টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেকেই হ্যাটট্রিকের খুব কাছাকাছি গিয়েছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান। শেষ পর্যন্ত হ্যাটট্রিক করতে পারেননি। তবে চার বলের মধ্যে নিয়েছেন ৩ উইকেট। গড়েছেন অভিষেকে বাংলাদেশের পেসারের দ্বিতীয় সেরা বোলিং কীর্তিও।
Published : 21 Jul 2015, 04:05 PM
গত মাসেই ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডে অভিষেকে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন মুস্তাফিজ। পরের ম্যাচেই নিয়েছিলেন ৬ উইকেট। ওয়ানডে অভিষেকের সঙ্গে অনেকটাই মিলেছে মুস্তাফিজের টেস্ট অভিষেকের পারফরম্যান্স।
অভিষেকে এক ওভারে তিন উইকেট নেই বাংলাদেশের আর কোনো পেসারের।
ওয়ানডেতেও প্রথম ম্যাচে প্রথম স্পেলে খুব ভালো বোলিং করতে পারেননি। ৪ ওভারে উইকেটশূন্য ছিলেন ২৭ রান দিয়ে। মঙ্গলবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট অভিষেকেও প্রথম স্পেলে অনেকটা ছিলেন বিবর্ণ। ৫ ওভারে রান দিয়েছিলেন ২০, মেডেন নেই।
পরে ফিরেছেন দারুণভাবে। ওয়ানডে অভিষেকেও হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন। টানা দুই বলে ফিরিয়েছিলেন সুরেশ রায়না ও রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে। হ্যাটট্রিক না পেলেও ২ বল পর আউট করেছিলেন রবিন্দ্র জাদেজাকে। টেস্ট অভিষেকে আরেকটু কাছে গেলেন হ্যাটট্রিকের। বাইরে বেরিয়ে যাওয়া সহজাত বলে হাশিম আমলাকে ফিরিয়ে পেয়েছেন প্রথম টেস্ট উইকেটের স্বাদ। পরের বলেই এলবিডব্লিউ জেপি দুমিনি। পরের ডেলিভারিটি ছিল অফ স্টাম্পে ফুল লেংথ, কুইন্টন ডি কক ঠেকিয়েছিলেন। পরের বলে আর পারেননি। ভেতরে ঢোকা বলে ডিগবাজি খেয়েছে ডি ককের অফ স্টাম্প।
ওই বোল্ড আর এক বল আগে হলেই মুস্তাফিজের নাম লেখা হয়ে যেত ইতিহাসে। টেস্ট অভিষেকে হ্যাটট্রিক কীর্তি আছে মাত্র তিনজন বোলারের। প্রথম করেছিলেন ইংলিশ পেসার মরিস অ্যালম, ১৯৩০ সালে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ক্রাইস্টচার্চে। ১৯৭৬ সালে লাহোরে পাকিস্তানের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেছিলেন কিউই অফ স্পিনার পিটার পেথেরিক। পাকিস্তানের বিপক্ষেই ১৯৯৪ সালে রাওয়ালপিন্ডিতে হ্যাটট্রিক করেছিলেন ড্যামিয়েন ফ্লেমিং। ওই তিনজনকে মনে করিয়ে দিলেন মুস্তাফিজ, কিন্তু অল্পের জন্য নাম লেখাতে পারলেন না তাদের পাশে।
পরে বাংলাদেশের বাধার দেয়াল হয়ে থাকা টেম্বা বাভুমাকে ফিরিয়ে মুড়ে দিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকা ইনিংস। সব মিলিয়ে ১৭.৪ ওভারে ৩৭ রান দিয়ে ৪ উইকেট। অভিষেকে বাংলাদেশের পেসারের দ্বিতীয় সেরা বোলিং। জিয়াউর রহমানের ৬৩ রানে ৪ উইকেট এতদিন ছিল দ্বিতীয় সেরা।
বাংলাদেশের পেসারদের মধ্যে সেরা বোলিং মুস্তাফিজের পূর্বসূরি বাঁহাতি মঞ্জুরুল ইসলামের। ২০০১ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বুলাওয়েতে তিনি নিয়েছিলেন ৮১ রানে ৬ উইকেট।
হ্যাটট্রিক হয়নি মুস্তাফিজের। এবার হয়নি ৫ উইকেটও। তবে টেস্ট অভিষেকের দিনটিতেই যা করেছেন, সেটি আরেকবার জানান দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেটে তার আগমন আলোর মশাল হাতে। যে মশালের আলোয় বাংলাদেশের ক্রিকেট আলোকিত হবে হয়ত সামনের অনেক বছর!