আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) পুনর্গঠনের পাশাপাশি টেস্ট খেলার সুযোগ পাওয়ার প্রক্রিয়া পাল্টানো নিয়ে তিন ‘মোড়লের’ পরিকল্পনার বিরুদ্ধে লড়বে বাংলাদেশ।
Published : 25 Jan 2014, 02:14 PM
৩ ‘মোড়লের’ প্রস্তাব নিয়ে অবস্থান জানালো বিসিবি
বড় ৩ বোর্ডের প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ফিকা
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) গণমাধ্যম ও যোগাযোগ কমিটির সভাপতি জালাল ইউনুস শনিবার সাংবাদিকদের জানান, আইসিসির আগামী সভায় ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের কর্মকর্তাদের তৈরি করা খসড়া প্রস্তাবটি উপস্থাপন করা হলে বাংলাদেশ টেস্ট খেলার অধিকার বজায় রাখতে এর বিরোধিতা করবে।
শনিবার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিসিবির গণমাধ্যম ও যোগাযোগ কমিটির সভাপতি জালাল ইউনুস সাংবাদিকদের বলেন, “আইসিসি পুনর্গঠন নিয়ে প্রস্তাবের পক্ষে বিসিবি ভোট দেবে না।”
“বিসিবির ২৩ জানুয়ারির সভায় খসড়া প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়ার কোনো রেজুলেশন পাশ হয়নি। গণমাধ্যমে প্রস্তাবের পক্ষে অবস্থান নেয়ার যে সংবাদ এসেছে, তা সঠিক নয়।”
ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে কমপক্ষে আগামী চার বছর টেস্ট খেলার সুযোগ থাকবে না বাংলাদেশের। এই সময়ে ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপে চারদিনের ম্যাচ খেলতে হবে টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ের নবম ও দশম দেশ দুটির। আইসিসি সভায় বিসিবি এই ‘দুই ধাপের’ টেস্ট পরিকল্পনার বিরোধিতা করবে বলে জানান জালাল।
বৃহস্পতিবার বিসিবির সভায় অন্য একটু ইস্যু নিয়ে সেদিন ভোটাভুটি হয়েছিল বলে জানালেও এই বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি জালাল।
আগামী ২৭ থেকে ২৯ জানুয়ারি দুবাইয়ে অনুষ্ঠেয় আইসিসির সভায় ভারত, ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার নিয়ন্ত্রণে থাকা ফিন্যান্স অ্যান্ড কমার্শিয়াল অ্যাফেয়ার্স কমিটির একটি ‘ওয়ার্কিং গ্রুপের’ তৈরি খসড়া প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা। এই প্রস্তাবে আইসিসির রাজস্ব বন্টন মডেল, প্রশাসনিক কাঠামো ও ফিউচার ট্যুর প্রোগ্রামে (এফটিপি) বড় ধরনের পরিবর্তনের সুপারিশ করা হয়েছে। পাশাপাশি র্যাঙ্কিংয়ের ৯ ও ১০ নম্বর দেশকে কন্টিনেন্টাল কাপে খেলানোর প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিসিবির সভায় এ নিয়ে আলোচনার পর ‘কৌশলী’ অবস্থান নেয়ার কথা জানান সভাপতি নাজমুল হাসান। তিনি বলেন, এ মাসের শেষ দিকে হতে যাওয়া আইসিসির সভায় পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেবেন তারা।
“এ সম্পর্কে আমাদের মনোভাব এখনই প্রকাশ করতে চাই না। প্রস্তাবটি আমাদের কাছে বেশ জটিল মনে হয়েছে। অনেক প্রশ্নের উত্তর এখানে নেই, যেগুলো আমাদের জানা দরকার।”
অন্যান্য বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা করার জন্য ২৫ জানুয়ারি দুবাই যাওয়ার কথা জানিয়ে নাজমুল হাসান বলেন, “অন্যান্য দেশগুলোর সঙ্গে আমাদের কথা বলে দেখতে হবে, তাদের মনোভাব কী। যারা এটা তৈরি করেছেন তাদের ব্যাখ্যাও শুনতে হবে।”
তবে গণমাধ্যমে বিসিবির সভার বিষয়বস্তু নিয়ে বিভিন্ন সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর শুক্রবার রাতে এক বিবৃতিতে নিজেদের অবস্থান আরো পরিস্কার করে বিসিবি।
বিবৃতিতে বলা হয়, ভারত, ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার উদ্যোগের কিছু অংশ নিয়ে বোর্ড কঠোর অবস্থান নিয়েছে।
বিবিসি মনে করে, “প্রস্তাবগুলো পাস হলে পূর্ণ সদস্য হিসেবে বাংলাদেশের স্বার্থ ক্ষুন্ন হতে পারে।”
বিবৃতিতে বলা হয়, সভায় পরিচালকদের বিষয়টি নিয়ে ‘সতর্ক’ আলোচনার পর বিসিবি খসড়া প্রস্তাবে ইতিবাচক কিছু ব্যাপারও পেয়েছে, যা বাংলাদেশের ক্রিকেটের ভবিষ্যতকে সম্মৃদ্ধ করতে পারে।
বিসিবির সভার আলোচনা নিয়ে কিছু গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন সম্পর্কে বলা হয়, “কিছু গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, বোর্ডের গত ২৩ জানুয়ারির সভায় খসড়া প্রস্তাবের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে বিসিবি। … বিসিবির অবস্থান নিয়ে সংবাদ সম্পূর্ণ অনুমাননির্ভর, প্রকৃত ঘটনার সঙ্গে তা সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।”