স্টিভেন স্মিথের ক্যারিয়ার সেরা ব্যাটিংয়ে চ্যাপেল-হ্যাডলি সিরিজের প্রথম ম্যাচে সহজ জয় পেয়েছে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। মার্টিন গাপটিলের দারুণ এক শতকেও হার এড়াতে পারেনি নিউ জিল্যান্ড।
Published : 04 Dec 2016, 05:25 PM
৬৮ রানের জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে এগিয়ে গেল অস্ট্রেলিয়া।
ফিল্ডিংয়ে নিউ জিল্যান্ডের বাজে দিনে স্মিথের অধিনায়কোচিত ইনিংসের ওপর ভর করে ৮ উইকেটে ৩২৪ রান করে অস্ট্রেলিয়া। গাপটিলের একাদশ শতকের পরও ৪৪ ওভার ২ বলে ২৫৬ রানে গুটিয়ে যায় গত বিশ্বকাপের রানার্সআপ নিউ জিল্যান্ডের ইনিংস।
লক্ষ্য তাড়ায় শুরুতেই নিউ জিল্যান্ডকে চাপে ফেলেন জশ হেইজেলউড। দুই অঙ্কেই যেতে দেননি টম ল্যাথাম ও কেন উইলিয়ামসনকে। তৃতীয় উইকেটে জেমস নিশামের সঙ্গে গাপটিলের ৯২ রানের জুটিতে প্রতিরোধ গড়ে অতিথিরা।
পাঁচটি চারে ৩৪ রান করা নিশামকে ফিরিয়ে মিচেল স্টার্ক ভাঙেন বিপজ্জনক হয়ে উঠা জুটি। পাল্টা আক্রমণে আশা বাঁচিয়ে রাখেন গাপটিল, দলকে পৌঁছে দেন ৪ উইকেটে ১৮৫ রানে। ওভার প্রতি তখন ৮ রান করে প্রয়োজন হলেও এই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান থাকায় ম্যাচে ভালোভাবেই ছিল অতিথিরা।
লেগ স্পিনার অ্যাডাম জ্যাম্পা গাপটিলকে ফিরিয়ে ম্যাচ অস্ট্রেলিয়ার দিকে ঘুরিয়ে দেন। ১০২ বলে ১০টি চার ও ৬টি ছক্কায় ১১৪ রান করেন গাপটিল।
মিচেল স্যান্টনার ও কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমের দ্রুত বিদায়ে বিপদ আরও বাড়ে। শেষের দিকে কলিন মানরো ও ম্যাট হেনরি পরাজয়ের ব্যবধানই কমিয়েছেন কেবল। অষ্টম উইকেটে তাদের ৫০ রান এই ম্যাচে অতিথিদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের জুটি।
৪৯ রানে ৩ উইকেট নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সেরা বোলার হেইজেলউড। দুটি করে উইকেট নেন মিচেল মার্শ, প্যাট কামিন্স ও জ্যাম্পা।
এর আগে অ্যারন ফিঞ্চের গোল্ডেন ডাকে সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে শুরুটা ভালো হয়নি টস জিতে ব্যাট করতে নামা অস্ট্রেলিয়ার। ওয়ানডে অভিষেকে নিজের প্রথম ওভারেই ডেভিড ওয়ার্নারকে বোল্ড করেন গতির ঝড় তোলা পেসার লকি ফার্গুসন। দ্রুত বিদায় নেন জর্জ বেইলি ও মার্শ।
২১তম ওভারে ৯২ রানে চার উইকেট হারিয়ে ভীষণ বিপদে পড়ে স্বাগতিকরা। তবে পরিস্থিতি হতে পারতো আরও খারাপ। অষ্টম ওভারে দুবার বেঁচে যান স্মিথ। ট্রেন্ট বোল্টের বলে তার ক্যাচ ছাড়েন উইকেটরক্ষক বিজে ওয়াটলিং। সেই ওভারে তার বিরুদ্ধে এলবিডব্লিউর আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার। নিউ জিল্যান্ড রিভিউ নিলে ১৪ রানে ফিরে যেতে পারতেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক।
১২৭ রানের চমৎকার জুটিতে স্বাগতিকদের বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দেন স্মিথ-ট্র্যাভিস হেড। এই জুটি ভাঙতে পারতো অনেক আগেই। ব্যক্তিগত ৭ রানে মিডঅফে হেনরির হাতে জীবন পান হেড। সে সময় ক্যাচ ধরতে পারলে অস্ট্রেলিয়ার স্কোর হতো ১১৫/৫।
অর্ধশতকে পৌছানোর পর বোল্টকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান হেড (৫২)। অধিনায়ককে সঙ্গ দিয়ে যাওয়া তার ৬০ বলের ইনিংসটি গড়া ৫টি চারে।
১২০ বলে শতকে পৌঁছানো স্মিথ শেষের দিকে রীতিমত খুনে মেজাজে ব্যাটিং করেন। মাত্র ৬.১ ওভারে ম্যাথু ওয়েডের সঙ্গে অধিনায়ক গড়েন ৮৩ রানের বিধ্বংসী জুটি। ১৫২ রানে স্মিথকে জীবন দেওয়া মানরোই শেষ পর্যন্ত তালুবন্দি করেন তাকে। ততক্ষণে ম্যাচ সেরা স্মিথ করেছেন ১৬৪ রান। এই মাঠে এটি সর্বোচ্চ রানের ইনিংস, নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে স্মিথের প্রথম শতক তার ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চও।
২২ বলে তিনটি ছক্কা ও একটি চারে ৩৮ রান করেন উইকেটরক্ষক ওয়েড।
নিউ জিল্যান্ডের বোল্ট, নিশাম ও হেনরি দুটি করে উইকেট নেন।
আগামী মঙ্গলবার হবে দ্বিতীয় ওয়ানডে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
অস্ট্রেলিয়া: ৫০ ওভারে ৩২৪/৮ (ওয়ার্নার ২৪, ফিঞ্চ ০, স্মিথ ১৬৪, বেইলি ১৭, মার্শ ১, হেড ৫২, ওয়েড ৩৮, কামিন্স ০*, স্টার্ক ১১, জ্যাম্পা ২*; হেনরি ২/৭৪, বোল্ট ২/৫১, ফার্গুসন ১/৭৩, গ্র্যান্ডহোম ০/২৭, স্যান্টনার ০/৪০, নিশাম ২/৫৮)
নিউ জিল্যান্ড: ৪৪.২ ওভারে ২৫৬ (গাপটিল ১১৪, ল্যাথাম ২, উইলিয়ামসন ৯, নিশাম ৩৪, ওয়াটলিং ৬, মানরো ৪৯, স্যান্টনার ০, গ্র্যান্ডহোম ৬, হেনরি ২৭, ফার্গুসন ০, বোল্ট ১*; স্টার্ক ১/৩৭, হেইজেলউড ৩/৪৯, মার্শ ২/৩৮, কামিন্স ২/৬২, জ্যাম্পা ২/৬৬)
ফল: অস্ট্রেলিয়া ৬৮ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: স্টিভেন স্মিথ।