কেন্দ্রের বাইরে ভোটারদের দীর্ঘ লাইন; আছে পুলিশ এবং র্যাব সদস্যরাও। আর ভেতরে চলছে, নৌকায় সিল। বুধবার ভোটের সকালে মিরসরাই ও বারৈয়ারহাট পৌরসভার কয়েকটি কেন্দ্রে এমন চিত্র পাওয়া যায়।
Published : 30 Dec 2015, 06:55 PM
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বারৈয়ারহাট পৌরসভার বারৈয়ারহাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য ঢুকতে চাইলে সাংবাদিকদের বাধা দেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।
এসময় ‘ভোট শেষ, ব্যালট নাই’- বলে ওই কেন্দ্রের নারী ভোটারদের প্রবেশে বাধা দেওয়া হচ্ছিল স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মূছার নেতৃত্বে।
কেন্দ্রের বাইরে দীর্ঘ লাইন থাকলেও ভেতরে সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তার সামনেই নৌকা প্রতীকে সিল মারছিল বেশ কয়েকজন যুবক।
এক পর্যায়ে সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে সিল মারতে থাকা যুবকদের সরিয়ে দেন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার এবং পুলিশ ও আনসার সদস্যরা।
তবে কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের কাছে ভোট সুষ্ঠু হচ্ছে বলে দাবি করেন।
এর আগে সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত প্রায় একই চিত্র দেখা যায় মীরসরাই পৌরসভার মিরসরাই পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, উত্তর গোভানিয়া গিয়াস উদ্দিন ফোরকানিয়া মাদ্রাসা, মধ্য তালবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কবির মেমোরিয়াল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও নাজিরগ্রাম শফি উদ্দিন পৌর প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে।
বেলা ১১টার দিকে বারৈয়ারহাট পৌরসভার হিঙ্গুলি বোর্ড অফিস ও কেরানি বাড়ির অস্থায়ী কেন্দ্রের বাইরে ভোটারদের দীর্ঘ লাইন দেখা গেলেও ভেতরে প্রবেশের সুযোগ মিলছিল অল্প সংখ্যক ভোটারের।
হিঙ্গুলি বোর্ড অফিস কেন্দ্রে লাইনে দাঁড়ানো রফিক মিয়া ক্ষোভের সুরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ভাই সেই সকাল থেকে লাইনে আছি। আধা ঘণ্টা হয়ে গেল কিন্তু লাইন এক পাও এগোয়নি।”
সকাল সোয়া ১০টার দিকে কথা হয় মিরসরাই পৌরসভায় বিএনপি মেয়র প্রার্থী রফিকুল ইসলাম পারভেজের সঙ্গে।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “সকাল থেকে ছাত্রলীগের ২০০-২৫০ নেতাকর্মী বাসার সামনে অবস্থান নিয়ে আমাকে অবরুদ্ধ করে রাখে।
“বের হতে চাইলে তারা আমার গাড়ি ভাংচুর করে। শুধু তাই নয়, পৌরসভায় নয়টি ওয়ার্ডের ভোটকেন্দ্র থেকে আমার পোলিং এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে।”
পরে এক সংবাদ সম্মেলনে মিরসরাই ও বারৈয়ারহাট পৌরসভায় বিএনপির মেয়র প্রার্থীরা নির্বাচন স্থগিতের দাবি জানান কমিশনের কাছে।
বিএনপিপ্রার্থী রফিকুলের অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মিরসরাই উপজেলার রিটার্নিং অফিসার জিয়া আহমদ সুমন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, প্রিজাইডিং অফিসারের কাছ থেকে অভিযোগ না পেলে কেন্দ্র স্থগিত করা যায় না।
বেলা ৩টার দিকে তিনি জানান, তার নির্বাচনী এলাকায় সোয়া ২টা পর্যন্ত ৫৫ থেকে ৬০ শতাংশ ভোট পড়েছে।
সীতাকুণ্ড পৌরসভায় বিএনপির মেয়র প্রার্থী সয়ৈদ আবুল মনসুরের দাবি, সকাল থেকে কেন্দ্র দখলের অভিযোগ জানিয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেও সহযোগিতা মেলেনি।
সকালে সাড়ে ১০টার দিকে পন্থিছিলা কেন্দ্রে ভোট দিতে গেলে তার ওপর হামলা হয় বলেও দুপুরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান তিনি।
সীতাকুণ্ড পৌরসভায় জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী তাওহিদুল হক বেলা ৩টার দিকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, সকাল ৮টা থেকেই ভোট সুষ্ঠু হচ্ছিল। সাড়ে ১০টার দিকে হঠাৎ সশস্ত্র মুখোশধারীরা কেন্দ্রগুলো দখল নিয়ে অন্য প্রার্থীদের পোলিং এজেন্টদের বের করে দেয়।
তবে বেলা সোয়া ৩টার দিকে সীতাকুণ্ড উপজেলার রিটার্নিং কর্মকর্তা নাজমুল ইসলাম ভূঁইয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ভোট সুষ্ঠু হচ্ছে; চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত”