সোমবার রাতে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম ফরিদ আলমের আদালতে জবানবন্দি দেন আবাসন ব্যবসায়ী মোস্তফা কামাল।
এর আগে বৃহস্পতিবার একই হাকিমের কাছে জবানবন্দি দেন এ মামলায় গ্রেপ্তার আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান খান জাহান আলী লিমিটেডের কর্মচারী গোলাম মোস্তফা সোহেল ও আইটি বিশেষজ্ঞ মেহেদী আলম।
এ নিয়ে এ মামলায় গ্রেপ্তার ছয় জনের মধ্যে তিন জন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিলেন।
চট্টগ্রাম মহানগর আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) ফখরুদ্দিন চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে মোস্তফা কামালকে আদালতে হাজির করা হয়।
“এরপর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে জবানবন্দি গ্রহণ শুরু হয়। শেষ হয় রাত ৮টার দিকে।”
সূর্যমুখী তেলের ঘোষণা দিয়ে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ বলিভিয়া থেকে কনটেইনারটি চট্টগ্রামের খান জাহান আলী লিমিটেডের নামে আমদানি করা হয়।
গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ৭ জুন চট্টগ্রাম বন্দরে থাকা কনটেইনারটি আটক করে সিলগালা করে দেয়ে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর।
পরদিন ৮ জুন গোয়েন্দা পুলিশ, শুল্ক গোয়েন্দা, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম বন্দর, কাস্টমস ও নৌবাহিনীর কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে কনটেইনারে থাকা ভোজ্যতেলের মাঠ পর্যায়ের পরীক্ষা করা হয়।
প্রাথমিক পরীক্ষায় ১০৭টি ড্রামের তরল পরীক্ষা করে কোকেনের নমুনা ধরা পড়েনি।
সংগৃহীত নমুনা ঢাকার সায়েন্স ল্যাবরেটরি (বিসিএসআইআর) ও বাংলাদেশ ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করায় শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর।
পরে ২৭ জুন এর মধ্যে ৯৬ নম্বর ড্রামে কোকেন থাকার কথা নিশ্চিত করে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর। ১০৭টি ড্রামের একটিতে কোকেনের নমুনা মিলে। এর মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ কোকেন বলে তাদের ধারণা।
৮ জুলাই আদালতের আদেশে পুনরায় গোয়েন্দা পুলিশ ১০৭টি ড্রামের নমুনা সংগ্রহ করে গোয়েন্দা পুলিশ।
ওই দিনই নমুনা আদালতে হাজির করা হলে মহানগর হাকিম ফরিদ আলম পুনরায় এসব নমুনা ঢাকা সেনানিবাসের আর্মড ফোর্সেস ফুড অ্যান্ড ড্রাগ ল্যাবরেটরি, মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরীক্ষাগার ঢাকা এবং সিআইডি’র ল্যাবে নমুনা পরীক্ষার আদেশ দেন।
কোকেন জব্দের এই মামলায় এ পর্যন্ত মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে শুল্ক গোয়েন্দা ও পুলিশ।
তারা হলেন- আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান খান জাহান আলী লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান প্রাইম হ্যাচারির ব্যবস্থাপক গোলাম মোস্তফা সোহেল, আইটি বিশেষজ্ঞ মেহেদী আলম, গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান মণ্ডল গ্রুপের বাণিজ্যিক নির্বাহী আতিকুর রহমান খান, আবাসন ব্যবসায়ী মোস্তফা কামাল এবং শিপিং এজেন্ট প্রতিষ্ঠান কসকো বাংলাদেশ শিপিং লাইনস লিমিটেডের ব্যবস্থাপক (করপোরেট, বিক্রয় ও বিপণন) এ কে আজাদকে ও সাইফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সর্বশেষ গত ২ অগাস্ট আদালতে এই মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিত করে তদন্ত কর্মকর্তা।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর এবং সিআইডির পরীক্ষাগারের পরীক্ষায় একটি ড্রামে কোকেনের অস্তিত্ব মিলেছে।