের মাস্তান বাহিনী ট্রাক চালক ও শ্রমিকদের মারধর ও গাড়ি ভাংচুর করে।

“যমুনা সেতু এলাকায় দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী স্কেল পরিচালনা করে। সেখানে কোনো সমস্যা হয় না। সুষ্ঠুভাবে এ দুটো স্কেল পরিচালনা করতে চাইলে সেনাবাহিনী নিয়োগ করলেই ভালো হবে।”

চৌধুরী জাফর আহাম্মদ বলেন, “৩০ জুনের মধ্যে নয় দফা দাবি মেনে নেয়া না হলে লাগাতার কর্মবিরতি দিতে আমরা বাধ্য হব।”

তিনি বলেন, “চারলেন মহাসড়ক জাতীয় সম্পদ। স্কেলে চাঁদা দিলে যদি অতিরিক্ত ওজনের গাড়ি যেতে পারে তখন কি মহাসড়কের ক্ষতি হচ্ছে না?

“আবার স্কেলে না উঠেই অফ ডকের অধীনে থাকা ওভার লোডেড গাড়ি নির্বিঘ্নে চলেও যাচ্ছে।”

নয় দফা দাবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- সড়ক পরিবহন আইন-২০১৭ এর পরিবহন মালিক-শ্রমিকের স্বার্থ পরিপন্থি ধারা সংশোধন, নির্মিতব্য বে-টার্মিনালের পাশে নৌমন্ত্রী প্রতিশ্রুত ট্রাক-কভার্ড ভ্যান টার্মিনাল নির্মাণ, ডকুমেন্ট ও ড্রাইভিং লাইসেন্স চেকিংয়ের নামে পুলিশি হয়রানি ও ১৫১ ধারায় মামলা বন্ধ করা, সহজ পদ্ধতিতে চালকদের নতুন লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়ন এবং মহাসড়কে ট্রাক-কর্ভাডভ্যান থেকে মালামাল ‍চুরি বন্ধ করা।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মালিক সমিতির সভাপতি লতিফ আহাম্মদ, কার্যকরী সভাপতি অনিল চন্দ্র পাল, সহ-সভাপতি এম কিবরিয়া দোভাষ, যুগ্ম সম্পাদক আরিফুর রহমান রুবেল, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ সুফিউর রহমান টিপু, ট্রাক চালক সমিতির সভাপতি এম এ সবুর ও ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি শফিকুর রহমান।